মিতু হত্যা মামলা: বেনাপোল থেকে গ্রেপ্তার আসামি ভোলার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খাতুন মিতু হত্যা মামলার আসামি এহতেশামুল হক ভোলা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শনিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দীনের আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি।
এর আগে এর আগে শুক্রবার (২২ অক্টোবর) রাতে যশোরের বেনাপোল থেকে ভোলাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর শনিবার তাকে চট্টগ্রাম নিয়ে আসা হয়।
ভোলার গ্রেপ্তার এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে নিশ্চিত করেছেন মামলাটির তদারকি সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা।
তিনি বলেন, "গ্রেপ্তারের পর শনিবার ভোলাকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়েছে। ভোলা বেনাপোল দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলো।"
২০১৬ সালে ৫ জুন ভোরে নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় খুন হন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু। এ মামলায় কয়েকদিন আগে ভোলার বিরুদ্ধে আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, গত ১৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার আসামি এহতেশামুল হক ভোলার চার সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে হাইকোর্ট জামিনের মেয়াদ শেষে আসামিকে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
"গত ১১ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে আসামি ভোলা আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। এ সময় আদালত মামলার মূল নথি তলব করে পরবর্তী ধার্য তারিখে শুনানির জন্য রেখে দেন। পরবর্তী শুনানিতে ভোলা অনুপস্থিত থাকলে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
২০১৬ সালের ৫ জুন মিতু খুনের ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় নিহতের স্বামী বাবুল আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। তবে শুরু থেকেই নিহত মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ দাবি করে আসছেন বাবুল আক্তার এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। পরকীয়ার জেরে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি দাবি করেন।
২০২০ সালে জানুয়ারিতে মিতু হত্যা মামলাটির তদন্তভার পিবিআইয়ের হাতে আসে। ২০২১ সালে ১১ মে মঙ্গলবার মামলার বাদী বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নিয়ে নিজেদের হেফাজতে নেয় পিবিআই। পরদিন ১২ মে বাবুলের বাদী হয়ে দায়ের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন পিবিআইর তদন্ত কর্মকর্তা। সেখানে বলা হয়- বাবুল নিজেই তাঁর স্ত্রী হত্যায় জড়িত। এদিন বাবুলসহ আরও কয়েকজনকে আসামি করে নতুন মামলার আবেদন করা হয়। একই দিন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন পাঁচলাইশ থানায় নিজের জামাতাকে প্রধান আসামি করে আটজনের নামে নতুন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাগারে আছেন বাবুল আক্তার।