মুদি দোকানি থেকে মানবপাচারকারী
এইচএসসি পাস টুটুল ছিলেন মেহেরপুরের গাংনী থানার কামান্দি গ্রামের এক ছোট্ট মুদি দোকানের মালিক। টুটুলের দু'চোখে ছিল ধনী হওয়ার স্বপ্ন। এ স্বপ্ন নিয়ে তিনি প্রায় ঢাকায় আসতেন।
অচিরেই তিনি স্বপ্ন পূরণের রাস্তাও খুঁজে পেলেন—কিন্তু অবৈধ পথে। লোভের বশে ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়লেন একটি মানবপাচারকারী চক্রের সঙ্গে। চক্রের দালাল হিসেবে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশে লোক পাঠানো শুরু করেন তিনি।
যত সময় গড়াল, ততই আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠলেন টুটুল। তারপর নিজেই ব্যবসা শুরু করলেন। রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় টুটুল ওভারসিজ, লিমন ওভারসিজ এবং লয়াল ওভারসিজ নামে তিনটি ওভারসিজ রিক্রুটিং এজেন্সি অফিস খুলে বসলেন।
তিনটি অফিসের মাধ্যমে টুটুল দেশের বিভিন্ন এলাকার বহু বেকার ও শিক্ষিত নারী-পুরুষকে মধ্যপ্রাচ্যে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারিত করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এভাবেই একসময়ের মুদি দোকানি টুটুল পরিণত হন ধনাঢ্য ব্যবসায়ীতে।
সম্প্রতি কিছু নারী ভুক্তভোগীর অভিভাবক মধ্যপ্রাচ্যে মানব পাচারের বিষয়ে র্যাব-৪-এর কাছে অভিযোগ জানান। অভিযোগ পাওয়ার পর ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাব। গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ায়।
এরপর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৪-এর একটি দল ১৩ অক্টোবর রাত ১২টা ১০ মিনিটে টুটুলের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে চারজন ভিকটিমকে উদ্ধার করে। ভিকটিমদের দুজন পুরুষ ও দুজন মহিলা।
এছাড়াও র্যাব ১০টি পাসপোর্ট, ৭টি ফাইল, ৪টি সিল, ১৭টি মোবাইল ফোন, ৫টি রেজিস্টার, ৩টি মোবাইল সিম, ৪টি ব্যাংক চেকবই, ২টি কম্পিউটার, ৩টি লিফলেট এবং নগদ ১০ হাজার ৭০ টাকা উদ্ধার করেছে।
অভিযান চালিয়ে র্যাব টিম আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন: চক্রের নেতা সাইফুল ইসলাম ওরফে টুটুল, তার সহযোগী তৈয়ব আলী, শাহ মো. জালাল উদ্দিন লিমন, মারুফ হাসান, জাহাঙ্গীর আলম, লালটু ইসলাম, আলামিন হোসাইন এবং আব্দুল্লাহ আল মামুন।