মৃত্যুর আগে নড়ে উঠেছিল শিশুটি
বাঁচানো গেল না চুয়াডাঙ্গার সেই নবজাতককে। মৃত ঘোষণার পর হঠাৎ নড়ে ওঠা জান্নাতুল ৩৩ ঘণ্টা যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানে। মঙ্গলবার দুপুরে মায়ের কোলেই চিরদিনের মতো ঘুমিয়ে পড়ে জান্নাতুল। বিকেলে গ্রামের কবরস্থানে বেদনাবিধুর পরিবেশে তাকে দাফন করা হয়।
মঙ্গলবার সকালে নবজাতকটির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হস্তান্তর করেন। রাজশাহী নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাজরাহাটি গ্রামের মুদিদোকানি আবদুল হালিম ও গৃহিণী জিনিয়া খাতুন দম্পতির বিয়ের ৪ বছর পর সোমবার ভোরে জান্নাতুলের জন্ম হয়। জেলা শহরের উপশম নার্সিং হোমের ডা. জিনাতুল আরার তত্ত্বাবধানে জিনিয়া তার সন্তান প্রসব করেন। মেয়ে সন্তান জন্মের পর জিনিয়ার পরিবারকে চিকিৎসক জানান নবজাতকটি মারা গেছে।
মৃত সন্তান ভেবে ক্লিনিকের আয়ারা নবজাতককে যখন কাপড়ে মোড়াতে যায়। এ সময় মা জিনিয়া তাকে শেষবারের মতো একবার কোলে নিতে চাইলে নবজাতক হঠাৎ নড়ে ওঠে। এরপর দাদি সাহারন বেগম নবজাতকের নাম রাখেন জান্নাতুল।
ডা. জিন্নাতুল আরা এ সময় নবজাতককে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। সেখানেই চিকিৎসাধীন নিয়ে অনেকটা সুস্থ হয়ে ওঠে জান্নাতুল।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুর রহমান মালিক খোকন বলেন, ‘‘নবজাতকটি অপুষ্ট হয়ে জন্মেছিল। মঙ্গলবার সকালে তার অবস্থা একটু খারাপ হয়ে যায়। এ কারণে দুপুরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। নির্দিষ্ট সময়ের আগে সন্তান ভূমিষ্ঠ ও ওজন কম হওয়ায় তার অবস্থা খারাপ ছিল। আমি শুনেছি বাচ্চাটি মারা গেছে।’’
নবজাতক জান্নাতুলের বাবা আবদুল হালিম বলেন, আমরা জান্নাতুলকে রাজশাহী নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এরই মধ্যে বেলা পৌনে একটার দিকে মায়ের কোলেই চিরদিনের মতো ঘুমিয়ে যায় সে। জান্নাতুলকে শেষবারের মতো দেখতে গ্রামের কৌতূহলী লোকজন এ সময় বাড়িতে ভিড় জমায়। বিকেলে তাকে বাড়ির পাশের কবরস্থানে দাফন করা হয়।