যশোরে ‘রেড জোন’ চিহ্নিত যেসব এলাকা
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি বিবেচনায় যশোর জেলাকে তিন জোনে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে রেড জোন পুরো লকডাউনের আওতায় থাকবে । আর ইয়োলো জোনে হবে আংশিক লকডাউন। গ্রিনজোনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক থাকবে।
আজ সোমবার বিকেলে এই মর্মে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
এতে যৌথভাবে স্বাক্ষর করেন জেলা প্রশাসক ও 'করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটি'র সভাপতি মোহাম্মদ শফিউল আরিফ এবং সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন।
রেড জোনভুক্ত এলাকার মধ্যে পড়েছে যশোর পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ড (ঘোপ), নতুন উপশহর এবং শহরতলীর আরবপুর ইউনিয়ন।
এড়াছা অভয়নগরের নওয়াপাড়া শহরের দুই, চার, পাঁচ, ছয় ও নয় নম্বর ওয়ার্ড, চৌগাছা শহরের ছয় নম্বর ওয়ার্ড, বেনাপোল পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ড, ঝিকরগাছা পৌরসভার দুই ও তিন নম্বর ওয়ার্ড এবং কেশবপুর পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ড রেড জোনভুক্ত হয়েছে।
গ্রামাঞ্চলের মধ্যে রেড জোনে পড়েছে অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া, পায়রা ও বাগুটিয়া ইউনিয়ন, শার্শা সদর ইউনিয়ন।
রেড জোনভুক্ত এলাকাগুলোকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এসব এলাকায় গত দুই সপ্তাহে এক থেকে ২০ জন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন।
এর আগে আজ সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত 'করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটি'র সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। পরে সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন তা নিশ্চিত করেন।
সেখানে সভাপতিত্ব করেন যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ। সভায় যশোরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন, প্রেসক্লাব সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে জারি করা গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, 'বর্তমানে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির চতুর্থ পর্যায়ে রয়েছে। সেকারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ঝুঁকি বিবেচনায় জোনভিত্তিক সংযমন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন কৌশল ও গাইডলাইন প্রণয়ন করেছে। গাইডলাইন অনুযায়ী সংক্রমণ প্রতিরোধে যশোর জেলার ইউনিয়ন ও পৌরসভা (ওয়ার্ডভিত্তিক) রেড, ইয়োলো ও গ্রিন জোনে বিভাজন করা হলো। রেড জোনকে সম্পূর্ণ ও ইয়োলো জোনকে আংশিক লকডাউনসহ জোনভিত্তিক পালনীয় সাধারণ নিয়মাবলী সন্নিবেশিত করা হলো।'
১৬ জুন মঙ্গলবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে বলে গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে কোন জোনে কী করা যাবে, কী করা যাবে না তারও বিবরণ তুলে ধরা হয়।
রেড জোন বা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার জন্য ১১টি নির্দেশনা রয়েছে। এগুলো হলো-স্বাস্থ্যবিধি মেনে বর্ধিত শিফটে কৃষিকাজ করা যাবে; স্বাস্থ্যবিধি মেনে গ্রামাঞ্চলে কলকারখানা ও কৃষিপণ্য উৎপাদন কারখানায় কাজ করা যাবে। তবে শহরাঞ্চলে সব বন্ধ থাকবে; বাসা থেকেই অফিসের কাজ করা যাবে; কোনো ধরনের জনসমাবেশ করা যাবে না। কেবল অসুস্থ ব্যক্তি হাসপাতালে যেতে পারবেন; স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু জরুরি প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হওয়া যাবে।
রিকশা, ভ্যান, থ্রিহুইলার, ট্যাক্সি বা নিজস্ব গাড়ি চলাচল করবে না; সড়ক, নদী, রেলপথে জোনের ভেতরে কোনো যান চলাচল করবে না; জোনের ভেতরে ও বাইরে মালবাহী যান কেবল রাতে চলাচল করতে পারবে; এই জোনের অন্তর্গত কেবল মুদি দোকান ও ওষুধের দোকান খোলা থাকবে। রেষ্টুরেন্ট ও খাবারের দোকানে কেবল হোম ডেলিভারি সার্ভিস চালু থাকবে।
বাজারে শুধু প্রয়োজনে যাওয়া যাবে। তবে শপিং মল, সিনেমা হল, জিম/স্পোর্টস কমপ্লেক্স, বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে; আর্থিক লেনদেন বিষয়ক কার্যক্রম যেমন টাকা জমাদান/উত্তোলন স্বাস্থ্যবিধি মেনে করতে হবে। এলাকার রোগীদের পর্যাপ্ত নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। শনাক্ত রোগীরা আইসোলেশনে (বাড়িতে/আইসোলেশন সেন্টারে) থাকবেন; মসজিদ/উপাসনালয়ে শুধু প্রতিষ্ঠানে কর্তব্যরত ব্যক্তিবর্গ (কর্মচারী) অংশগ্রহণ করবেন।