শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দিতে আবারও প্রণোদনা চান তৈরি পোশাক খাতের মালিকরা
আর্থিক সংকটের কারণে আসন্ন ইদে পোশাক ও বস্ত্র শিল্প খাতের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও বোনাস দিতে আবারও প্রণোদনা চান তৈরি পোশাক সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠন বিজিএমইএ, বিটিএমএ এবং বিকেএমইএ।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) এ লক্ষ্যে অর্থমন্ত্রীকে একটি যৌথ চিঠি দিয়েছে সংগঠনগুলো। এতে স্বাক্ষর করেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন এবং বিকেএমইএ সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান এমপি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, শ্রমিক-কর্মচারীদের গতবছরের এপ্রিল-মে-জুন-জুলাই মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য সহজ শর্তে ঋণ হিসেবে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার ফলে এ শিল্পের অস্তিত্ব টিকে রয়েছে। সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষমতা অর্জন করতে পেরেছে।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস জনিত উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে পোশাক শিল্পে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। এর প্রভাবে অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক অনেক ক্রেতা নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করায় তাদের কাছ থেকে রপ্তানি পণ্যের বিপরীতে পারিশ্রমিক পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করা হয় চিঠিটিতে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ক্রেতার ক্রয়াদেশ বাতিল বা স্থগিত ও নির্দিষ্ট সময়ে পেমেন্ট না পাওয়ার ফলে পোশাক খাত আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। বিশ্ব বাজারে রপ্তানি সক্ষমতা বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশের পোশাক শিল্প অন্যান্য দেশের তুলনায় কম মূল্যে পোশাক রপ্তানি করে। যার মধ্যে মুনাফার অংশ খুব কমই থাকে। টিকে থাকার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে লোকসান হলেও ক্রয়াদেশ নিতে বাধ্য হয় । ক্রেতার কাছ থেকে পেমেন্ট পাওয়ার পর ও নগদ সহয়তা বাবদ প্রণোদনার অর্থ পাওয়ার পর শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ব্যয় পরিশোধ করা হতো
রপ্তানি মূল্য প্রত্যাবাসন না হওয়ার কারণে নগদ সহায়তার আবেদন করাও সম্ভব হচ্ছে না । আবার অনেক ক্রেতা ডিসকাউন্ট হারে মূল্য পরিশোধ করছেন। যে কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো তারল্য সংকট নিরসন করতে পারছে না ।
পুণরায় মহামারির দ্বিতীয় ওয়েভের আঘাতে বিপর্যস্ত অনেক দেশ । অনেক দেশেই আগের মতো লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে । যার ফলে যেসব ক্রেতা পেমেন্ট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তারাও পেমেন্ট দিতে অপরাগতা প্রকাশ করছেন।
উদ্যোক্তাদের আর্থিক সংকটের কারণে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও বোনাস পরিশোধের জন্য অর্থের জোগান দেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে বলে জানান তারা।
এমন পরিস্থিতিতে রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পকে সহায়তা করার জন্য শ্রমিক-কর্মচারীদের এপ্রিল, মে ও জুন (২০২১) মাসের বেতন-ভাতা ও বোনাস দেওয়ার জন্য গত বছরের মতো সহজ শর্তে ঋণের দাবি জানিয়েছেন গার্মেন্টস মালিকরা।
প্রসঙ্গত, গত বছর শ্রমিকদের বেতন বোনাস দিতে সরকার ঘোষিত প্রণোদোনা প্যাকেজ থেকে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা ঋন পায় পোশাক খাত। যা প্রথমে ৬ মাসের মরিটরিয়াম সুবিধাসহ ২ বছরের মধ্যে পরিশোধ করার কথা ছিল। পরে মালিকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আরও ৬ মাসের মরিটরিয়াম সুবিধা বাড়ানো হয়।