সাধারণ বিমার কমিশন; না এজেন্টের না গ্রাহকের
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, স্বাধীনতা যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি। তিনি শুধু রাজনীতিবিদই ছিলেন না, তিনি বিমা শিল্পের উচ্চ পর্যায়ের একজন ব্যক্তিত্বও ছিলেন। তাই, জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমার গুরুত্ব অনুধাবন করে পুরাতন বীমা আইনকে ঢেলে সাজিয়ে নতুন বীমা আইন, ২০১০ প্রণয়ন করেন। পাশাপাশি প্রণয়ন করেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১০। এরপর বিমা খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ২০১১ সালে অধিদপ্তর বিলুপ্ত করে প্রতিষ্ঠা করেন 'বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রন কর্তৃপক্ষ'।
কিন্তু পরিতাপের বিষয়, কমিশন বানিজ্য এবং বিমা শিল্পে অসুস্থ প্রতিযোগিতা এখনও কাটেনি। বীমা অধিদপ্তর থেকে জারিকৃত ১০/০২/২০০২ ইং তারিকের প্রঃবীঃনিঃ১৫/১/৯৬-২৪২ নম্বর আদেশের মাধ্যমে সাধারণ বিমা ব্যবসায় কমিশন পরিশোধ ১লা মার্চ/২০০২ ইং তারিখ থেকে রহিত করা হলো মর্মে জানিয়ে নির্বাহী আদেশটি যথাযথভাবে পালনের জন্য সকল বেসরকারি সাধারণ বিমা কোম্পানীকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। অতপর, বীমা অধিদপ্তরের সার্কুলার নং-প্রঃবীঃনিঃ-১৫/১/৯৬-১৪০৬, তারিখের মাধ্যমে সাধারণ বিমা ব্যবসার উপর কমিশন প্রদান ব্যবস্থা পুনরায় প্রবর্তন করা হয়েছে এবং উহা ২৬/০৭/২০০৫ তারিখ থেকে কার্যকর হয়েছে। সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়, বিমা আইন, ১৯৩৮ এর ৪০এ ধারায় (২) ও (৩) উপধারায় অগ্নি ও অন্যান্য শ্রেনীর সংগৃহীত বিমা ব্যবসার প্রিমিয়ামের উপর শতকরা ১৫% হারে এবং নৌ-শ্রেনীর উপর শতকরা ১০% হারে সংশ্লিষ্ট এজেন্ট/এমপ্লয়ার অব এজেন্ট-কে কমিশন প্রদানের বিধান রয়েছে। তবে এজেন্ট/এমপ্লয়ার অব এজেন্ট এর বাৎসরিক প্রিমিয়াম আয়ের পরিমান নূন্যতম ১০০,০০০/- হলে সংগৃহীত প্রিমিয়ামের উপর আরো ৫% হারে কমিশন/ওভাররাইডিং কমিশন কিংবা রিমিউনারেশন আকারে প্রদান করা যায়।
পরবর্তীতে প্রবর্তিত, বীমা আইন, ২০১০ এর ৫৮(১) ধারার বিধানে বলা হয়, "কোন নন-লাইফ বীমা কোম্পানি বিমা ব্যবসা অর্জন বা সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বিমা এজেন্ট বা এজেন্ট নিয়োগকারী বা ব্রোকার ব্যতীত অন্য কাহাকেও প্রিমিয়ামের উপর শতকরা হারে পারিশ্রমিক বা পারিতোষিক পরিশোধ করিবে না।" উক্ত ধারায় কমিশনের পদ্ধতি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ না থাকার কারণে, বীমা ব্যবসা আহরনে কোন কোন বিমাকারী প্রতিষ্ঠান তাদের খেয়ালমত বিভিন্ন ফরমেটে কমিশন প্রদানসহ প্রিমিয়ামের সাথে সমন্বয় করা শুরু করেন। বিমা শিল্পের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে, নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির উন্নতি এবং বর্তমান কমিশন পদ্ধতির অব্যবস্থাপনা দূর করার জন্য বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ গত ১৫ জানুয়ারী ২০১২ইং তারিখে একটি সার্কুলার জারি করে যা ১লা মার্চ ২০১২ সন হতে কার্যকর করা হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, "কোন অবস্থাতেই বীমা কোম্পানীর পলিসি অথবা কভার নোটের প্রিমিয়ামের টাকা কমিশনের টাকার সঙ্গে অথবা অন্য কোন প্রদেয় টাকার সঙ্গে সমন্বয় করা যাবে না। তবে প্রিমিয়ামের বিপরীতে কোন কমিশন প্রদেয় থাকলে তা অবশ্যই লাইসেন্সধারী বিমা প্রতিনিধির বা ব্রোকারের নামে একাউন্ট পেয়ী চেকের মাধ্যমে প্রদান করতে হবে। আবার আইডিআরএ থেকে নিবন্ধন নেওয়া প্রতিনিধি বা ব্রোকার ছাড়া কেউ এই কমিশন পাবে না।"
কিন্তু, আবারও সেই পরিতাপ। অনিয়ন্ত্রিত কমিশন বানিজ্য এবং লাগামহীন প্রতিযোগিতা নিয়ে আসে বিমা শিল্পে অসম সংস্কৃতি। তাই, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন গত ৫ই মার্চ ২০১২ তারিখের সভায় এ মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন যে, Ò(1) No commission will be paid by the non-life insurance companies till fixing of the rate of agency commission by the IDRA and new rules/ regulations are framed as to the appointment of agents." বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন এর উক্ত সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গলি প্রদর্শন করে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা কমিশনকে নিয়ে যান দানবীয় রূপে। পুনরায়, গত ০১/০৪/২০১২ইং তারিখে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সার্কুলার নং- নন-লাইফ-৩২/২০১২ জারি করা হয়। তাতে সুস্পষ্টভাবে কমিশনের হার উল্লেখ করে দেয়া হয়। "বাংলাদেশে কোন নন-লাইফ বীমা পলিসি ইস্যু করার ক্ষেত্রে কোন বীমাকারী পরিশোধযোগ্য প্রিমিয়ামের ১৫ শতাংশের অধিক কমিশন অথবা অন্য কোন প্রকার পারিশ্রমিক কোন বিমা এজেন্টকে প্রদান অথবা প্রদানের চুক্তি এবং কোন বিমা এজেন্ট পরিশোধযোগ্য প্রিমিয়ামের ১৫ শতাংশের অধিক কমিশন অথবা অন্য কোন প্রকার পারিশ্রমিক গ্রহণ করতে পারবে না"।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও বিমা মালিকদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেওয়ার কারণে সার্কুলারটি সম্পূর্নরূপে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নেমে কোন কোন কোম্পানির কারনে কর্তৃপক্ষের বেধে দেয়া ১৫% এজেন্ট কমিশনের হার গিয়ে দাড়াঁয় ৭০% পর্যন্ত যা এজেন্টের বদলে চলে যায় গ্রাহকদের পকেটে। ফলে, গত ১৩/০৯/২০১২ইং তারিখে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সার্কুলার নং নন-লাইফ-৩৪/২০১২ জারি করা হয়। সেখানে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে এভাবে, "বীমা আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ১৩ নং আইন) এর ৫৮(১) ধারার প্রতি সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ পূর্বক অবহিত করা যাইতেছে যে, উক্ত ধারার শর্তাবলীর ব্যত্যয় ও লঙ্ঘন, যথা- বীমা ব্যবসা অর্জন বা সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বীমা এজেন্ট বা এজেন্ট নিয়োগকারী বা ব্রোকার বহির্ভূত সাধারণ কর্মকর্তা/ কর্মচারীকে প্রিমিয়ামের উপর শতকরা হারে বেতন প্রদান, কর্তৃপক্ষের গোচরীভূত হইয়াছে। বিমা খাতের শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও উন্নয়নের স্বার্থে এই ধরনের ব্যত্যয় ও লঙ্ঘন কাম্য নয়।"
এরপর অতিবাহিত হল ৭টি বছর। এরই মধ্যে কমিশন গিলে ফেলার উপক্রম প্রায় পুরা প্রিমিয়ামটাকেই। এদিকে সরকারের চাক্ষুস উপস্থিতি বিমা শিল্পে। সুতরাং লাগাম টেনে ধরতেই হবে এই মহাদানব কমিশন ব্যবসার। জারি হল সার্কুলার নং- নন-লাইফ ৬১/২০১৯ গত ৩০ এপ্রিল ২০১৯ইং তারিখে এবং সার্কুলার নং- নন-লাইফ ৬২/২০১৯ গত ০৩ জুন ২০১৯ইং তারিখে। এছাড়াও সার্কুলার নং- নন-লাইফ ৬৪/২০১৯ গত ০২ জুলাই ২০১৯ইং তারিখে এবং পরবর্তিতে উক্ত সার্কুলারকে বর্ধিত করে জারি হল আরেকটি সার্কুলার নং- নন-লাইফ ৬৮/২০১৯ গত ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ইং তারিখে। উক্ত সার্কুলার দ্বয়ের বিষয় ছিল, নন-লাইফ বীমা কোম্পানিসমূহের আর্থিক ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে এবং উদ্দেশ্য ছিল, বীমা গ্রাহকগণের যথাযথ স্বার্থ সংরক্ষনের নিমিত্তে বীমা কোম্পানিসমূহে Good Governance তথা সুদৃঢ় অভ্যন্তরীন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করনের লক্ষ্যে কতিপয় পদক্ষেপ গ্রহন করা। উক্ত পদক্ষেপসমূহে কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য বিরাজমান; লুক্কায়িত ব্যাংক হিসাব বন্ধকরন, অনিয়ন্ত্রিত কমিশন প্রদান বন্ধকরন, সর্বোপরি সরকারের রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধ করা।
সার্কুলার নং- নন-লাইফ ৬২/২০১৯ এর প্রেক্ষিতে বিআইএ তাদের ১৯ জুন ২০১৯ইং তারিখে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উল্লেখ করেন, "Non-life insurance companies have been stood at a very vulnerable stage for disbursing of the excessive commission that has surpassed all the records of the past. IDRA will not hesitate to declare the way of paying excess commission as activities of money laundering. So all are requested to consider it the last chance of survival."
উক্ত সভায় নিম্নোক্ত সিদ্ধান্তসমূহও গ্রহন করা হয়ঃ
"Every Non-life Insurance Company will follow the directives laid down in the Circular No. Non-Life 62/2019 dated: 03 June 2019 of IDRA in full. No non-life company will offer commission to its Agent not more than 15% under any circumstances from 1st August, 2019. If any company is found doing illegal practice, the concerned company will have to face legal consequences, the license will be suspended/cancelled by competent authority. The decision for awarding not more than 15% commission will be discussed and vetted in the meeting of the Board of Directors."
অতি সম্প্রতি আইডিআরএ কর্তৃক প্রদত্ত সকল সার্কুলারসমূহের পরিপূর্ণ বাস্তবায়নকল্পে বিআইএ সকল নন-লাইফ বিমা কোম্পানির চেয়ারম্যান এবং মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার সমন্বয় বেশ কয়েকটি সভার আয়োজন করেছেন। ছোট ছোট কোম্পানির স্বার্থ রক্ষায়, এজেন্ট কমিশনের কারণে যেন ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় অথবা কোন কোম্পানী ব্যবসা না হারায় অথবা আরেক কোম্পানীর ব্যবসা যেন অন্য কোম্পানি না নিয়ে যায়, সেদিকে খেয়াল রেখে বিআইএ কিছু পিরিয়ডের জন্য একটি "Gentleman's Agreement" পরিপালন করার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি, গ্রাহকদেরকে কমিশনের ব্যাপারে সচেতন করা এবং বীমা কোম্পানিতে কর্মরত সকল কর্মকর্তাদের অবহিত করার জন্য বিআইএ এবং আইডিআরএ কর্তৃক পৃথক পৃথক ভাবে বেশ কিছু জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়।
প্রায় পাঁচ মাস পর্যবেক্ষনের পর বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ যখন অনুধাবন করতে পারে যে, এজেন্ট কমিশনের উপর অগ্রিম কর কর্তন নিয়ে একটি বিভ্রান্তি দেখা দিচ্ছে, ঠিক তখনই কমিশন বিভ্রাট এবং বিমা ব্যবসায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য কর্তৃপক্ষ গত ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২০ ইং তারিখে সার্কুলার নং- নন-লাইফ ৭৫/২০২০ জারি করে। সেখানে উল্লেখ করা হয়, "শুধুমাত্র বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের লাইসেন্সধারী এজেন্টকে ৫% অগ্রিম কর কর্তন করে ১৪.২৫% কমিশন পরিশোধ নিশ্চিত করার স্বার্থে, ১লা মার্চ ২০২০ তারিখ থেকে নন-লাইফ বিমা কোম্পানিসমূহে ব্যবসা আহরনের নিমিত্ত সকল উন্নয়ন কর্মকর্তাগণকে কমিশনের ভিত্তিতে বিমা এজেন্ট হিসেবে পদায়ন করতে হবে। নন-লাইফ বিমা কোম্পানিসমূহের বেতন-ভাতা (Salary and allowance) খাতে বাৎসরিক ভিত্তিতে নীট প্রিমিয়ামের উপর ১০% এর বেশি ব্যয় করা যাবে না।" সার্কুলারটি পরিপালনের সুনির্দিষ্ট তারিখ থাকলেও উন্নয়ন কর্মকর্তাগণকে এজেন্ট হিসেবে রূপান্তরের প্রক্রিয়া যৌক্তিকভাবে সম্পন্ন করার স্বার্থে, পরবর্তীতে ধাপে ধাপে বেশ কয়েকবার সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
নন-লাইফ বীমাখাতে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনেকগুলো পদক্ষেপ নেয়া সত্ত্বেও কমিশন সংক্রান্ত বিষয়ে শৃঙ্খলা সম্পূর্নরূপে নিশ্চিত হচ্ছে না বিধায় এ খাতে শৃঙ্খলা আনয়নের স্বার্থে বীমা আইন ২০১০ এর অধীনে বীমা এজেন্ট নিয়োগ ও নিবন্ধন প্রবিধানমালা গেজেট আকারে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত নন-লাইফ বিমাখাতে ব্যবসা অর্জন বা সংগ্রহের বিপরীতে ১৫% বীমা এজেন্ট কমিশন প্রদান সংক্রান্ত সার্কুলার নং নন-লাইফ ৩২/২০১২, তারিখ ১ এপ্রিল ২০১২ এবং নন-লাইফের কমিশন হার সংক্রান্ত জারিকৃত অন্যান্য নির্দেশনাবলী পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত করে গত ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে প্রদত্ত সার্কুলার নং- নন-লাইফ-৮৪/২০২১, এর ক্রমিক নং-(২) অনুযায়ী "নন-লাইফ বীমাখাতে ব্যবসা অর্জন বা সংগ্রহের বিপরীতে ১৫% (পনের শতাংশ) এর পরিবর্তে ০% (শূন্য শতাংশ) নির্ধারন করা হলো," যা ১ মার্চ ২০২১ তারিখ থেকে কার্যকর করা হয়েছে।
বর্তমান বিদ্যমান কোভিড-১৯ মহামারীর কারনে অনেক ছোট ও মাঝারী আকারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বীমা পলিসির সংখ্যা কমে গিয়েছে এবং রেভিনিউ হ্রাস পেয়েছে। এদিকে মোটরযান বিমায় 3rd Party Insurance গ্রহণ অত্যাবশ্যকীয় না থাকায় এবং Comprehensive Insurance পুর্ণাঙ্গভাবে কার্যকর না হওয়ায় বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর বিমা কোম্পানীর রেভিনিউ কিছুটা সংকোচন হয়েছে।
এদিকে এজেন্ট কমিশন শূন্য শতাংশ করার পরও কিছু কিছু বিমা কোম্পানি কমিশন প্রদান করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে গ্রহকমুখে প্রচলিত আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের ১৫ শতাংশের অধিক কমিশন দেওয়া বন্ধ এবং আইডিআরএ সার্কুলার অনুযায়ী ব্যাংক হিসাব সংক্রান্ত সকল বিষয়ে সহযোগিতার সম্মতি দেয়া সত্ত্বেও কিছু কিছু ব্যাংক কর্মকর্তার নিকট হতে কমিশন প্রদাণ বন্ধে সহযোগিতার অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। যে সমস্ত বীমা কোম্পানি সততা, নিষ্ঠা এবং আইডিআরএ কর্তৃক প্রদত্ত বিধি-নিষেধ মেনে ব্যবসা পরিচালনা করছে, তাদের পক্ষে নতুন গ্রাহক আনয়ন দূরের বিষয় বরং পুরাতন গ্রাহকদেরকে ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
অপরদিকে, অনৈতিক প্রতিযোগিতার এর কারণে অনেক বীমা কোম্পানীর ব্যবসা কমে যাচ্ছে কিন্তু তাদের ম্যানেজমেন্ট এক্সপেন্স বা ব্যবস্থাপনা খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে যা, "নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স ব্যবসা ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণী বিধিমালা, ২০১৮" এর ব্যতয় ঘটছে এবং বছর সমাপ্তিতে তাদের মুনাফা অতিমাত্রায় হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অতএব, বাংলাদেশে বীমা শিল্পের বিকাশ কল্পে এবং রুগ্ন প্রতিযোগিতা বর্জন করে সম সহযোগিতামূলক বীমা শিল্প প্রতিষ্ঠায় সকলকে একযোগে একই নীতিতে অগ্রসর হতে হবে। সর্বশেষে, গত ০৪/০২/২০২১ইং তারিখে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জারিকৃত সার্কুলার নং- নন-লাইফ-৮৪/২০২১ যথাযথ প্রতিপালন ও অনুসরন করার জন্য সকল উন্নয়ন কর্মকর্তাসহ বীমা কোম্পানীর ঊধর্ধতন নির্বাহীদের এবং বিমা সেবা গ্রাহকদের আরও সচেষ্ট হতে হবে।
- লেখক: কোম্পানি সচিব, পিপলস ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড