সিনহা হত্যা: এসপি মাসুদকেও আসামি করার আবেদন
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনকেও আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য মামলার বাদি আবেদন করেছেন।
সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারকি হাকিম (কক্সবাজার সদর-৪) তামান্না ফারাহর আদালতে এই আবেদন করেন।
বাদির আইনজীবী সিনিয়র অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফা এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আদালত আবেদনটি গ্রহণ করলেও এ বিষয়ে এখনো (বেলা আড়াইটা পর্যন্ত) কোনো আদেশ দেননি। যে কোনো সময় আদেশ হতে পারে।
অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফা এক ব্রিফিংয়ে বলেন, 'কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন মেজর সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেই চলেছেন। তিনি সিনহা হত্যা মামলার আসামি বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকতকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছেন। আসামিদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।'
'অর্থাৎ এসপি এবিএম মাসুদ হোসেন তার দাপ্তরিক কার্যক্ষমতা আসামিদের পক্ষে কাজে লাগাচ্ছেন,' জানিয়ে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফা আরও বলেন, 'তাই তাকে মেজর সিনহার হত্যা মামলার আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একটি ফৌজদারি আবেদন করেছি। সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার স্বার্থে তাকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে শুনানি শেষে আদেশের অপেক্ষায় রেখেছেন।'
মামলার বাদি শারমিন ফেরদৌস বলেন, 'কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে মামলার আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা না হলে ন্যায় বিচার পাবার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।'
এর আগে, বৃহস্পতিবার সকালের ফ্লাইটে কক্সবাজার পৌঁছান সিনহার বোন শারমিনসহ তার পরিবারের লোকজন। বিমানবন্দর থেকে তারা সোজা চলে যান আদালত পাড়ার আইনজীবী চেম্বারে। সেখান থেকে যান বিচারক তামান্না ফারাহ'র আদালতে।
গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফের কাছে বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা। ওই ঘটনায় তার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস গত ৫ আগস্ট কক্সবাজারের হাকিম আদালতে নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেখানে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে এক নম্বর এবং টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে দুই নম্বর আসামি করা হয়।
মামলার পর ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য ৬ আগস্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। অন্য দুই আসামি পলাতক। মামলায় সহযোগী আসামিসহ বর্তমানে কারান্তরীণ রয়েছেন ১৩ জন। মামলাটি র্যাব তদন্ত করছে। তারা ১৩ আসামিকে নানা মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
এ পর্যন্ত মামলায় ১২ আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে অন্যতম অভিযুক্ত ওসি প্রদীপ সর্বোচ্চ ১৫ দিন রিমান্ডে থাকলেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।