সুন্দরবনে ১৪ জেলেকে অপহরণ করেছে বনদস্যুরা
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2019/09/09/sundarbans.jpeg)
সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের ১৪ জেলেকে অপহরণ করেছে বনদস্যু আমিনুর বাহিনীর সদস্যরা। পশ্চিম সুন্দরবনের কলাগাছি, দোবেকী এবং কোবাদক এলাকা থেকে গত তিন দিনে তাদের অপহরণ করা হয়েছে বলে খবর মিলেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও জিম্মি জেলেদের স্বজনরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ কথা জানান। মুক্তিপণের দাবিতে এসব অপহরণের ঘটনা ঘটছে বলে মনে করছেন তারা।
অপহৃত জেলেদের মধ্যে রয়েছেন রাজ্জাক ওরফে রাজু, এমপি সজল, আবু নাসির, আনারুল, হেলালুজ্জামান ও শাহ আলম। বাকিদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা যায়নি।
সাত সদস্যের বনদস্যু দলটি নিজেদের আমিনুর বাহিনীর সদস্য হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে বলে জানা গেছে।
নানা সূত্রে অপহরণের অন্তত তিনটি ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে। প্রথমটি ঘটে ৮ সেপ্টেম্বর। সেদিন দস্যুরা দোবেকী এলাকা থেকে শাহ আলম ও তার ভাইসহ তিনজনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়।
পরে, ৯ সেপ্টেম্বর কোবাদক এলাকা থেকে পাঁচ জেলেকে জিম্মি করে তারা। এ সময় জিম্মি জেলেদের দুই সহযোগী বনদস্যুদের দ্বারা শারীরিকভাবে নির্যাতিত হন। দস্যুরা তাদের আহত অবস্থায় ছেড়ে দিলে তারা বাড়ি ফিরে আসেন।
মুক্তি পাওয়া ওই সহযোগীদের দাবি, তখনও আট জেলে দস্যুদের হাতে বন্দী রয়েছেন। ওই জেলেদের মুক্তির জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ করতে দস্যুরা একটি ফোন নম্বর দেয় আহত সহযোগীদের কাছে। নম্বরটি হল, ০১৯৫৩৭২৫৬৫০।
আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, ১০ সেপ্টেম্বর সকালে ছয় জেলে বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন থেকে পাশের বনে প্রবেশ করেন। এর পরপরই একই বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে কিছু লোক তাদের অপহরণ করে। অপহৃত এই জেলেদের মধ্যে একজনের নাম সজল।
পরে, ওই একই বাংলালিংক নম্বর থেকে ফোন করে অপহৃতদের স্বজনদের কাছে মুক্তিপণ চাওয়া হয়। সে টাকা কোথায়, কখন ও কীভাবে তাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে হবে সেসবও বিস্তারিত বলে দেয় দস্যুরা।
এদিকে, স্থানীয় জেলেরা দাবি করেছেন, ১০ সেপ্টেম্বর সকালে সজল ও তার সঙ্গীদের অপহরণের খানিক আগেই, নীলডুমুর গ্রামের আরও কজন জেলেকে তুলে নেয় দস্যুরা। তাদের মধ্যে ছিলেন আবদুর হাকিম ও তার ভাইয়েরা। এই জেলেরা পাঁচটি নৌকায় সুন্দরবনের ভেতরে ঢুকেছিলেন।
বনদস্যুরা সজল ও আবদুল হাকিমদের নৌকাবহরগুলোে আটক করে প্রতি বহর থেকে একজন করে মোট ছ’জনকে তুলে নিযে যায়।
বনদস্যুদের হাত থেকে ফিরে আসতে পারা জেলেদের সহযোগীরা আরও জানিয়েছেন,, একটি বহরে বনদস্যু আমিনুর বাহিনীর প্রধান আমিনুরের ভায়রা ভাই ও তার ভাইয়েরা ছিল। আমিনুরের ওই ভায়রা ভাই এর আগে মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়ে পুলিশের নজরদারিতে ছিল।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল হুদা জানান, জেলে অপহরণের বিষয়ে স্থানীয়দের কেউ থানায় অভিযোগ দেননি। কোনো অভিযোগ পেলে থানা থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।