২০২০ সালে কিডনি রোগে মৃত্যু বেড়ে তিন গুণ: পরিসংখ্যান ব্যুরো
এক বছরে দেশে কিডনি জনিত রোগে মৃত্যু বেড়ে প্রায় তিনগুণ হয়েছে। অন্যদিকে, ব্রেন স্ট্রোক, ব্রেস্ট ক্যানসার, ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক, লিভার ক্যানসার, ইউটেরাস ক্যানসারেও মৃত্যুর হার ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুয়ায়ী, ২০১৯ সালের তুলনায় গত বছর কিডনি রোগে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ৬২২ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ১৭-তে। বিবিএসের ভাইটাল পরিসংখ্যান জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার আগারগাঁওয়ে বিবিএস ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে কিডনি রোগসহ বিভিন্ন রোগে দেশে মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশ করে বিবিএস।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী এবং বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
গণস্বাস্থ্য কমিউনিটি-বেসড মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ড. মুহিব উল্লাহ খন্দকার টিবিএসকে বলেন, 'কিডনি রোগের সঙ্গে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের বেশ নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। দেশে বর্তমানে প্রায় ৮০ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে এবং ২ কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। যারা ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, তাদের জন্য চিকিৎসা ও সচেতনতা দরকার।'
তিনি আরও বলেন, 'কিডনি রোগের চিকিৎসা ব্যয় অনেক বেশি। চিকিৎসা কন্টিনিউ করতে না পারা ও কিডনির পাশাপাশি অন্যান্য রোগে ভোগার কারণে কিডিনি রোগে মৃত্যু বাড়ছে। কিডনি রোগ যাতে না হয়, সেজন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের বিকল্প নেই।'
শুধু কিডনি রোগেই ব্রেন স্ট্রোকে মৃত্যুর সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়েছে। ব্রেস্ট ক্যানসারে মৃত্যুর হার বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। জন্ডিসে মৃত্যু বেড়েছে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। অন্যদিকে, ব্লাড ক্যানসারেও বেড়েছে মৃত্যুর হার।
সংশ্লিষ্টদের মতে, চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায়, অনেকে এর ব্যয় বহন করতে পারছে না। এ কারণে মৃত্যুর হারও বাড়ছে।
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, খুন, আত্মহত্যা, শাপের কামড়, সড়ক দুর্ঘটনা, বিষ, বজ্রপাত, পানিতে ডুবে, অন্যান্য দুর্ঘটনা এবং রোগে আক্রান্ত হয়ে দেশে ২০২০ সালে ৮ লাখ ৫৪ হাজার ২৫৩ জনের মৃত্যু ঘটেছে। এর আগের বছর, অর্থাৎ ২০১৯ সালে দেশে এসব কারণে মোট ৮ লাখ ২২ হাজার ৮৪১ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে মৃত্যু বেড়েছে ৩১ হাজার ৪১২ জনের।
সারাদেশে ২ হাজার ১২টি নমুনা এলাকার তথ্যের ভিত্তিতে এ জরিপ করা হয়েছে। তাদের তথ্যানুযায়ী, ২০১৯ ও ২০২০ সালে দেশে এইডস রোগে কারও মৃত্যু হয়নি।