‘মালিকদের চাপে’ কাজে যোগ দিলেন ৪ হাজার জাহাজভাঙা শ্রমিক
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকার শিপইয়ার্ডগুলোতে প্রায় চার হাজার শ্রমিক বৃহস্পতিবার থেকে কাজে যোগ দিয়েছেন। মালিকদের চাপে তারা কাজে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে দাবি করেছেন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।
এদিকে, কাজে যোগ দেওয়া এসব শ্রমিকের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কেউ কাজে যোগ দিলে তার মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
শিপ ব্রেকিং ওয়ার্কার্স ট্রেড ইউনিয়নের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার ২০ থেকে ২২টি শিপইয়ার্ডে কাজ শুরু হয়েছে। এরমধ্যে সীতাকুণ্ডের মাদাম বিবিরহাট এলাকার ইয়ার্ডগুলো রয়েছে।
ট্রেড ইউনিয়নের আহ্বায়ক তপন দত্ত বলেন, ঝুঁকির মধ্যে মালিকরা শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে বাধ্য করেছেন। এটি শ্রমিকদের জীবনকে মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলবে। এ ছাড়া কাজে যোগ দেওয়া শ্রমিকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়নি বলে আমরা জেনেছি।
গত বুধবার শিপইয়ার্ড মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসবিআরএ) কিছু শর্ত পূরণের মাধ্যমে শিপইয়ার্ডগুলো চালু করা যাবে উল্লেখ করে ইয়ার্ড মালিকদের চিঠি দেয়।
সীতাকুণ্ডে প্রায় ৬০টি শিপইয়ার্ড রয়েছে। এসব শিপইয়ার্ডে প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক কাজ করলেও বেশির ভাগ শ্রমিক সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর বাড়ি চলে গেছেন। তবে ৪ থেকে ৫ হাজার শ্রমিক শিপইয়ার্ড ও আশপাশ এলাকায় অবস্থান করছিলেন।
বিএসবিআরএ সভাপতি মোহাম্মদ আবু তাহের দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে শিপইয়ার্ড খুলতে মালিকদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়া কেউ সেখানে কাজ করতে পারবে না। বৃহস্পতিবার কিছু শিপইয়ার্ড চালু হয়েছে। তবে কয়টি চালু হয়েছে এবং কতজন শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছেন, সেটি আমরা এখনো বলতে পারছি না।
শিপইয়ার্ড শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইপসার সমন্বয়ক মোহাম্মদ আলী শাহিন বলেন, কিছু শ্রমিক ছুটিতে বাড়ি যেতে পারেননি। তারা শিপইয়ার্ড ও আশপাশে এলাকায় অবস্থান করছিলেন। মালিকরা এসব শ্রমিককে চাপ দিয়ে কাজে নিয়ে গেছেন বলে শ্রমিকরা জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাস ঝুঁকির মধ্যে এটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। শ্রমিকদের মধ্যে কেউ আক্রান্ত হয়ে থাকলে ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গত মাসে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার পর শিপইয়ার্ডগুলো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়। বৃহস্পতিবারের আগ পর্যন্ত ১০ দিন শিপইয়ার্ডগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল।