ঘরে ঘরে জ্বর, কোভিড ও ডেঙ্গু টেস্টের পরামর্শ চিকিৎসকদের
ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত মানুষ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির পাশাপাশি ডেঙ্গুর প্রকোপও বাড়ছে। একইসাথে ডেঙ্গু ও কোভিড পজিটিভ এমন রোগীও পাওয়া যাচ্ছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, কোভিড ও ডেঙ্গুর লক্ষণ প্রায় একই রকম হওয়ায় দুটি টেস্টই জরুরি। টেস্ট করে রোগ নিশ্চিত করে সে অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে, তা না হলে রোগের তীব্রতা বাড়ার পাশাপাশি সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি আছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগী শনাক্তের হার ১৫% এর বেশি ছিল।
চিকিৎসকেরা বলছেন, দুটি রোগের জন্যই মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ টিবিএসকে বলেন, 'জ্বর, সর্দি, কাশি, শরীর ব্যথা, রুচি নেই, নাকে ঘ্রাণ নেই- যাদেরই এ ধরণের লক্ষণ থাকছে তাদের অবশ্যই কোভিড টেস্ট করতে হবে। বিশেষ করে কিডনি, লিভার, হার্ট, স্ট্রোকের রোগীদের জ্বর হলে অবহেলা করা যাবে না। ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এখন ডেঙ্গু ও কোভিড হয়েছে এমন অনেক রোগী পাওয়া যাচ্ছে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মানা ও সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।'
জ্বর হলে করণীয় সম্পর্কে ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, 'জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল ও কাশি হলে কাশির ওষুধ খেতে হবে। উপসর্গ অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া যাবে না। গরম পানি দিয়ে গার্গল করতে হবে, গরম পানি খেতে হবে। ফলমূল, শাকসবজি ও প্রোটিনজাতীয় খাবার খেতে হবে।'
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে ১২৮ জন রোগী। এর মধ্যে ঢাকায় ১২১ জন ও ঢাকার বাইরে সাতজন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ফরহাদ উদ্দিন হাসান চৌধুরী বলেন, 'উচ্চমাত্রার জ্বর, মাথা ব্যথা, চোখ ব্যথা- ডেঙ্গু ও কোভিড দুই রোগেরই লক্ষণ। জ্বর, শরীর ব্যথা ও কাশি হলে ডেঙ্গু ও কোভিড দুটি টেস্টই করা উচিত। ঢাকা শহর বিশেষ করে শহুরে এলাকায় জ্বর ও শরীর ব্যথা হলে ডেঙ্গু ও কোভিড দুটি টেস্ট করা উচিত।'
ডা. ফরহাদ উদ্দিন হাসান চৌধুরী বলেন, 'এই সময় জ্বর চার থেকে পাঁচদিনের মতো থাকছে তারপর ঠিক হয়ে যাচ্ছে। রোগ নির্ণয় ও কমিউনিটিতে যাতে ছড়িয়ে না করে সেজন্য টেস্ট জরুরি। কাশি থাকলে কোভিড আর কাশি না থাকলে ডেঙ্গু বিষয়টা এমন নয়। আবার জ্বর, কাশি, ব্যথা এসব লক্ষণ থাকলেও ডেঙ্গু ও কোভিড নেগেটিভ কিন্তু অন্যান্য ভাইরাল জ্বর আক্রান্ত রোগীও পাওয়া যাচ্ছে।'