চড়া দাম, কোরবানির পশুর হাটে প্রথম দিন বিক্রি কম
ঈদুল আযহার আর মাত্র তিন দিন বাকি থাকলেও বুধবার (৬ জুলাই) রাজধানীর গরুর হাটে কোরবানির পশু বিক্রি ছিল কম। পাঁচ দিনের অস্থায়ী হাটের প্রথম দিন ছিল এটি।
বিক্রেতারা বলছেন, ফিডের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার গবাদিপশু পালন ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। কিন্তু ক্রেতারা যেসব দাম হাঁকছেন তা খুবই কম। অন্যদিকে ক্রেতারাও বলছেন, এবার পশুর দাম একটু বেশিই।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ২১টি পশুর হাট বসেছে। গাবতলীর স্থায়ী হাটসহ মোট ১০টি পশুর হাট বসছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ডেমরার সারুলিয়ার স্থায়ী হাট সহ এবার ১১টি হাট বসেছে।
এর মধ্যে অস্থায়ী ১৯টি হাটে গতকাল বুধবার ছিল পশু বিক্রি করার প্রথম দিন। এ হাটগুলোতে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বিক্রি চলবে ঈদের দিনসহ মোট পাঁচদিন।
গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়ায় ইতিমধ্যেই পরিপূর্ণ সব স্থায়ী- অস্থায়ী গবাদি পশুর হাট।
বুধবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বাড্ডা আফতাবনগর ইস্টার্ন হাউজিং হাট ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রামপুরা ও বনশ্রী এলাকার মেরাদিয়া পশুর হাটে ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
আফতাবনগর হাটে দেখা যায় পুরো হাট ভরে গেছে কোরবানির পশুতে। এদের মধ্যে গরুর সংখ্যা বেশি। এ হাটে ছোট, মাঝারি থেকে বড় গরুও উঠেছে। ৬০ হাজার থেকে ১৫ লাখ টাকা দামের গরু রয়েছে এই হাটে।
ফরিদ হোসেন পাবনা এলাকা থেকে বড় আকারের ৩৬ টি ষাঁড় এনেছেন আফতাবনগর হাটে। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, "হাটে ক্রেতা খুব কম । যারা এসেছেন তারা যে দাম বলেন সেটায় পশু পালনের খরচও উঠবে না, লাভ তো পরের বিষয়।"
এক হাজার কেজি ওজনের একটি ষাঁড় দেখিয়ে তিনি বলেন, "এক বছর আগে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকায় কিনেছি। এখন ক্রেতারা দাম বলছে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অথছ বড় আকারের একটি ষাঁড়ের পেছনে প্রতি মাসে খরচ আছে ১০ হাজার টাকা।"
ভালো দাম না পেলে ষাঁড়টি বাড়িতে নিয়ে কেজি হিসেবে কসাইয়ের কাছে বিক্রি করতে হবে বলে জানান তিনি।
বারিধারা থেকে হাটে এসেছেন মোহম্মদ আতিক। তিনি আজ দাম যাচাই করতে এসেছেন বলে জানান।
এবার দাম বেশি মনে হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "আসলে গরু রাখার যায়গা তেমন নেই। তাই ঈদের ২ দিন আগে কিনবো।"
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকার মেরাদিয়া পশুর হাটে কুস্টিয়া থেকে ২৪টি গরু এনেছেন করিম কবিরাজ। তিনি বলেন, ক্রেতারা যারা আসছে তারা বাজার যাচাই করছেন।
আবাসিক এলাকা বা লোকালয়ের মধ্যে হাট বসানো যাবে না এমন নির্দেশনা রয়েছে সরকারের।
কিন্তু সেই শর্ত ভঙ্গ করেছেন মেরাদিয়া বাজারসংলগ্ন পশুর হাটের ইজারাদাররা। ফার্মেসি, হাসপাতাল আবাসিক ভবন, মুদি দোকান ও সুপার শপের সামনের রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে গরু বেঁধে রাখা দেখা গেছে এ হাটে।
ফরাজী ডেন্টাল হসপিটালের গেটের সামনেও সারিবন্ধভাবে গরু বেঁধে রাখা হয়েছে।
কেজিতে বিক্রি হচ্ছে জীবন্ত গরু
কেজি দরে জীবন্ত অবস্থায় গরুর বিক্রির করেছে খামারিরা। যেখানে ক্রেতার ভালো সাড়া পাচ্ছেন তারা।
মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের পাশে বাঁধসংলগ্ন সড়কের পাশে অবস্থিত সাদেক এগ্রো কোরবানির জন্য ২৫০০ পশু নিয়ে এসেছে। এরমধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ গরুই ইতোমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে।
এগ্রো এর ইনচার্জ শাহরিয়ার পরশ টিবিএসকে বলেন, "আমরা ছোট ও মাঝারি আকারের জীবন্ত অবস্থায় গরুর ওজন ধরে (লাইভ ওয়েট) কেজিপ্রতি ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকা বিক্রি করছি।"
এছাড়া তারা কোরবানি সম্পন্নের পর মাংস বাসায় পৌঁছে দেওয়ার সেবাও চালু রেখেছেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে ক্রেতাকে গরুর দামের ১৫ শতাংশ বেশি টাকা দিতে হবে।