যে সব কারণে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে তীব্র যানজট
ঈদে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের চাপ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। চলতি ঈদ যাত্রায় টানা ৪০ ঘণ্টার যানজটে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে এ সড়কের যাত্রীদের।
ফিটনেসের অভাবে হঠাৎ বিকল যানবাহন, অদক্ষ চালকের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা, এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত সড়কে মাত্র দুই লেন, ও সিরাজগঞ্জ থেকে গাড়ি ধীরে চালানো ইত্যাদি কারণে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে সড়কের পাশে খানাখন্দ রয়েছে।
পুলিশ, যানবাহন চালক ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, ঈদকে কেন্দ্র করে মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল করে। এতে করে একটি যানবাহন বিকল হয়ে গেলে তা অপসারণ করতে যে সময় লাগে, ওই সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে যানজটের সৃষ্টি হয়।
দুর্ঘটনার শিকার যানবাহনের কারণেও যানজটের সৃষ্টি হয় এই মহাসড়কে। এছাড়া প্রশিক্ষণবিহীন অদক্ষ চালকেরা ট্রাফিক সিগনাল ও সড়ক আইন না মেনে অনেক সময় এলোমেলোভাবে গাড়ি চালিয়েও যানজটের সৃষ্টি করেন।
দুপুরে মহাসড়কের কালিহাতী উপজেলার ভাবলা এলাকায় বগুড়াগামী বাস চালক হান্নান মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, 'ঈদকে কেন্দ্র করে অনেক প্রশিক্ষণছাড়া চালক ফিটনেসবিহীন গাড়ি সড়কে বের করে। তাদের এলোমেলো গাড়ি চালানোর কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে আটকে আছি।'
এছাড়াও ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যানবাহন কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেন সড়কে দ্রুত চলতে পারলেও এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত দুই লেনের সড়ক থাকায় হঠাৎ করে চলাচলের গতি কমে যায়। এছাড়া সেতুটিও দুই লেনের হওয়ায় বেশি সংখ্যক গাড়ি একত্রে পার হতে পারে না।
দিনাজপুরগামী বাস চালক আজিজুল হক বলেন, 'গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত দ্রুতগতিতে আসতে পারি। কিন্তু এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত সড়কটুকু সিঙ্গেল লেনের হওয়ায় ধীর গতিতে চলতে হয়। এতে এক পর্যায়ে যানবাহনের চাপ বেড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।'
এর বাইরে রয়েছে টোল দিতে গিয়ে যানজটের মুখে পড়া। শুক্রবার (৮ জুলাই) ভোর রাতে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তের পিলারের কাছে সড়ক দুঘর্টনার কারণে এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট টোল আদায় বন্ধ রাখে সেতু কর্তৃপক্ষ। এতে মহাসড়কটিতে যানজটের সৃষ্টি হয়।
শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পার থেকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছিল। বেলা বাড়ার সাথে সাথে তা কমে। সন্ধ্যা ৭টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে সদর উপজেলার রসুলপুর পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজট রয়েছে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, 'মহাসড়কে ৭০০-এর বেশি পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। রাত দিন সড়কেই আছি। মানুষ বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত ঘরে ফিরব না।'