নড়াইলে সাম্প্রদায়িক হামলা: গ্রেপ্তারকৃত ৫ জনের রিমান্ড মঞ্জুর
নড়াইলের লোহাগড়া থানার দিঘলিয়া গ্রামের সাহাপাড়ায় সাম্প্রদায়িক হামলার মামলায় পাঁচজনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (১৮ জুলাই) বিকেলে নড়াইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোর্শেদুল আলম এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
লোহাগড়া থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, 'আদালতের কাছে গ্রেপ্তার পাঁচজনকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়ে। শুনানি শেষে আদালত তাদের প্রত্যেকের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।'
এর আগে রোববার রাতে ও সোমবার সকালে তাদের লোহাগাড়া থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সাইদ শেখ, রাসেল মৃধা, কবির গাজী, রেজাউল শেখ ও মাসুম বিল্লাহ। তারা লোহাগড়া থানার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা বলে জানান মিজানুর।
ঘটনার দিন জনরোষ সৃষ্টি ও হামলার সঙ্গে তারা জড়িত ছিলেন বলেও জানান তদন্ত কর্মকর্তা। তিনি বলেন, 'রিমান্ডে নিয়ে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও রহস্য উদঘাটন করা যাবে। তখন তাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য কী ছিল- বোঝা যাবে'।
এদিকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, দোকান ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং দুটি মন্দিরে হামলার ঘটনায় রোববার রাতে মামলাটি করেন লোহাগড়া থানার এসআই মাকরুফ রহমান। মামলার পরই আসামিদের ধরতে অভিযানে নামে পুলিশ।
মামলায় অজ্ঞাতনামা ২০০-২৫০ জনকে আসামি করা হয়। তবে পুলিশি সূত্র জানায়, ঘটনার দিনের ভিডিও ফুটেজ দেখেই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। এর আগে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে, ১৬ জুলাই রাতে দিঘলিয়া গ্রামের সালাহউদ্দীন কচি বাদী হয়ে কলেজছাত্র আকাশ সাহার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বর্তমানে তিনি তিন দিনের রিমান্ডে আছেন।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে একটি ফেসবুক পোস্টে আকাশ সাহার ফেসবুক আইডি থেকে গত বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) বিতর্কিত কমেন্ট করার অভিযোগ ওঠে।
এর জেরে শুক্রবার বিকেলে হামলা হয় দিঘলিয়া গ্রামের সাহাপাড়ায়।
হামলাকারীরা গোবিন্দ সাহা ও দিলীপ সাহার বাড়ি, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বাবা অশোক সাহার দোকানসহ ১০টির বেশি বাড়িঘর-দোকান ভাঙচুর করে। গোবিন্দ সাহার বাড়িতে আগুনও দেওয়া হয়।
বিক্ষোভকারীরা ইট-পাটকেল ছোড়ার পাশাপাশি সাহাপাড়া মন্দিরের প্রতিমা, চেয়ার ও সাউন্ডবক্স ভাঙচুর করে। হামলার পর ভীতসন্ত্রস্ত হিন্দু পরিবারের অধিকাংশ সদস্য আশপাশের গ্রামগুলিতে আশ্রয় নেন।
তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, গ্রামের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।
লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজগর আলী বলেন, 'গ্রামে এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক ইউনিটের সদস্য মোতায়েন আছে'।