৫২ শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত, উৎপাদন বন্ধ দিনাজপুর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে
পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়ার তিনদিনের মাথায় বন্ধ হয়ে গেছে দিনাজপুর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন। খনির অভ্যন্তরে কাজ করা শ্রমিকদের ৫২ জন করোনা পজিটিভ হওয়ায় কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আক্রান্তদের মধ্যে চীনা ও দেশীয় শ্রমিক রয়েছেন।
গত ২৭ জুলাই সকালে খনি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু করে কর্তৃপক্ষ। চার -পাঁচদিনের মধ্যেই এই খনির পূর্ণাঙ্গ উৎপাদনে যাওয়ার কথা ছিল, যেখান থেকে প্রতিদিন ২৭০০ থেকে ৩০০০ মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলন হবে বলে জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, 'কিছুদিন আগেই প্রাথমিকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু করেছি। সাধারণত প্রথম ৭ দিন প্রাথমিকভাবে কয়লা উত্তোলন করা হয়। পরে চূড়ান্তভাবে উত্তোলন করা হয়। কিন্তু এরই মধ্যে কিছু শ্রমিক করোনা আক্রান্ত হয়েছে। খনিতে কর্মরত চীনা শ্রমিকরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে- পূর্বের মত যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছে তাদেরকে খনির বাইরে রেখে নতুন করে করোনামুক্তভাবে খনিতে প্রবেশ করানো হবে। করোনা আক্রান্ত চীনা শ্রমিকদের সাথে সংস্পর্শে যারা গেছে তারা খনির বাইরে চলে গেছে। খুব তাড়াতাড়ি যে সকল শ্রমিক বাইরে গেছে, তাদের খনিতে ফিরিয়ে আনা হবে।'
তিনি আরও জানান, খনিতে যারা করোনা আক্রান্ত হয়নি, তাদের দিয়ে প্রাথমিকভাবে কয়লা উত্তোলনের কূপের উন্নয়ন কাজ করানো হচ্ছে।
জানা গেছে, ২৭ জুলাই বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির নতুন কূপে কয়লা উত্তোলন কার্যক্রম শুরু করে কর্তৃপক্ষ। খনিতে ৩০০ জন চীনা ও ৪০০ জন বাংলাদেশি শ্রমিক অবস্থিত করছিল। এর মধ্যে ২৬ জুলাই ১৪৩ জন শ্রমিকের পরীক্ষা করা হয়। ১৬ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। পরে ২৮ জুলাই ৩০৫ জন চীনা ও বাংলাদেশি শ্রমিকের করোনার নমুনা নেয়া হয়। এর মধ্যে ২৯২ জন চীনা ও ১৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিক ছিল। তাদের মধ্যে ৩৪ জন চীনা ও ২ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের করোনা পজিটিভ আসে।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল উত্তোলনকৃত ১৩১০ নং ফেইজ থেকে মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এই খনিতে কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। পরে ফেইজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর পরিত্যক্ত ফেইজের ব্যবহারযোগ্য যন্ত্রপাতি স্থানান্তর ও নতুন প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বসিয়ে ১৩০৬ নং ফেইজ থেকে কয়লা উত্তোলন করার প্রক্রিয়া শুরু করে কর্তৃপক্ষ। ওই সময়ে বলা হয়েছিল নতুন ফেইজ রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন করে কয়লা উত্তোলনে সময় লাগবে প্রায় আড়াই মাস। পরে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে কয়লা উত্তোলনের সময়ও নির্ধারণ করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু চলমান বিদ্যুৎ সংকটের কারণে দ্রুতই কয়লা উত্তোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। অবশেষে গত ২৭ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টায় খনির নতুন ফেইজ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু করে কর্তৃপক্ষ।