প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে গুরুত্ব পাবে পানিবণ্টন চুক্তি
চার দিনের সফরে আজ সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) শীর্ষ বৈঠকে বসবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরে পানি বণ্টনসহ জ্বালানি সহযোগিতা, নিরবচ্ছিন্ন বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও দুই দেশের আন্তঃসম্পর্ক উন্নয়নের মতো বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় পত্রিকা দ্য হিন্দু।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে চাপ প্রদান অব্যাহত রাখলেও তিস্তা নিয়ে কোনো বড় ঘোষণার সম্ভাবনা নেই বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। তবে আসাম থেকে বাংলাদেশে আগত কুশিয়ারা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
জ্বালানি চুক্তি
দ্য হিন্দুকে ভারতীয় একটি কূটনৈতিক সূত্র জানায়, 'দুই পক্ষের মধ্যে এবার জ্বালানি সরবরাহ নিয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি।'
অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, জ্বালানি চুক্তি না হলেও বাংলাদেশ যদি বর্তমান জ্বালানি সংকট নিয়ে ভারতের কাছে পরামর্শ চায় সেক্ষেত্রেও ভারত ইতিবাচক সাড়া দিতে পারে।
স্থিতিশীল বাণিজ্যিক সম্পর্ক
সফর সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালে ভারত থেকে সহায়তা পাওয়া নিয়ে দেশটির রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী ১৯৭৫ সালে তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হত্যার পর দিল্লিতে নির্বাসিত জীবনের ব্যক্তিগত স্মৃতিকথা তুলে ধরেন। বাংলাদেশের বর্তমান বাণিজ্যিক পরিস্থিতি ও অবকাঠামাগত প্রকল্পের আলোকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়েও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রয়োজনীয় যেসব পণ্যের জন্য বাংলাদেশ ভারতের ওপর নির্ভরশীল, সেসব পণ্যের সরবরাহে ব্যাঘাত নিয়েও নিয়মিত উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে বাংলাদেশ সরকার। এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় তিনি পেঁয়াজ সংকটের কথা তুলে ধরেন।
ভারত থেকে সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় সৃষ্ট পেঁয়াজ সংকটে ক্ষোভ প্রকাশ করে দেশের সাধারণ মানুষ। তাই এবারের সফরেও ঢাকা ভারতের কাছে স্থিতিশীল বাণিজ্যিক সরবরাহের নিশ্চয়তা চাইতে পারে।
পানিবণ্টন
সফর সামনে রেখে গত ২৫ আগস্ট নয়াদিল্লিতে প্রায় এক যুগ পর যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) বৈঠকে বসে ভারত ও বাংলাদেশ। দুদেশই নদীর পানি বণ্টন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে। বৈঠকে আসাম থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত কুশিয়ারা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে একটি চুক্তির খসড়া তৈরি হয়।
ভারতীয় কূটনৈতিক সূত্রানুসারে, শেখ হাসিনা তিস্তা নদীর পানিবণ্টন নিয়েও চাপ প্রদান অব্যাহত রাখবেন।
প্রধানমন্ত্রী তার সফরে রাজস্থানের আজমীর শরীফসহ নিজামুদ্দিন আউলিয়ার সুফি দরবারও প্রদর্শন করবেন বলে জানা গেছে।
চলতি বছরের শেষে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে প্রধানমন্ত্রীর পশ্চিমে সফরের পরিকল্পনাতেও ভারতের সঙ্গে আঞ্চলিক বন্ধুত্ব প্রদর্শনের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
- সূত্র: দ্য হিন্দু