বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন করবে স্মার্ট গ্রিড: জন সাখাওয়াত চৌধুরী
ইউএস-ভিত্তিক এনকেসফট কর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জন সাখাওয়াত চৌধুরী বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার অটোমেশন এবং স্মার্ট গ্রিড রূপান্তরের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ১৯৯৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার কোম্পানির যাত্রা শুরু হয়। ইতোমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশে বিদ্যুৎ অটোমেশনের অভিজ্ঞতা রয়েছে এই উদ্যোক্তার।
বাংলাদেশসহ আটটি দেশে অফিস এবং ১৪টি দেশে প্রতিনিধি নিয়ে কোম্পানিটি এ পর্যন্ত সারা বিশ্বের ১৩,০০টিরও বেশি কোম্পানির সাথে কাজ করেছে। কোম্পানির মোট সম্পদ এখন প্রায় ৪৫ মিলিয়ন ডলার। মাত্র ২৫ হাজার ডলার নিয়ে যাত্রা করেছিল তারা।
বর্তমানে, কোম্পানিটি বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো স্মার্ট গ্রিড প্রযুক্তি বিকাশের জন্য দুটি স্থানীয় কোম্পানি - ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) এবং ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডব্লিউজেডপিডিসি)-এর সাথে কাজ করছে।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জন সাখাওয়াত চৌধুরী বাংলাদেশে এনকেসফট-এর প্রকল্প এবং বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশে বিদ্যুৎ খাতে এর সম্পৃক্ততা নিয়ে কথা বলেছেন।
স্মার্ট গ্রিডের ফলে বাংলাদেশের বিদ্যুতের গ্রাহক ও কোম্পানিগুলো কি সুবিধা পাবে?
এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ডিসট্রিবিউশান গ্রিডে যে মূল সমস্যাটা আছে,তা বেশ পুরাতন। বাংলাদেশের ডিস্ট্রিবিউশান গ্রিডে অটোমেশন সিস্টেম ইন্টিগ্রেট হয়নি। এজন্য আমরা এটাকে অটোমেশন করছি। যাতে বিদ্যুতের ক্ষতি কমানো যায় এবং সব সময় সব পরিবেশে চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়।
এখন স্মার্ট গ্রিডের আওতায় বিদ্যুৎ জেনারেশন হাউজ থেকে একেবারে গ্রাহকের বাড়ি পর্যন্ত সঞ্চালন লাইনে কোন গাছ পড়লে, লাইন ছিড়লে, ট্রান্সফর্মার নষ্ট হলে অটোমেটিক নেটওয়ার্ক ট্রান্সমিশন বা স্মার্ট গ্রিড ব্যবস্থায় কোম্পানির প্রকৌশলী ও কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেন্টার থেকে তা সরাসরি জেনে যাবে।
আবার কোথায় কত ভোল্টেজ প্রয়োজন, কত সরবরাহ হচ্ছে, দুর্বল লাইন, দুর্বল ট্রান্সফর্মার, দুর্বল খুঁটি এমন অনেক সমস্যা আগ থেকেই চিহ্নিত করা যাবে। চিহ্নিত সমস্যার কারণে কোন ঘটনা ঘটনার সম্ভাবনা থাকলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের মূল ট্রান্সমিশন থেকে বাদ রেখে বাকি কাস্টমারদের অন্য সাবস্টেশনের সাথে যুক্ত করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে। কিংবা তাদের অব্যবহৃত বিদ্যুৎগুলো অন্য যেখানে প্রয়োজন সেখানে পাঠানো যাবে। এছাড়া বর্তমানে একজন গ্রাহকের সামান্য কোন সমস্যার জন্যও ওই এলাকার পুরো ফিডার লাইনের বহু গ্রাহকে বিদ্যুৎ ব্যবহার থেকে বঞ্চিত করা হয়। এতে কোম্পানির ক্ষতি। কারণ কোন লাইন বন্ধ থাকলে তাতে অব্যবহৃত বিদ্যুতের হিসেবে কোন মিটারে আসে না।
বর্তমানে প্রচলিত ব্যবস্থায় একজন কাস্টমারের যে কোন সমস্যা সমাধানে ম্যানুয়ালি জানাতে হয় বা ফোন করতে হয়। স্মার্ট গ্রিড চালু হলে কাউকে ফোন করে সমস্যার কথা জানাতে হবে না। কাস্টমার উল্টো বিদ্যুৎ অফিস থেকে তার সমস্যার কথা জানবে এবং সমাধান হতে কতক্ষণ লাগবে তা জানবে।
বাংলাদেশে সর্বপ্রথম স্মার্ট গ্রিডে যাচ্ছে কোন কোম্পানি? গ্রাহকরা কবে নাগাদ এ সুবিধা ভোগ করবে?
স্মার্ট গ্রিড এর যে কাজ করা হচ্ছে তা আগে কখনো বাংলাদেশে হয়নি। এবারই প্রথম। ২০২১ সাল থেকে আমরা বাংলাদেশে স্মার্ট গ্রিডের কাজ শুরু করেছি।
বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বপ্রথম দুটি বিদ্যুৎ কোম্পানিকে স্মার্ট গ্রিড সিস্টেমে রূপান্তরিত করছে এনকেসফট। একটি হচ্ছে, ঢাকা পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানি- ডিপিডিসি। এই প্রকল্পটি এ এফডি (ফ্রেঞ্চ ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি) ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) এর অর্থায়নে পরিচালিত।
অন্যটি দেশের পশ্চিমাঞ্চলের ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানি-ডব্লিউজেডপিডিসি। এই প্রকল্টি কেএফডব্লিউ এর অর্থায়নে পরিচালিত।
ডিপিডিসি এর জন্য আমরা প্রধান কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করছি। আমাদের পরামর্শে তাদের পুরো সিস্টেম (ইন্টিগ্রেশন ডিজাইন) তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে ডব্লিউজেডপিডিসির জন্য সফটওয়্যার এবং অন্যান্য সকল টুলস দিয়ে পুরো সিস্টেম তৈরি করে দিচ্ছি। ৩ বছরের মধ্যে এ দুটি কোম্পানির গ্রাহকরা স্মার্ট গ্রিডের সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
স্মার্ট গ্রিডের জন্য আপনারা কী করছেন? আপনাদের সাথে অন্য কারা আছে?
স্মার্ট গ্রিডে বহু কাজ, বহু রকমের সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার এবং বহু প্রতিষ্ঠান জড়িত। প্রধান সফটওয়্যারটি সরবরাহ হচ্ছে আমাদের এনকেসফট কিমা কর্পোরেশন থেকে।
আমাদের কোম্পানির কনসালটেন্সির অধীন বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের বড় বড় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এর মধ্যে স্মার্ট গ্রিডের প্রধান কাজ জিআইএস এর জন্য, বিশ্ববিখ্যাত প্রতিষ্ঠান এসরি। কিছু টুলসের জন্য ইউরোপের বড় ইলেকট্রিক কোম্পানি শ্নেইডার, ডাটার জন্য আমেরিকান কোম্পানি ই-ট্যাবস সবাই আমাদের অধীনে কাজ করছে।
এনকেসফটের সহায়তায় পৃথিবীর অন্য কোন কোম্পানি স্মার্ট গ্রিডে এসেছে? আপনাদের গ্রাহক কারা?
এনকেসফট গ্রিড আধুনিকীকরণের একটি আন্তর্জাতিক কনসালট্যান্টসি প্রতিষ্ঠান। শক্তি ব্যবস্থাপনা, মাইক্রোগ্রিড, ডিস্ট্রিবিউটেড এনার্জি, দক্ষ ট্রান্সমিশন এবং ডিস্ট্রিবিউশন গ্রিড প্ল্যানিং, নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন পরিকল্পনা, ডিজাইন এবং স্মার্ট সিটি প্ল্যানিং এবং স্থাপনার অভিজ্ঞতা রয়েছে আমাদের।
এনকেসফটের প্রধান সদর দপ্তর আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাস শহরে। আমেরিকার প্রতিটি শহরে আমাদের অফিস রয়েছে। পৃথিবীর ১৪টি দেশে আমাদের প্রতিনিধি রয়েছে। ৮টি দেশে অফিস রয়েছে। আমাদের কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৪ জন পিএইচডি গবেষক কাজ করছেন। কোম্পানিতে ৩৫০ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। বাংলাদেশের ২টি এনার্জি ডিষ্ট্রিবিউশান নেটওয়ার্ক আমাদের সাথে যুক্ত হলো। বাংলাদেশও আমাদের অফিস চালু হয়েছে।
বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ১৩৫৬টি বড় বড় কোম্পানি আমাদের কাস্টমার। এর মধ্যে আমরা আমেরিকা এবং পৃথিবীর অন্যান্য কয়েকটি দেশে পুরো বিদ্যুৎ ডিসট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক অটোমেটিক ও স্মার্ট করার কাজ করেছিলাম। ব্রাজিলের পুরো বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ১৩টি বড় কোম্পানির মধ্যে ৫টি কে আমরা স্মার্ট গ্রিডে রূপান্তর করেছি। ব্রাজিলে আমরা স্মার্ট গ্রিড সিটি তৈরি করে দিয়েছিলাম।
আমেরিকান এয়ারলাইনস, কোকাকোলার মতো প্রতিষ্ঠানসহ মোট ৫০ হাজার কোম্পানি গ্রাহক রয়েছে আমাদের। যারা বিদ্যুৎ ছাড়াও আমাদের অন্য সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করছে।
কত মূলধনে এনকেসফট শুরু করলেন? বর্তমানে এর মূলধন কত?
আমেরিকায় পড়াশোনা শেষে ইলেকট্রিক ও তথ্য প্রযুক্তির বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক কোম্পানিতে কনসালটেন্ট হিসেবে চাকরি করেছিলাম। তখন বিদ্যুতের সিস্টেম লস কমানোর বিশেষ একটি সফটওয়ার তৈরি করেছিলাম। পরে ওই সফটওয়্যারটি বিপণনের জন্য ১৯৯৭ সালে ২৫ হাজার ডলার দিয়ে শুরু করি এনকেসফট কোম্পানি। আমিই এর প্রধান প্রতিষ্ঠাতা।
শুরুতে আমার সাথে আমেরিকান আরো ৩জন সহ প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। এক বছরের মধ্যে ৫ মিলিয়ন ডলার আয় হয় সফটওয়ার বিক্রি থেকে। তখন সারা আমেরিকাতে হৈচৈ হয় আমাদের নতুন ইনোভেশনটি নিয়ে। আমাকে নিয়ে আমেরিকার বহু গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল। বর্তমানে এনকেসফটের পরিসম্পদের মূল্য ৪৫০ কোটি বা ৪৫ মিলিয়ন ডলার। বর্তমানে সারা পৃথিবীর আধুনিক বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা স্মার্ট গ্রিড এনকেসফটের দখলে।
স্মার্ট গ্রিড রূপান্তরে কী কাজ করা হয়?
স্মার্ট গ্রিড' হলো একটি ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক। এতে ট্রানমিশন থেকে সাবস্টেশন এবং সাবস্টেশন থেকে কাস্টমার পর্যন্ত বিদ্যুৎ লাইন গুলো যেন ঠিকঠাক মত কাজ করে তা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হয়। এজন্য অনেক ধরনের সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার ব্যবহার করা হয়।
স্মার্ট গ্রিড' চালু করতে প্রধান কাজ হচ্ছে পাওয়ার স্টেশন, সাবস্টেশন, ট্রান্সমিশন লাইন, খুঁটি এবং কাস্টমারদের পৃথক অবস্থানের ভৌগলিক তথ্য বা জিআইএস নির্ণয় করা। পৃথিবীর সেরা জিআইএস নির্ণয়কারী প্রতিষ্ঠান এসরি এর মাধ্যমে বাংলাদেশে যে দুটো কোম্পানির জন্য কাজ করছি তাদের অধীন সকল কাস্টামারসহ সংশ্লিষ্ট সকল কিছুর জিআইএস স্থাপন করছি।
স্মার্ট গ্রিডে অনেক ধরনের সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার সবগুলো একত্রে কাজ করার জন্য প্রয়োজন একটা মেইন ব্রেইন। যাকে এডিএমএস বলে। এডিএমএস এর সাহায্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে সব কিছু রিয়েল টাইম মনিটরিং করা হয়। কোনো ট্রান্সমিশনে কিংবা সাবস্টেশনে সমস্যা হলো কিনা, কোনো লাইন ছিড়ে গেলো কিনা, কোথাও কমবেশি কম লোড হচ্ছে কিনা, কোন স্থানের সমস্যা আছে কিনা, ইত্যাদি আমরা মনিটরিং করবো এডিএমএস এর মাধ্যমে। আর সব ধরনের তথ্য থাকবে ক্লাউড বেইজড ডেটা সেন্টারে। আমাদের অফিস পুরোটা পেপার লেস।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কোম্পানি পল্লী বিদ্যুৎ কে কি আপনারা স্মার্ট গ্রিডে রূপান্তর করতে পারবেন?
হ্যাঁ অবশ্যই। সরকারি বিদ্যুৎ সেবা পল্লী বিদ্যুৎ দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। এখন দেখতে হবে, যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়, তা যেন কোন প্রকার সিস্টেম লস ছাড়া সরাসরি গ্রাহকদের নিকট পৌঁছে যায়। এজন্য পল্লী বিদ্যুৎকে ও অটোমোশানে আসতে হবে।
আমরা বাংলাদেশের পল্লী বিদ্যুৎ এর সাথে কাজ করতে আগ্রহী। তাদের সাথে কাজ করতে পারলে গ্রাহকদের সুবিধা হবে। পাশাপাশি পল্লী বিদ্যুতেরও অনেক খরচ কমে আসবে।
স্মার্ট গ্রিডের জন্য আপনারা বাংলাদেশে নেটওয়ার্ক স্থাপন ছাড়া আর কী কী করছেন?
আমাদের ভবিষ্যৎ প্লান হচ্ছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা পুরো আধুনিক করার। এ বিষয়ে অনেক দক্ষ লোক দরকার। কিন্ত আমরা সেরকম লোক পাবো না। তাই দেশে এরকম জনবল তৈরির জন্য প্রকৌশলীদের নিয়ে একটি বুটক্যাম্প করার প্ল্যান করছি।
আমরা একই জিনিস পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও করছি। লোডশেডিং ছাড়া বিদ্যুতের আর যত সমস্যা আছে তা স্মার্ট গ্রিড এর মাধ্যমে আমরা সমাধান করতে যাচ্ছি। পাশাপাশি দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীকে এ জন্য প্রস্তুত করে তুলতে চাচ্ছি।
এর কারণও আছে, আমাদের অন্যান্য দেশের ক্লায়েন্টদর এরকম অভিজ্ঞ লোকের প্রয়োজন। বিশেষ করে যারা প্রকৌশলী তারা আমাদের থেকে ট্রেনিং নিলে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে আমরা স্কিল জনবল রপ্তানি করতে পারবো।
বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় গিয়ে সারা পৃথিবীতে এত পরিচিতি পেলেন কিভাবে?
এইচএসসি পাশের পর ১৯৮১ সালের শেষ দিকে পেট্রোক্যামিকেল বিষয়ে আন্ডারগ্রাজুয়েট ডিগ্রী নেওয়ার জন্য আমি আমেরিকায় যাই। তবে সেখানে গিয়ে আমি ওকলাহোমা রাজ্যের টেলসা ইউনিভার্সিটিতে বিষয় পরিবর্তন করে ভর্তি হয়েছিলাম ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে। পরে ওই বিষয়ে আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করি।
এরপর কনসালটেন্ট হিসেবে যোগ দিই বিশ্ববিখ্যাত প্রাইস ওয়াটার হাউস কপারস-পিডব্লিউসি এ। সেখান থেকে আমি সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার পর্যন্ত কাজ করেছিলাম। এরপর যোগ দেই বিশ্ববিখ্যাত প্রতিষ্ঠান আইবিএমে। কনসালটেন্ট হিসেবে আমি বিশ্বব্যাপী বহু প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি। এরপর আমি বিদ্যুতের ওই সফটওয়ারটি আবিস্কারের পর ১৯৯৭ সালের দিকে প্রতিষ্ঠা করি এনকেসফট। এভাবেই এখন বিশ্বব্যাপী কাজ করে যাচ্ছি।
বাংলাদেশে আপনার গ্রামের বাড়ি ও পরিবার পরিজন সর্ম্পকে জানতে চাই...
বাংলাদেশে আমাদের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মটবী গ্রামে। স্বাধীনতার আগে মনজুর মোর্শেদ ট্রান্সপোর্ট নামে আমার বাবার একটি বাস কোম্পানি ছিল। ওই কোম্পানির বাসগুলো লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা থেকে চট্টগ্রামের মধ্যে যাতায়াত করতো। সে সুবাধে ছোট বেলা থেকেই আমরা বড় হয়েছিলাম চট্টগ্রামে।
এইচএসসি পাশের পর ১৯৮১ সালে আমেরিকাতে যাই। বাবা ও ভাইয়ের কবর লক্ষ্মীপুরের গ্রামের বাড়িতেই আছে। আমরা ১১ ভাই বোনের বিশাল পরিবার। গ্রামে আমাদের বহু স্বজন রয়েছে। তবে বর্তমানে পরিবারের আমরা ২৮জন আমেরিকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছি। সময় পেলেই গ্রামের বাড়িতে যাই।