পরিবারের কারো সঙ্গে কথা বলছেন না মরিয়মের মা
খুলনার মহেশ্বরপাশায় নিখোঁজ রহিমা বেগমকে গতকাল অক্ষত অবস্থায় ফরিদপুর থেকে উদ্ধার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, তিনি এখনো মেয়ে মরিয়ম বা পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেননি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রহিমা বেগমকে জিজ্ঞেসাবাদ শেষে সাড়ে ১১ টার দিকে এক ব্রিফিংয়ে পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, 'আমরা রহিমাকে আনার পর তেমন কোনো কথা তিনি বলেননি। সকালে তিনি তার পরিবারের সাথেও দেখা করতে চাননি। কী কারণে তিনি এমন করছেন কিছু বুঝতে পারছি না।'
শনিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ফরিদপুরে বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের একটি ঘর থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে পৌনে ১১ টায় খুলনার উদ্দেশ্য রওনা হয় পুলিশ। রাত ২টা ১০ মিনিটে তাকে দৌলতপুর থানায় নিয়ে আসা হয়। ওই রাতেই তাকে রাখা হয় সোনাডাঙায় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে।
সেখানে রোববার সকালে মায়ের সাথে দেখা করতে যান মরিয়ম ও তার ভাই বোনরা। তবে কোন ভাবেই পরিবারের সাথে দেখা করতে রাজি হচ্ছিলেন না তিন।
পরবর্তীতে পুলিশের অনুরোধে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে জানালার কাছে এসে দাঁড়ান রহিমা বেগম। তখন মরিয়ম মা বলে ডাক দিলে তার দিকে কোন ভাবেই তাকাননি, সেখান থেকে হেঁটে চলে যান।
ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে সাড়ে ১০ টার দিকে রহিমা বেগমকে বুঝে নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এখন সেখানেই আছেন তিনি।
রহিমা বেগম আত্মগোপনে ছিলেন নাকি অপহরণ হয়েছিলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, 'রহিমা বেগমের কাছে জামাকাপড় ছিল। ওষুধ ছিল। এটাকে অপহরণ বলা যায় না।'
পুলিশ সুপার আরো বলেন, আমরা এখন রহিমাকে আদালতে সোপর্দ করবে।আদালত যেখানে রাখার নির্দেশ দেয় রহিমাকে সেখানে রাখা হবে।
খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিখোঁজ হন রহিমা। সেসময় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বিল্লাল হাওলাদার ওই বাড়িতে ছিলেন। পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নেমেছিলেন রহিমা।
এ ঘটনায় পরেরদিন অপহরণ মামলা করেন রহিমা বেগমের মেয়ে আদুরী।
রহিমা অপহৃত হয়েছেন দাবি করে ১ সেপ্টেম্বর খুলনায় সংবাদ সম্মেলন করেন পরিবারের সদস্যরা।
রহিমার সঙ্গে জমি নিয়ে স্থানীয়দের মামলা চলছে বলেও সে সময় জানানো হয়েছিল। রহিমার করা সেই মামলায় আসামিরা হলেন প্রতিবেশী মঈন উদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিুকল ইসলাম পলাশ, মোহাম্মাদ জুয়েল ও হেলাল শরীফ।
রহিমা বেগম নিখোঁজের পর তার মেয়ের করা মামলায় তার দ্বিতীয় স্বামী হেলাল হাওলাদার, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, দৌলতপুর মহেশ্বরপশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন, পলাশ ও জুয়েল এবং হেলাল শরীফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা এখন কারাগারে আছেন।
এদের সকলকে ৬ থেকে ১০ আগস্টের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়।
আদালত ১৪ সেপ্টেম্বর রহিমা অপহরণ মামলা পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেয়। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর নথিপত্র বুঝে নেয় পিবিআই।