গ্রামীণ সড়ক জীবনযাত্রাকে সহজ করেছে, এবার তাদের উন্নত করা দরকার
সড়কটি দিয়ে ৩০ বছর আগে সাইকেলে চলাচল করতেন গ্রামীণ পশু চিকিৎসক নজরুল ইসলাম। সুদূরের গ্রামগুলির মধ্যে দিয়ে এঁকেবেঁকে চলে গেছে এই পথ। দুধারে খড়ের ছাউনি ঢাকা মাটির বাড়িঘর। সড়কটিতে তখন শুধু ভ্যান ও সাইকেল চলতো। রিকশা বা মোটরসাইকেলও দেখা যেত কালেভদ্রে। সে দিনগুলো ছিল যেন গ্রামবাংলার আদি-অকৃত্রিম প্রতিচ্ছবি।
অতীতের সাথে প্রকট অমিল বর্তমানের। এই পথ দিয়ে এখন চলে ব্যাটারি চালিত রিকশা, ভটভটি, নসিমন, প্রাইভেট কার আর নির্মাণ সামগ্রীর ট্রাক।
নাটোরের উত্তরা গণভবনের পাশ দিয়ে ঠাকুরলক্ষ্মীকুল হয়ে পাটুল পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার এই রাস্তায় বর্তমানে মোটরসাইকেলে চলাচল করেন নজরুল।
গত ১০ বছর ধরেই এ সড়কে যানবাহনের চাপ বহুগুণ বেড়েছে বলে জানান তিনি।
পুরো রাস্তাও ভরা অগুনতি খানাখন্দে। বিপরীত দিক থেকে আসা দুটি মোটরকারও একসাথে যেতে পারে না। তার ওপর সড়কে যানবাহনের ভিড় বাড়ায়, এককালের নির্মল এই গ্রাম্যপথে এখন যানজট দেখা যায় নিয়মিত। সড়কটিতে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকও রয়েছে প্রচুর। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।
এই সড়কটি দেশজুড়ে নির্মিত ৩.৩৮ লাখ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের গ্রামীণ সড়কের অংশ। যার মাধ্যমে সংযুক্ত করা হয়েছে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন সদরসহ, বাজারহাট ও কৃষি খামার ইত্যাদি গ্রামীণ অর্থনীতির কেন্দ্রকে।
গ্রামীণ সড়কের এই নেটওয়ার্ক প্রধানত গড়ে তোলা হয় ১৯৯০ এর দশকে, যা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকার আর্থ-সামাজিক দৃশ্যপট বদলে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে গত দুই দশক ধরে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সড়কগুলি তৈরি করেছে। রক্ষণাবেক্ষণের ভারও তাদেরই। সরকারি সংস্থাটি বলছে, এসব সড়ক এখন জরুরিভাবে উন্নত করা দরকার, নাহলে আগামীতে দেশের উন্নয়নের পরবর্তী পর্যায়ে এগুলি প্রত্যাশিত অবদান রাখতে পারবে না।
'আমার গ্রাম– আমার শহর' প্রকল্পের পরিচালক মঞ্জুর সাদিক বলেন, দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক বিকাশ ও যোগাযোগ সংযোগের দিকটি মাথায় রেখে এলজিইডি ইতোমধ্যেই গ্রামীণ সড়ক উন্নয়নের একটি পরিকল্পনা ও নীতিমালা প্রস্তুত করেছে।
তিনি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, গ্রামীণ সড়কে যানবাহনের অব্যাহত চাপ বৃদ্ধির বিষয়টি আমলে নিয়েই করা হয়েছে এলজিইডির নতুন সড়ক নকশার মানদণ্ড। এটি অনুসরণ করে, আগামী ২০ বছর ধরে গ্রামীণ সড়কের নকশা ও নির্মাণ করা যাবে।
গ্রামীণ সড়ক প্রবৃদ্ধির নতুন দুয়ার খুলে দেবে
এলজিইডির মতে, বর্তমানে চার শ্রেণির গ্রামীণ সড়ক রয়েছে, এগুলি হলো– উপজেলা সড়ক, ইউনিয়ন সড়ক, গ্রামের অভ্যন্তরীণ সড়ক এবং আন্তঃগ্রাম বা এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে চলাচলের সড়ক।
গ্রামীণ সড়কই হলো- প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে 'প্রথম মাইলে'র সহজ প্রবেশাধিকার। এই সড়ক যুক্ত করে ইউনিয়ন সদর, বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং তারপর মহাসড়কের দুই পাশে গড়ে ওঠা কারখানাকে। এভাবে গ্রামীণ কৃষকদের আয়ের একটি নতুন পথও খুলে দিয়েছে। এটি তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পেতে অবদান রাখে; নিশ্চিত করে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি পাওয়ার সুযোগ।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা ঝালকাঠির ভিমরুলির পেয়ারাচাষি সতিশ হালদারের কথা। বাগান থেকে পেয়ারা সংগ্রহের পর তিনি সেগুলি নৌকায় করে বিক্রির জন্য নিয়ে যান স্থানীয় ভাসমান বাজারে।
'পাঁচ-ছয় বছর আগেও বাজারে বেশি ক্রেতা না আসলে অবশিষ্ট পেয়ারা খালে ফেলে দিতে হতো। কিন্তু, নতুন সড়ক হওয়ায় এখন অনেক ক্রেতাও আসছে, তাই ফলের দামও ভালো পাচ্ছি'- বলেন তিনি।
ভিমরুলির আরেক কৃষক স্বপন কুমার জানান, এখন তিনি তার উৎপাদিত লেবু ঢাকাসহ অন্যান্য বড় শহরে পাঠাতে পারছেন।
দক্ষিণাঞ্চল মৎস সম্পদের প্রাচুর্য, আমড়া ও সুপারির জন্য বিখ্যাত। এখানকার প্রত্যন্ত গ্রামে সড়ক নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ কৃষক এবং জেলেদের জন্য যেমন ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করে; তেমনি দূরবর্তী অঞ্চলে কৃষি সরঞ্জাম পাঠানোর মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
এলজিইডির মতে, যোগাযোগের দিক থেকে প্রথম মাইলের অর্থ হলো– গ্রাম থেকে মূল মহাসড়কে আসার অবকাঠামোগত ও মানসিক চ্যালেঞ্জ। গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা মানসিক বাধা দূর করে কৃষকদের আরও দুই-তিন কিলোমিটার হেঁটে প্রধান সড়ক পর্যন্ত আসতে উৎসাহিত করে।
মৎস সম্পদের সরকারি তথ্যানুসারে, গ্রামগঞ্জের হ্যাচারিগুলোর সুবাদে গত ১০ বছরে দেশে মাছের উৎপাদন ৭০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে উৎপাদিত হয় ৪৬ লাখ টন মাছ, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে যা ছিল ২৭ লাখ টন। পোলট্রি শিল্পের বিকাশও হয়েছে দ্রুত গতিতে, যার কল্যাণে দশ বছর আগের ৩৬.২০ লাখ টনের তুলনায় মাংসের বার্ষিক উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২.৬৫ লাখ টনে।
প্রথম মাইলের সংযোগ কৃষিকাজের বাইরের অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিকাশেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। ফলে যেসব স্বল্প আয়ের যেসব মানুষ আগে শুধু কৃষিকাজের ওপরই নির্ভরশীল ছিলেন, তারা এখন অন্যখাতেও আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন।
এই সংযোগ সহজ করেছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সেবা পাওয়ার সুবিধা। কাজে যেতে এখন ক্লান্তিকর যাত্রা করতে হয় না গ্রামীণ শিক্ষক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের। ছাত্র ও রোগীদের জন্যেও এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে নিকটবর্তী হয়েছে বিদ্যালয় ও হাসপাতাল। দলবেঁধে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার দৃশ্য তাই গ্রামীণ এলাকার অগ্রগতির সবথেকে অনবদ্য প্রতীক।
দানকরা জমিতেই তৈরি হয়েছে সড়ক নেটওয়ার্ক
প্রতিটি দেশেই সড়ক নির্মাণের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও প্রতিবন্ধকতার জায়গা হলো– ভূমি অধিগ্রহণ। কিন্তু, দেশজুড়ে এলজিইডির ৩.৫ লাখ কিলোমিটার কাঁচা ও পাকা গ্রামীণ সড়কের নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের দান করা জমিতে।
এলজিইডি কর্মকর্তারা জানান, ১৯৮০ ও ১৯৯০ এর দশকে জনগণকে সড়কের জন্য জমি দান করতে উৎসাহিত করা হয়, এতে সাড়া মেলায় ভূমি অধিগ্রহণের দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া অনেকটাই এড়ানো যায়। স্থানীয়রা এখন তারই সুফল এখন পাচ্ছেন ।
দান করা জমিতে ন্যূনতম খরচে দ্রুত সড়ক নির্মাণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। তবে এটি করতে গিয়ে অনেকক্ষেত্রেই মাপজোঁকের তারতম্য হয়েছে। ভূমি প্রাপ্তির সাপেক্ষে কিছুক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকগুলিতেও ছাড় দিতে হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।
তবে তারা বলেছেন, সামাজিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে এত বড় সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা বিশ্বের মধ্যে অনন্য ও নজিরবিহীন এক অর্জন।
তবে কর্তৃপক্ষটি বর্তমানে সড়কের প্রশস্ততা বাড়াতে আরও জমি অধিগ্রহণ করছে। এলজিএইডির নতুন নীতিমালার আওতায়, এর মাধ্যমে বেশি সংখ্যক ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে এমন আঁকাবাঁকা সড়ক পরিবর্তন করে সোজা করা হবে। নতুন সড়কগুলিকে সোজাসুজি রাখা ও মাপজোঁকের মান অনুযায়ী নির্মাণকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
এলজিইডির সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. নুরুল্লাহ জানান, অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলির সাথে যুক্ত করতে ১৯৮০'র দশকে দেশব্যাপী ব্যাপক ভিত্তিতে গ্রামীণ সড়ক অবকাঠামো গড়ে তোলা শুরু হয়। উন্নয়নের সেই নীতিমালা ৮০'র দশক এবং তারপরের সময়ের চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট ছিল।
'কিন্তু, বিগত কয়েক দশকে ব্যাপক আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন এসেছে। যেকারণে এখন এসব অবকাঠামোর সমন্বিত ভৌত পরিকল্পনা করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে '।
নতুন পরিকল্পনায় সড়কের ব্যবহার, ট্রাফিক লোড, মাটির ধরন ও রাস্তার শ্রেণি বিবেচনা করে গ্রামীণ রাস্তার নকশা এবং পুরুত্বের উপর জোর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
অর্থনীতিবিদ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, গ্রামীণ সড়কগুলো প্রধান শহরাঞ্চলে যানবাহন চলাচলের ফিডার রোড (সংযোগকারী সড়ক) হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল। তখন এ সড়ক নেটওয়ার্কের প্রধান লক্ষ্যই ছিল গ্রামগুলোকে শহরের সাথে যুক্ত করা।
'কিন্তু, দেশের প্রত্যন্ত জেলাগুলোয় অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ অন্যান্য শিল্প গড়ে উঠতে থাকায় গ্রামগুলিতে এখন ব্যাপক নগরায়ন হচ্ছে। তাই ভবিষ্যতে আমাদের গ্রামীণ রাস্তাগুলিকে সমন্বিত সড়ক নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করতে হবে'- দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন তিনি।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, সমন্বিত সড়ক নেটওয়ার্কের পরিকল্পনা করতে হবে এবং প্রয়োজন অনুসারে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। একটি সুপরিকল্পিত যোগাযোগ নেটওয়ার্ক না থাকলে, এলোমেলোভাবে জমি অধিগ্রহণে কৃষি উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সড়কে অতিরিক্ত চাপ, পথচারীরা বিপন্ন
বন্দর নগরী চট্টগ্রাম যেতে দক্ষিণাঞ্চলের ভোলা ও বরিশাল জেলার মানুষ লক্ষ্মীপুরের মোতিরহাট-তোরাবগঞ্জ সড়কটি ব্যবহার করেন।
এই পথে নিয়মিত চলাচলকারীরা জানান, ইউনিয়ন পর্যায়ের সড়কটি ৮.৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের, আর চওড়া মাত্র ১২ ফুট। অথচ, একটি জাতীয় মহাসড়কের মতো এটিকে যানবাহনের চাপ সামলাতে হচ্ছে।
সাম্প্রতিক এক গণনায় দেখা গেছে, মাত্র আধা ঘণ্টায় এই সড়কে ২০৫টি ছোট, মাঝারি ও ভারী যানবাহন চলাচল করেছে। তাছাড়া, সড়কে ছিল শত শত পায়ে হেঁটে চলাচলকারী।
সরু রাস্তা ধরে কোনো তিন চাকার যান আসলেই, কোনোরকমে পাশে সরে দিয়ে সাইড দিতে হচ্ছে পথচারীকে। আবার দুই দিক থেকে দুটি ভারী যান আসলে, তাদের উভয়কেই প্রথমে থমকে দাঁড়াতে হয়, এরপর ধীরে ধীরে একে-অপরকে পাশ কাটায়।
স্থানীয়রা জানান, গত ১০ বছরে এই রুটে যানবাহনের চাপ তিনগুণ বেড়েছে। ভারী যানজটের চাপে উঠে গেছে রাস্তার পিচ, তৈরি হয়েছে অসংখ্য ফাটল ও খানাখন্দ। এই সড়ক উন্নয়ন দূরে থাক সংস্কারের কাজই হয়নি অনেক বছর।
স্থানীয় উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল আনোয়ার জানান, বর্তমানে সড়কটি প্রশস্ত করার কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে পরবর্তী মেরামত কাজের সময় যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের দিকটি মাথায় রেখে পিচের পুরুত্ব বাড়ানো হবে।
এলজিইডির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পরিকল্পনা) জসিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কগুলিকে প্রতিদিন ৫ শতাধিক বাণিজ্যিক যানবাহন চলাচলের উপযোগী করতে ডাবল লেনে উন্নীত করার কাজ করছে অধিদপ্তর। দেশে এ ধরনের প্রায় ৩০ হাজার কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। অগ্রাধিকার অনুযায়ী এসব রাস্তাকে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে বলে টিবিএসকে জানান তিনি।
এলজিইডি কর্মকর্তারা বলছেন যে, তারা এখন জলবায়ু সহনশীল গ্রামীণ সড়ক নেটওয়ার্কের উপর জোর দিচ্ছেন। এজন্য উপকূলীয় অঞ্চলের গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে বিভিন্ন নকশায়।
ব্যস্ত সড়কগুলির জন্য বাস বে এবং এবং যাত্রী ছাউনি নির্মাণের পরিকল্পনাও করছে এলজিইডি। এছাড়া, সড়ক নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন পয়েন্টে স্পিড লিমিটার, ট্রাফিক সাইন ও রোড মার্কিং বসানো হচ্ছে।
ভবিষ্যৎ অবদান কেমন হবে?
স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে স্বল্প-মধ্য আয়ের দেশে উত্তরণ হতে চলেছে বাংলাদেশের। এই বাস্তবতায় গ্রামীণ সড়ক কাঠামোয় আমূল উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
তাই এসব পথে যানবাহনের বাড়তি চাপ সামলাতে আগের 'গ্রামীণ সংযোগ' ধারণা থেকে সরে এসে সম্প্রতি 'গ্রামীণ পরিবহন' কনসেপট গ্রহণ করেছে এলজিইডি।
এলজিইডি কর্মকর্তারা জানান, জ্যামিতিক মান অনুসরণ করে উপজেলার সড়কগুলোকে ধীরে ধীরে দুই লেনের সড়কে উন্নীত করা হচ্ছে। পাশাপাশি শিল্প এলাকা, অর্থনৈতিক অঞ্চল, স্থলবন্দর, পাওয়ার প্লান্ট এবং পর্যটন কেন্দ্রের সংযোগ সড়ককে উন্নত করা হচ্ছে।
গ্রামের রাস্তার জন্য বর্তমানে কোনো জমি অধিগ্রহণের কথা ভাবা হচ্ছে না। এর পরিবর্তে, 'আমার গ্রাম - আমার শহর' প্রকল্পে নতুন জমি ছাড়াই গ্রামের রাস্তার দুই পাশে প্রশস্ত পাড়/বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব বাঁধে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় গাছ লাগানো হবে। এই কর্মসূচির সুফল জমির মালিক, সড়ক ও গাছ রক্ষণাবেক্ষণকারীদের মধ্যে বিলিবিতরণের ব্যবস্থা করবে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ।
কর্মকর্তারা জানান, এলজিইডির বর্তমানে পাঁচটি সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প রয়েছে। এরমধ্যে দুটিতে অর্থায়ন করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বিশ্বব্যাংক। দাতা সংস্থাদ্বয়ের আরও দুটি প্রজেক্ট পাইপলাইনে আছে।
[প্রতিবেদনটি তৈরিতে অবদান রেখেছেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি সানা উল্লাহ সানু, রাজশাহী প্রতিনিধি বুলবুল হাবিব এবং বরিশাল প্রতিনিধি এম জহিরুল ইসলাম জুয়েল।]