ঝড়ের রাতে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় হাসপাতালে ৭ শিশুর জন্ম
সোমবার ভোর থেকেই বৃষ্টির সাথে ঝড়ো হাওয়া। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পুরো বাগেরহাট জেলা। বিদ্যুৎ না থাকায় ভূতুরে পরিবেশ সৃষ্টি হয় শহর ও গ্রামে। এরই মাঝে সন্ধ্যা থেকে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সন্তানসম্ভবা মায়েরা আসতে শুরু করেন।
গভীর রাত পর্যন্ত ৮জন সন্তানসম্ভবা নারী আসেন এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ঝড়ের রাতে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থাতেই সেবা দেন হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক, মিডওয়াইফ ও সেবিকারা। আপ্রাণ চেষ্টায় রাত তিনটা পর্যন্ত সাতজনকে নরমাল ডেলিভারি করাতে সক্ষম হন তারা।
তবে শারীরিক জটিলতা থাকায় ভোর চারটার দিকে সোনিয়া নামের এক সন্তানসম্ভবা মাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা।
মায়েরা সবাই এখন সুস্থ আছেন। ঝড়ের রাতে এমন সেবা পেয়ে খুশি প্রসূতি মা ও তাদের স্বজনরা।
ঝড়ের রাতে সন্তান জন্ম দেওয়া মা শাহনাজ বেগম বলেন, রাতে ব্যাথা বাড়লে খুব ভয় পেয়েছিলাম। ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে কোথায় যাব, কী করব এই ভেবে। পরে অনেক কষ্ট করে হাসপাতালে গেলাম। হাসপাতালের ডাক্তারদের আন্তরিকতায় আমরা খুব খুশি হয়েছি।
এ রাতে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শাহীন, মেডিকেল অফিসার ডাঃ নুরজাহান নিশাত, মিডওয়াইফ আয়শাসহ সেবিকা ও অন্যান্য কর্মচারীরা দায়িত্ব পালন করেছেন।
মেডিকেল অফিসার ডাঃ নুরজাহান নিশাত বলেন, অন্যান্য দিনের মত স্বাভাবিকভাবেই প্রসূতি মায়েদের সেবা প্রদান করেছি। আমাদের বিদ্যুৎ ছিল না, ওই রাতে জরুরী সিজার করার মতো অবস্থা আমাদের ছিল না।
"তাই আমরা চেষ্টা করেছি মায়েদের সুস্থ্য রেখে স্বাভাবিক সন্তান প্রসব নিশ্চিত করতে। সকলের সহযোগিতায় সাত জন মাকে এখানে নরমাল ডেলিভারি করিয়েছে।"
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শাহীন জানান, হাসপাতালে বিদ্যুৎ ছিলনা। আবোর জেনারেটরেও তেল ছিলনা।
"তারপরও সবাই মিলে সাত প্রসূতি মায়ের নরমাল ডেলিভারি নিশ্চিত করেছি। ওই রাতে দায়িত্ব পালন করা সবাই খুবই আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছে।"