সিলেটে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর: বিএনপির ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সিলেটে বিএনপি নেতা আ ফ ম কামাল হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুরের ঘটনায় দলটির ২৫০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) রাতে মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য জাহিদ সারওয়ার সবুজ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ২৫০ জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের তথ্য নিশ্চিত করে বুধবার দুপুরে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের আগেই ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার দিনের বেলা তাদের আটক করা হয়েছে। এরপর মঙ্গলবার বিকেলে তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। এখন এই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে।" এছাড়া, ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন ইশতিয়াক আহমদ রাজু, বদরুল ইসলাম নজরুল, মিলাদ আহমদ ও রাজীব আহমদ। তারা সবাই ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে জানা গেছে।
গত রোববার (৬ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে নগরীর বড়বাজার এলাকায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুন হন জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আ ফ ম কামাল। এ হত্যাকান্ডের পর রোববার রাত ১১ টার দিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় লাঠিসোটা নিয়ে এই মিছিলে অংশ নেন অনেকে।
সিলেট জেলা ও আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভা উপলক্ষ্যে নগরীর বিভিন্ন স্থানে নির্মিত তোরণ ও ব্যানার-ফেস্টুন ভাঙচুর করা হয় বিএনপির এই মিছিল থেকে। এছাড়া সিলেট জেলা ও আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভাস্থল রিকাবীবাজার এলাকার কবি নজরুল অডিটরিয়ামে নির্মিত বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিসম্বলিত বিলবোর্ড ভাঙচুর করা হয়।
বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুরের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্রদলকে ধাওয়া দেন এবং দু'পক্ষের মাঝে বেশ কয়েকবার ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে দ্রুত কোতোয়ালি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মহানগরের কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করা হয়।
জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, "কামাল হত্যার পর নগরে যেসব ঘটনা ঘটেছে তার সাথে বিএনপির কেউ জড়িত নয়। আমাদের নেতা মারা যাওয়ায় দলের সবাই মর্মাহত। এ অবস্থায় কেবল হয়রানির জন্য এই মামলা দেয়া হয়েছে।"
এদিকে কামাল হত্যার ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে তার ভাই ময়নুল হক বাদি হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে নগরের বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় পুলিশ এ পর্যন্ত একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।