কৃষি রপ্তানি বাড়াতে বাংলাদেশে ফুড ইরেডিয়েশন কেন্দ্র প্রয়োজন: উদ্যোক্তারা
ফসল সংগ্রহ-পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি (পোস্ট হার্ভেস্ট লস) কমিয়ে কৃষি পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি ও ফসল জীবাণুমুক্ত করতে বিশ্বব্যাপী ফুড ইরেডিয়েশন বা খাদ্য বিকিরণ প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার হলেও বাংলাদেশে এর ব্যবহার একেবারেই তলানিতে। ফলে কৃষিপণ্য রপ্তানি প্রতিযোগীতায় পিছিয়ে পড়ছে দেশ। শনিবার (১২ নভেম্বর) ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে এ কথা বলেন উদ্যোক্তারা।
রাজধানীতে লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জিবি কর্পোরেশন লন্ডন লিমিটেড আয়োজিত ওই সেমিনারে উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে খাদ্য বিকিরণ কেন্দ্র (ফুড ইরেডিয়েশন সেন্টার) তৈরিতে বিনিয়োগ ও এটি স্থাপনের অনুমতি সহজ করার আহ্বান জানান।
প্রাণ গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক নাসের আহমেদ বলেন, "বিভিন্ন দেশ কৃষিপণ্য আমদানির পূর্বেই শর্ত দেয়, এই প্রযুক্তিতে পণ্য জীবাণুমুক্ত করার। বাণিজ্যিকভাবে এটি বাংলাদেশে করা যাচ্ছে না বলে আমাদের রপ্তানিও কম হচ্ছে।"
সেমিনারের বক্তারা বলেন, মশলা, বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত খাবার, আলু, আম, পেয়াজে, পশুখাদ্যে এই প্রযুক্তির বহুল ব্যবহার রয়েছে। পার্শবর্তী দেশ ভারতসহ অনেকে দেশই এটি ব্যবহার করছে। খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি মেডিকেল ইকুইপমেন্ট জীবণুমুক্ত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে ইরেডিয়েশন সেন্টার না থাকার কারণে বাড়তি খরচ করে চীন, ভিয়েতনাম, ভারত, কোরিয়া, জাপান থেকে এসব জিনিস জীবাণুমুক্ত করে আনতে হচ্ছে।
জেএমআই গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, "আমাদের অনেক খরচ করতে হচ্ছে বাইরে থেকে এই প্রযুক্তির সহায়তা নিতে। কারণ মেডিকেল ইকুইপমেন্টগুলো এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেই জীবাণুমুক্ত করতে হয়। বাংলাদেশে এই প্রযুক্তির বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য সরকারের উদ্যোগ এবং সমর্থন প্রয়োজন।"
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, "আমরা আমাদের রপ্তানি বাড়ানোর জন্য কাজ করছি। এখন এই ইরেডিয়েশন সেন্টার স্থাপনের জন্য উদ্যোক্তাদের সরকারের পক্ষ থেকে যত ধরনের সহযোগীতা প্রয়োজন, তা দেওয়া হবে।"
সংশ্লিষ্টরা জানান, একটি ইরেডিয়েশন সেন্টার তৈরির জন্য ১০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রয়োজন।
রাজধানীর সাভারে বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি কমিশনের দুটি ইরেডিয়েশন সেন্টার রয়েছে। কিন্তু এগুলো সাধারণত গবেষণার কাজেই ব্যবহার করা হয়।
জিবি কর্পোরেশন লন্ডন লিমিটেড আয়োজিত অনুষ্ঠানে আইবিএ লাইফ সায়েন্স ইরেডিয়েশন সেন্টারের এক্স-রে এবং ইলেকট্রন বিম নামের দুটি প্রযুক্তির বিষয়ে জানায়। বিশ্বব্যাপী ইরেডিয়েশন সেন্টারে প্রযুক্তি দুটির ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে। এই দুটি প্রযুক্তি পরিবেশবান্ধব বলেও জানানো হয় অনুষ্ঠানে।