১৯.৯২ শতাংশ বাড়লো পাইকারি বিদ্যুতের দাম
পাইকারি (বাল্ক) বিদ্যুতের দাম ১৯.৯২ শতাংশ বাড়িয়ে কিলোওয়াট ঘণ্টায় ৬.২০ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। আগে এই দাম ছিল প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টায় ৫.১৭ টাকা।
আজ সোমবার (২১ নভেম্বর) ভার্চুয়ালি নতুন দাম ঘোষণা করেন বিইআরসি'র চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল জলিল। আগামী মাস (ডিসেম্বর) থেকে নতুন এই দাম কার্যকর হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে, ইতোমধ্যেই নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে চাপের মধ্যে থাকা মানুষেরা বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে আরও দুর্দশায় পড়বেন বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদরা।
সূত্র বলছে, ঋণের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দেওয়া শর্তগুলোর মধ্যে একটি হল বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভর্তুকি কমানো; আর সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই বাড়ানো হয়েছে বাল্ক বিদ্যুতের দাম। যদিও মাত্র ৩৮ দিন আগেই বিইআরসি এমন পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছিল।
এর আগে, ঢাকা সফরে আসা আইএমএফের প্রতিনিধিদল গেল ২ নভেম্বর পিডিবি ও বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে এবং ৬ নভেম্বর বিইআরসি'র সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে বিদ্যুতের দাম, ভর্তুকি এবং পিডিবির লোকসান নিয়ে আলোচনা হয়।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) বাল্ক বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করে। কোম্পানি প্রায় ৬৬ শতাংশ দাম বৃদ্ধির সুপারিশ করেছিল। তাদের প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি হয় গত ১৮ মে।
শুনানিতে বিইআরসির কারিগরি কমিটি ৫৮ শতাংশ দাম বাড়ানোর সুপারিশ করে। প্রায় ৫ মাস পর, গত ১৩ অক্টোবর এক ঘোষণায় বিইআরসি জানায়, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং পিডিবি কোনো যৌক্তিক কারণ দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় আবেদনটি খারিজ করা হয়েছে।
তবে আগের প্রস্তাবে যে বিষয়গুলো অস্পষ্ট ছিল, সে বিষয়ে পিডিবি প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা ও তথ্য দিয়েছে বলে জানান বিইআরসি সদস্য (বিদ্যুৎ) বজলুর রহমান।
তিনি আরও বলেন, পিডিবির প্রস্তাবিত হারে না হলেও বাল্ক বা পাইকারি দাম বাড়ানো হচ্ছে।
পাইকারি দাম বাড়ার খবরে ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে বলেছে বিতরণ কোম্পানিগুলোও।
ছয়টি বিতরণ কোম্পানির প্রস্তাব শুনে নতুন দাম ঘোষণা করবে বিইআরসি।
সর্বশেষ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিইআরসি ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের পাইকারি মূল্য নির্ধারণ করেছিল ৫.১৭ টাকা। বর্তমানে পিডিবি প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যয় করছে ১৪ থেকে ১৫ টাকা। তাই দিন দিন কোম্পানির লোকসান বাড়ছে।
পিডিবির মতে, ২০২০-২১ অর্থবছরে তাদের ১১ হাজার ৫০৯ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে লোকসান ছাড়িয়েছে ৩১ হাজার কোটি টাকা। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি অর্থবছরে (২০২২-২৩) লোকসানের পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।