জমি ব্যবহারে দক্ষতা বাড়িয়ে গমের উৎপাদন ১৪% বৃদ্ধি করা সম্ভব: গবেষণা
প্রযুক্তিগত সক্ষমতা এবং জমি ব্যবহারে দক্ষতা বাড়িয়ে একই পরিমাণ জমি চাষ করে গমের উৎপাদন ১৪.২ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ৬ষ্ঠ সানেম বার্ষিক অর্থনীতিবিদ সম্মেলনে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক সৌরভ মোহন সাহা 'ল্যান্ড ইউটিলাইজেশন ইন উইট প্রোডাকশন অফ বাংলাদেশ: হোয়াট অ্যাফেক্টস ফার্মার্স এফিশিয়েন্সি?' শীর্ষক গবেষণাটি উপস্থাপন করেন।
গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশে গম দ্বিতীয় প্রধান খাদ্যশস্য। অথচ প্রতিনিয়ত চাহিদা বাড়লেও গমের উৎপাদন কমেছে। নির্ভরশীল হতে হচ্ছে আমদানির ওপর। এর প্রধান কারণ হলো, গম চাষ করে কৃষকরা খুব বেশি লাভবান হতে পারেন না।
একইসঙ্গে, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা এবং জমি ব্যবহারে দক্ষতায় রয়েছে বড় ধরনের ঘাটতি। তবে গম উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি খরচ করতে হয় সার এবং শ্রমিকের পেছনে। একই জমিতে একই পরিমাণ খরচ করে দক্ষতার সঙ্গে তা ব্যবহার করা গেলে, গমের উৎপাদন ১৪.২ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব হবে বলে উল্লেখ করা হয় গবেষণায়।
গবেষণার জন্য পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাওয়ের ১৬০ জন কৃষকের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন গবেষক। কারণ হিসেবে ২০২১ সালের বিবিএসের তথ্য তুলে ধরে গবেষক জানান, এ দুটি অঞ্চল থেকে দেশের সর্বোচ্চ পরিমাণ গম উৎপাদিত হয়, যার পরিমাণ ২২.৪ শতাংশ।
গবেষক সৌরভ মোহন সাহা বলেন, "প্রতিনিয়তই চাষের উপযোগী জমি কমছে। এরমধ্যে গম থেকে ভালো লাভ না আসায় কৃষকরা এটি বাদ দিয়ে, বোরো ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।"
তিনি বলেন, গম চাষে লোকসানের কারণে পরিবারের আয়ও কমে যায়। যার প্রভাব পড়ে তাদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ওপরেও।
কৃষকদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য সমবায়, এনজিও, সম্প্রসারণ অফিস ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের সাংগঠনিক সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে জমি চাষ ও সম্পদ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে তাদেরকে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় আনতে হবে বলে উল্লেখ করেন গবেষক।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে গমের চাহিদা রয়েছে প্রতি বছর ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টন। এরমধ্যে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হয় মাত্র ১০ থেকে ১২ লাখ টন। বাকিটা বিদেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে চাহিদা মেটানো হয়।