সংবাদপত্রের উপর শুল্ক-ট্যাক্স তুলে নেওয়ার আহ্বান নোয়াবের
সংবাদপত্র শিল্পের নিউজপ্রিন্ট আমদানির শুল্ক প্রত্যাহার ও অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স (এআইটি) বাতিলের দাবি জানিয়েছে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের নতুন ভবনে ন্যাশনাল বোর্ড অব রেভিনিউ (এনবিআর) কর্তৃক আয়োজিত প্রাক বাজেট আলোচনায় নোয়াবের পক্ষ থেকে এ দাবি উপস্থাপন করা হয়।
আলোচনায় নোয়াবের সভাপতি একে আজাদ বলেন, "সংবাদপত্র শিল্পের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে কর প্রত্যাহার করা খুবই জরুরি।"
নিউজপ্রিন্ট আমদানিতে ৫% শুল্ক, ১৫% ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স (ভ্যাট) ও ৫% অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স (এআইটি) দিতে হয় সংবাদপত্র শিল্পকে।
কাঁচামাল আমদানি পর্যায়ে আলোচ্য এআইটি ছাড়াও বিজ্ঞাপন আয়ের উপর ৪% ট্যাক্স ডিডাকশন অ্যাট সোর্স (টিডিএস) – অর্থাৎ এআইটি ও টিডিএস মিলিয়ে ৯% হয়ে যায়।
নোয়াবের পক্ষ থেকে বলা হয়, বেশিরভাগ সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠানের ৯ শতাংশ লভ্যাংশই থাকে না। এই আয়কর বছর শেষে প্রদেয় আয়করের সঙ্গে সমন্বয় করা করা সম্ভব হচ্ছে না।
ফলে সরকারের কাছে প্রতিষ্ঠানের অগ্রিম প্রদত্ত কর পাওনা হিসেবে থেকে যাচ্ছে। তাই এটি প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
এছাড়া সংবাদপত্রের কর্পোরেট ট্যাক্স বিদ্যমান ২৭.৫% থেকে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা, কর্মীর আয়কর প্রতিষ্ঠানের উপর না চাপানোর দাবিও জানানো হয়।
অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (এটিসিও) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকবাল সোবহান চৌধুরি বলেন, "দুই থেকে তিনটি টেলিভিশন বাদে কেউই মুনাফা করতে পারেন না। অথচ ট্যাক্সম্যানদের অসহযোগিতা ও অযৌক্তিক দাবির কারণে কর্তিত সোর্স ট্যাক্স পরবর্তীতে ফেরত পাওয়া যায় না। এ জন্য এই ট্যাক্স বাতিল করা উচিত।"
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনীম। করদাতাদের প্রাপ্য টাকা ফেরতের আশ্বাস দেন তিনি।
তিনি বলেন, "সমন্বয় নয়, এখন থেকে অ্যাডভান্স ট্যাক্সের টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রিফান্ড না পেলে কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন করুন। সেখানে না পেলে সরাসরি আমাদের কাছে বলুন।"
তিনি বলেন, "রিফান্ড দেওয়ার প্র্যাকটিস না হলে কর দেওয়ার কালচারও তৈরি হবে না।"
এ সময় ইকবাল সোবহান চৌধুরি বলেন, "ট্যাক্সপেয়ার সময়মত ট্যাক্স না দিলে যেমন জরিমানা করা হয়, একইভাবে এনবিআর সময়মত রিফান্ড না দিলেও জরিমানা থাকা উচিত।"
এছাড়া করদাতাদের হয়রানি বন্ধ করা এবং যারা ভালো করদাতা, তাদের ফ্যাসিলিটি বাড়ানোর তাগিদ দেন তিনি।
আলোচনায় নোয়াবের সদস্য এবং ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, প্রথম আলোর প্রকাশক ও সম্পাদক মতিউর রহমান, নোয়াবের কোষাধ্যক্ষ মতিউর রহমান চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ট্যাক্স ভীতি এবং করদাতাদের হয়রানির প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ট্যাক্স ভীতি দূর না হলে ট্যাক্স নেট বাড়বে না।
"অডিট ট্যাক্স ভীতির কারণ," যোগ করেন তিনি।
অডিটের এই ভীতি দূর করতে এনবিআর ম্যানুয়াল তৈরি করছে জানিয়ে তিনি বলেন, "যে ম্যানুয়াল হচ্ছে, তাতে অডিটে ভীতি তৈরি করবে না। সেকেন্ডারি ডাটা, প্রমাণ হাতে পাওয়ার পর অডিট করা হবে।"