তথ্যমন্ত্রী, বিএসএমএমইউ উপাচার্যের ক্যাডাভেরিক অঙ্গদানের অঙ্গীকার
দেশের প্রথম ক্যাডাভেরিক অঙ্গদাতা সারাহ ইসলামের নামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) 'সারাহ ইসলাম ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট সেল' এর উদ্বোধন করা হয়েছে।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে এর উদ্বোধন করেন বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ ও সারাহ ইসলামের মা শবনম সুলতানা।
এদিকে আজ সোমবার সকালে ব্রেন ডেথ রোগী হিসেবে দেশের প্রথম ক্যাডাভেরিক সারাহ ইসলামের অঙ্গ অন্য চারজন রোগীর দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ ডা. মিলন হলে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাননীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট কমিটির চেয়ারম্যান ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, "সারা ইসলামের পথ ধরে অনেকেই ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ক্যাডাভেরিক অঙ্গদানে এগিয়ে আসবেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদও ক্যাডাভেরিক অঙ্গদানের অঙ্গীকার করেছেন। ভবিষ্যতেও আমি নিজেও এ ধরণের মহতী কার্যক্রমে যাতে অংশ নিতে পারি সেটা আমার বিবেচনায় রয়েছে।"
অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, "একজন ব্রেন ডেথ মানুষের দেওয়া অঙ্গগুলোর মাধ্যমে মোট আটজন মানুষের জীবন রক্ষা করা সম্ভব। দুটি কিডনি, দুটি ফুসফুস, একটি হৃদযন্ত্র, একটি অগ্ন্যাশয়, পূর্ণাঙ্গ অন্ত্রনালি এবং যকৃৎ। উন্নত দেশগুলোয় অনেক আগে থেকে ব্রেন ডেথ রোগীর শরীর থেকে অঙ্গগুলো সংগ্রহ করে অন্যের জীবন রক্ষা করার কাজ প্রচলিত আছে।"
তিনি আরো বলেন, "বাংলাদেশের ইতিহাসে সারাহ ইসলামই প্রথম ব্যক্তি, যিনি ব্রেন ডেথ থেকে মৃত্যুর আগে নিজের অঙ্গ দান করে চারজন মানুষের জীবনে আশা জাগিয়ে গেলেন। সারাহ ইসলামের দিয়ে যাওয়া উপহার সবচেয়ে দামি উপহার। একজন মানুষ কতটুকু মহান হলে এই কাজ করতে পারেন! সারাহ তা দেখিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে মৃত্যুকে পরাজিত করা যায়। মৃত্যুর পরও সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকা যায়।"
উল্লেখ্য, গত ১৮ জানুয়ারি দিবাগত রাতে সারাহ ইসলামের ব্রেন ডেথ হওয়ার পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাডাভেরিক সেলের আহ্বায়ক ও রেনাল ট্রান্সপ্লান্টেশনের অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলালের নেতৃত্বে তার দুটি কিডনি বের করে প্রতিস্থাপন করা হয়।
পরে সারাহ ইসলামের কর্নিয়া দুটিও সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়।