ইফতার কিনতে চকবাজারে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়, দাম নিয়ে অসন্তুষ্টি
জুমার নামাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই চকবাজারের ইফতার মার্কেটে দোকান খোলা শুরু করে, সেই সাথে বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় তৈরি হয়।
তবে এ বছর ইফতারের দাম কিছুটা বাড়ায় ক্রেতাদের মধ্যে কিছুটা অসন্তুষ্টি ছিল।
পুরান ঢাকার বাসিন্দা মো সায়মন বলেন, 'বাসায় আমাদের ইফতারি বানানো হয়। তারপরও আমরা বাইরে থেকে ইফতার নেই কারণ এটা আমাদের একটি রেওয়াজ। ইফতারে ধনী বা গরীব যে হোক না কেন, খাবার টেবিল সর্বোচ্চ ভরিয়ে তোলার চেষ্টা করি আমরা।'
তবে এ বছর ইফতারের দাম অনেকটাই বাড়তি। ফলে অনেকেরই কেনার পরিমাণ কমে গেছে, তিনি যোগ করেন।
পুরান ঢাকার আরেক বাসিন্দা আইয়ুব আলী বলেন, 'বাসায় ইফতার বানানো হলেও বাইরে থেকে ইফতার না নিলে, মনে হয় কিছু একটা অসম্পূর্ণ থেকে গেল। তবে এ বছর ইফতারের দাম বেশি থাকায় একটু কম কম কিনছি।'
ধানমন্ডি থেকে চকবাজারে ইফতার কিনতে আসা আসা সোহরাব উদ্দিন বলেন, 'পুরান ঢাকার ইফতারিতে আলাদা একটা আকর্ষণ আছে। এজন্য প্রথম রোজায় এখান থেকে ইফতার নিতে এসেছি। এখানকার কাবাবের স্বাদ অন্য যে কোন এলাকার থেকে ভিন্ন। এছাড়া এখানকার বড় বাপের পোলা খায়, খাবারটির বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে।'
তবে এবার ইফতার পণ্যের দাম অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা, তিনি যোগ করেন।
ব্যবসায়ীদের মতে, নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম বাড়ার কারণেই বেড়েছে ইফতার সামগ্রীর দাম।
ব্যবসায়ী মোস্তাকিম বলেন, এবছর সকল নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে বিগত যেকোনো সময়ের থেকে কয়েকগুণ। তাই আমাদেরও দাম বাড়াতে হয়েছে।
আরেকজন ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম জানান, গরু ও খাসির মাংসের তৈরি ইফতারি পণ্য ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে গত বছরের তুলনায়। মুরগি ও অন্যান্য ইফতারি ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
চকবাজারের ইফতারির মধ্যে উল্লেখযোগ্য- শাহী পরোটা, আস্ত মুরগির কাবাব, গরুর সুতি কাবাব, বটিকাবাব, টিকাকাবাব, চিকেন কাঠি, শামিকাবাব, শিকের ভারী কাবাব, সুতিকাবাব, জিলাপি, শাহী জিলাপি, হালিম, দইবড়া, কাশ্মীরি সরবত, খাসির পায়া এবং সব থেকে আকর্ষণীয় ও মজাদার খাবার 'বড়বাপের পোলায় খায়'।
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শাহী পরোটার দাম ৬০ থেকে ১২০ টাকা, গরুর সুতি কাবাব কেজি প্রতি ১৪০০ টাকা, খাসির সুতি কাবাব ১৬০০ টাকা, ছোলা-ঘুঘনি ৩০০ টাকা কেজি, ফালুদা এক লিটার ২০০ টাকা, দইবড়া পিস ২০ টাকা, সাধারণ জিলাপি ২০০-২২০ টাকা কেজি ও শাহী জিলাপি ৩০০ টাকা কেজি এবং বড় বাপের পোলায় খায় ৮০০ টাকা কেজি।
চকবাজার শাহী জামে মসজিদের সামনে চক সার্কুলার রোডে অস্থায়ী এই ইফতারের সব থেকে জমজমাট বাজারটি বসে।
এছাড়াও মৌলভীবাজার, বেগম বাজার, বংশাল সহ প্রায় সব জায়গায় পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়ে ইফতার বাজার বসে।
দুপুরের পর থেকেই রাস্তার উপরে অস্থায়ী দোকানগুলো ইফতারের বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে বসে পড়ে এবং তাদের বেচাকেনা চলে ইফতারের আগ পর্যন্ত।