ঈদযাত্রা: অগ্রিম টিকিট বিক্রি কমে যাওয়ায় হতাশ লঞ্চ মালিকরা
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2023/04/16/launch_mumit.jpg)
ঈদ সামনে এবার লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বিক্রি কমে যাওয়ায় হতাশ সদরঘাট টার্মিনালের লঞ্চ মালিকরা। তাদের মতে, ট্রেন কিংবা বাসে করে গন্তব্যে যেতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করায় এবার লঞ্চের টিকিট বিক্রি কমেছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েস (প্যাসেঞ্জার ক্যারিয়ার) অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইডব্লিউপিসিএ) সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আগের বছরগুলোর মতো এখন আর লঞ্চের অগ্রিম টিকিটের চাহিদা নেই। হয়তো মানুষ এখন নৌপথের চেয়ে সড়কপথে ভ্রমণে বেশি আগ্রহী।"
অগ্রিম টিকিট বিক্রি না হওয়া সত্ত্বেও লঞ্চ অপারেটররা আশাবাদী, ঈদের আগ মুহূর্তে ২০-২১ এপ্রিল ঈদযাত্রীদের ভিড় দেখা যাবে।
গত ১১ এপ্রিল নৌ পরিবহন, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি জানায়, পদ্মা সেতুর কারণে বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চলগামী লঞ্চযাত্রীর সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। তবে ঈদ সামনে আগামী ২১-২২ এপ্রিল সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের চাপ বৃদ্ধি পাবে।
ঈদের আগের নয়দিনে ঢাকা ও আশপাশের জেলার প্রায় ৩০ লাখ মানুষ নৌপথে উপকূলীয় জেলাগুলোর উদ্দেশে রাজধানী ছাড়বেন। এরমধ্যে প্রতিদিন গড়ে ৩ লাখ করে মোট ২৭ লাখ যাত্রী সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল হয়ে গন্তব্যে পাড়ি দেবেন। এমনটিই উল্লেখ করা হয়েছে কমিটির প্রতিবেদনে।
বিআইডব্লিউপিসিএর সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, "আমরা এখনও আশাবাদী, ২০-২১ এপ্রিল যাত্রীদের ভিড় দেখা যাবে। তাই আমরা চাপ মোকাবেলায় জাহাজগুলোকে প্রস্তুত রাখব।"
লঞ্চ মালিকরা অবশ্য আগের মতো এবার ঈদে নতুন কোনো নৌযান বের করবেন না বলে জানিয়েছেন; এমনকি যাত্রীদের আকৃষ্ট করতে পুরনো যানগুলোও তারা সংস্কার করছেন না।
রিন্টু বলেন, "এ বছর লঞ্চের টিকিটের চাহিদা কম থাকায় আমরা নতুন নৌযান আনছি না বা পুরনোগুলোও সংস্কার করছি না। আমরা আগের মতো পুরোন যানগুলো দিয়েই সার্ভিস দেবো।"
ঢাকা থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে নৌ পরিবহন সেবা প্রদানকারী লঞ্চ ব্যবসা পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকেই কমতে শুরু করে। তবে লঞ্চ মালিকরা ব্যবসার অবনতির জন্য কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন।
নৌ-পরিবহন অপারেটরদের মতে, লঞ্চ সার্ভিসের চাহিদা কমার প্রধান কারণ হল গুলিস্তান-সদরঘাট সড়কে তীব্র যানজট। এই যানজটের ভয়ে অনেক যাত্রীই লঞ্চের চেয়ে ট্রেন বা বাসযাত্রাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন।
লঞ্চ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া টিবিএসকে বলেন, লঞ্চ মালিকরা দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কে যানজট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, "কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রতিটি বৈঠকে আমরা গুলিস্তান-সদরঘাট সড়কটিকে যাত্রীবান্ধব করতে এবং রাস্তা থেকে অবৈধ দোকানপাট ও স্টল অপসারণের তাগিদ দিয়ে আসছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি। সড়কের অবস্থার উন্নতি না হলে সদরঘাটের লঞ্চ ব্যবসা আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।"
"আমাদের ব্যবসা ইতোমধ্যেই কমে গেছে। আগে দক্ষিণাঞ্চলের ১২টি রুটে প্রতিদিন ৬০-৮০টি লঞ্চ ঢাকা ছেড়ে যেত, কিন্তু যাত্রীর অভাবে এখন মাত্র ৩০-৩৫টি লঞ্চ চলাচল করছে," যোগ করেন শহিদুল।