দুর্ঘটনা কমাতে গতিসীমার নীতিমালা আসছে, শিগগিরই হবে বাস্তবায়ন: সড়ক সচিব
সড়কে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে পরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে গতিসীমা নীতিমালা আসছে, শিগগিরই তা বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী।
সচিব বলেন, 'পরিবহনের গতি কমানো গেলে দুর্ঘটনা কমে যাবে। এর জন্য আমরা একটা গাইডলাইন তৈরির কাজ করছি। আপনারা দ্রুতই একটি নীতিমালা পাবেন।'
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আয়োজিত, 'সড়ক ও যানবাহনের প্রকারভেদে গতি নির্ধারণ, ব্যবস্থাপনা, মনিটরিং এবং বাস্তবায়ন' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
উপস্থিত অন্যান্য বক্তারা সড়ক দুর্ঘটনার জন্য যানবাহনের অতিরিক্ত গতি, সচেতনতার অভাব ও সঠিক ডাটা না থাকাকে দায়ী করেন।
এছাড়া সড়কে বিশৃঙ্খলার জন্য যানবাহনের তুলনায় সড়কের অপ্রতুলতার উপরে জোর দেন স্টেকহোল্ডাররা।
ব্র্যাকের রোড সেফটি প্রোগ্রামের কো-অর্ডিনেটর এম খালেদ মাহমুদ বলেন, অতিরিক্ত গতি দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। গতি সীমিত বা নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য সেভাবে পরিকল্পনা করে সড়ক তৈরি করতে হবে। শুধু দুর্ঘটনার জন্য চালককে দোষারোপ করলে হবে না। পথচারী থেকে চালক সবাই যেন বুঝতে পারে এমন রোড সাইন ব্যবহার করতে হবে।
তবে গতিসীমা নির্ধারণের পাশাপাশি রোড সেফটির অন্যন্য বিষয়ের উপর নজর দেয়া ও সচেতনতা বাড়ানোর উপরেও জোর দেন বক্তারা।
নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, 'ভৌগোলিক অবস্থা বুঝে আমাদের গতিসীমা নির্ধারণ করতে হবে। আমাদের কোনো এক সড়কে গতিসীমা দিয়ে রাখলাম ৮০ কিলোমিটার। কিন্তু বন্যার সময় সেখানে সে গতিতে চলা সম্ভব না। সে ক্ষেত্রে সেখানে ভ্যারিয়েবল সাইনবোর্ড থাকা জরুরি।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা যেগুলো করতে পারি, যেগুলো করা সম্ভব সেগুলো করতে হবে। হেলমেটের ব্যবহার, অটোমেটিক টোলের ব্যবস্থা করা, সিটবেল্ট বাঁধা নিশ্চিত করতে হবে।…স্কুল পর্যায় থেকে আমাদের সচেতনতা তৈরি করতে হবে। আর কোনো গতিসীমা নির্ধারণ বা নিয়মনীতি করলে তা যেন চালকেরা জানতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে।'
সড়কে বিশৃঙ্খলার কারণ হিসেবে আইন প্রয়োগকারীরা যানবাহনের তুলনায় রাস্তার অপ্রতুলতাকে দায়ী করেছেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এডিসি সোহেল রানা বলেন, 'আইন প্রয়োগ করাটাই আমাদের কাছে মুখ্য উদ্দেশ্য। কিন্তু আমাদের ঢাকা শহরের জ্যাম কমাতেই ৯৯ শতাংশ সময় ব্যয় করতে হয়। যার ফলে আমরা অন্য বিষয়গুলো ইমপ্লিমেন্ট করতে পারি না। আমাদের মূল সমস্যা হচ্ছে সড়ক কম, গাড়ি বেশি।'
সড়ক নিরাপদ করতে কাজ না করতে পারার কারণ হিসেবে সঠিক ডাটা না থাকার অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধি।
সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তানভীর সিদ্দিকী বলেন, 'বিভিন্ন সংস্থা ভিন্ন ভিন্ন দুর্ঘটনার তথ্য দেয়। আসলে আমাদের কাছে প্রপার ডেটা নেই। যার ফলে আমরা কাজ করতে পারি না। দুর্ঘটনার সঠিক ডেটা তৈরি করা উচিত।'