সাপের কামড়ে দেশে প্রতি বছর ৭৫১১ জন মারা যায়: জরিপ
প্রতি বছর দেশে প্রায় চার লাখ মানুষ সাপের কামড়ের শিকার হয়। এতে মৃত্যু হয় সাড়ে ৭ হাজারের বেশি মানুষের। সর্পদংশন সংক্রান্ত একটি জরিপে এসব তথ্য উঠে আসে। অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনসিডিসি) দেশব্যাপী এই জরিপ পরিচালনা করে।
জরিপে দেখা যায়, দেশে সাপের কামড়ের এক-চতুর্থাংশ ঘটনায় বিষধর সাপ জড়িত। প্রতি লাখে ২৪৪ জন মানুষ সর্পদংশনের শিকার হয়। মৃত্যু হয় প্রতি লাখে ৪ থেকে ৫ জনের।
সাপের কামড়ের ৯৫ শতাংশ ঘটনা গ্রামীণ এলাকায় ঘটে। নারীদের চেয়ে পুরুষরা চারগুণ বেশি সাপের কামড়ের শিকার হয়। সর্পদংশনের ঘটনা বেশি ঘটে বরিশাল ও খুলনায়।
২৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সী পুরুষেরা বাড়ির আশপাশে সন্ধ্যা থেকে মাঝরাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সর্পদংশনের শিকার হন। প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ দংশিত অঙ্গে গিঁট দেন এবং ৬৫ শতাংশ মানুষ প্রথমেই 'ওঝা' বা প্রচলিত চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেন।
সর্পদংশনের পরে প্রতি হাজারে ২ জন মানুষের অঙ্গহানী ঘটে। ২২ থেকে ২৩ ভাগ বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদী শারিরীক অসুস্থতা ভোগ করেন। ১০ শতাংশ মানুষ দীর্ঘ মেয়াদী অবসাদ গ্রস্ততায় ভোগেন।
আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ১০.৬ শতাংশের শারিরীক অক্ষমতা এবং ১.৯ শতাংশের মানসিক অক্ষমতা দেখা দেয়।
দেশে প্রতি বছর প্রায় ১৯ হাজার গৃহপালিত পশু সর্পদংশনের শিকার হয়। এতে প্রায় আড়াই হাজার পশু মারা যায়।
রোববার (১৮ জুন) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে এই সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে, উচ্চ হারে সাপের কামড় এবং এতে মৃত্যু হওয়া সত্ত্বেও স্থানীয়ভাবে কোনও অ্যান্টি-ভেনম তৈরি হয়নি।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, মৃত্যুর সংখ্যা অনেক। আমাদের একটি বিষ সংগ্রহ কেন্দ্র আছে। এখন আমাদের অ্যান্টি-ভেনম তৈরির ব্যবস্থা নিতে হবে।
অনুষ্ঠানে, ২০২১-২২ সালে দেশে পরিচালিত বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ নিয়ে ১৭টি গবেষণাও তুলে ধরা হয়।