দেশের সব বিভাগে দুর্নীতি ক্যান্সারের মতো ছেয়ে গেছে: নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি
বিচার বিভাগসহ দেশের সব বিভাগে দুর্নীতি ক্যানসারের মতো ছেয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিনি বলেন, এই ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাওয়াই বড় চ্যালেঞ্জ। দুর্নীতি যাতে কমানো যায়, সেই উদ্যোগ নিতে হবে।
বিচার বিভাগকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে কি না এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিচার বিভাগ রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এটা আমি মনে করি না। বিচারকরা তাদের মতো করে কাজ করে যাচ্ছেন ।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয় থেকে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে ২৪তম প্রধান বিচারপতি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর শপথের পর থেকে এই নিয়োগ কার্যকর হবে। এখন তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বিচারপতি হাসান বলেন, 'মামলাজট পুরোনো ব্যাধি। শপথ নেওয়ার পর চেষ্টা করব সবার সঙ্গে কথা বলে বিচার বিভাগকে গতিশীল করতে। সব বিচারকের প্রতি আহ্বান থাকবে, বিচার বিভাগের কাজকে নিজের কাজ মনে করবেন। মামলাজট কমানোই বড় চ্যালেঞ্জ।'
তিনি বলেন, সামাজিক পরিবর্তন না এলে শুধু মামলা করে অপরাধ দূর করা যাবে না।
বিচার বিভাগের ওপর আস্থার ঘাটতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আস্থার ঘাটতি সর্বত্রই। বিচার বিভাগের প্রতি আস্থার ঘাটতি নেই, তা বলব না। তবে তা শুধু বিচারকদের কারণে নয়, আইনজীবীসহ এই বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এটি ধীরে ধীরে আমাদের কাজ করার মাধ্যমে দূর হবে।'
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, 'আমাদের ওপরে আস্থার যে বিষয়টি আপনারা বলছেন, এখনো আপনার কোনো অসুবিধা হলে আপনি কোর্টেই যাবেন। আমাদের ডিসপোজালের রেট কিন্তু দিনের পর দিন বাড়ছে। মানুষের যদি আস্থাই না থাকবে, মানুষ কোর্টে আসবে কেন! আস্থা আছে বলেই মানুষ কোর্টে আসে। হ্যাঁ, তবে, আস্থা হান্ড্রেড পারসেন্ট আছে এ কথাটা আমি বলতে পারব না। এটা বলার মতো অবস্থায় আমরা নেই। যেমন আমি বলেছি, কোনো সেক্টর নেই যেটার ওপর মানুষের আস্থার কমেনি।
তিনি বলেন, আমি শুধু একটি কথা বলবো, যারা রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন, আমাদের আইনজীবী বন্ধুরা যারা রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছেন- তারা রাজনীতিটা করুন কিন্তু আদালত অঙ্গনে তারা যেন সহনশীলতার পরিচয় দেন। তারা যেন একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হন। তাহলে এই উত্তাপগুলো আদালতে ছড়াবে না। সমাজের রাজনৈতিক বিষয়গুলো সম্বন্ধে আমাদের মন্তব্য করা ঠিক হবে না এবং এটা আমার বিষয়ও না। আমাদের সামনে যখন বিচার আসে, কোনো একটি মামলা আসে, সেটা আমাদের এবং অধঃস্তন আদালতে নিষ্পত্তি করতে হয়।