ই-সিগারেট আমদানি, রপ্তানি নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন: মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা
বর্তমান প্রজন্মের তরুণদের মধ্যে আশঙ্কাজনকভাবে ই-সিগারেটের ব্যবহার বাড়ছে। এতে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা হুমকিতে পড়ছে বলে জানিয়েছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ প্রিভেন্টিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিনের (নিপসম) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
বৃহস্পতিবার সিরডাপ মিলনায়তনে তামাক ও অসংক্রামক রোগ: জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার 'এফসিটিসি'-র সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের গুরুত্ব শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা আরো বলেন, বর্তমানে নারীদের মধ্যেও ধূমপান ব্যবহারের মাত্রা বাড়ছে। তারাও ই-সিগারেটের মতো ভয়ঙ্কর নেশায় বুঁদ হয়ে পড়ছে। তাই তরুণদের জনস্বাস্থ্য রক্ষায় অবিলম্বে ই-সিগারেটের মত ক্ষতিকর পণ্যের আমদানি, রপ্তানি নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। এজন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসির আলোকে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করতে হবে।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং পাবলিক হেলথ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণার বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী ও পাবলিক হেলথ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. নিজাম উদ্দীন আহমেদ।
তারা বলেন, দেশে তিন কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন তিন কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। আর তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে প্রতি বছর প্রায় এক লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
সেমিনারে সভাপতি ডা. শাহ মনির হোসেন বলেন, তামাক ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, বিদ্যমান আইনের ছয়টি ধারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। সেগুলো হলো-আইনের ধারা ৪ ও ৭ বিলুপ্ত করা, অর্থাৎ সব পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ করা। তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা তামাক কোম্পানির যেকোনো ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা। তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা। বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা। ই-সিগারেটসহ সব ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা।