সাড়ে ৬ ঘণ্টায় ৪৮৬ গাড়ির বঙ্গবন্ধু টানেল পার, ১ লাখ ১৭ হাজার টাকা টোল আদায়
রোববার (২৮ অক্টোবর) ভোর ৬টা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সাড়ে ছয় ঘণ্টায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৮৬টি গাড়ি টানেল ব্যবহার করেছে। এতে মোট টোল আদায় হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার টাকার বেশি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বঙ্গবন্ধু টানেলের টোল ব্যবস্থাপক মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, "যান চলাচল উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর ভোর ৬টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সাড়ে ৬ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু টানেল দিয়ে ৪৮৬টি গাড়ি পারাপার হয়। এ থেকে মোট টোল আদায় হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ২৫০ টাকা।"
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উপপ্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, "আমরা সকাল ৬টার সময় যান চলাচলের জন্য টানেল খুলে দিয়েছি। হরতালের কারণে আজ যান চলাচল একটু কম। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যান চলাচল বাড়তে পারে।"
এখন থেকে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা টানেল চালু থাকবে বলে জানান তিনি।
টানেলে ৬০ কিলোমিটার গতি রাখার নির্দেশনা আছে এবং টানেলের ভেতর যেন যানবাহন না দাঁড়ায়, সে ব্যবস্থাপনা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, "গভীর রাতে যান চলাচল কমে গেলে টোলের লেন কমিয়ে আনা হবে। তবে এজন্য কোনো যানবাহনকে অপেক্ষা করতে হবে না।"
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলে প্রথম যাত্রী হিসেবে টোল দেন মুন্সিগঞ্জের জুয়েল রানা। প্রথম যাত্রী হিসেবে টোল দিয়ে কয়েকজন বন্ধু নিয়ে তিনি গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে চট্টগ্রামের আনোয়ারা প্রান্তে আসেন। এরপর আজ রোববার সকাল ছয়টার সময় প্রথম যাত্রী হিসেবে তিনি টোল দেন।
জুয়েল রানা বলেন, "টানেল এলাকায় এসে অপেক্ষা করার সময় আরও গাড়িকে অপেক্ষা করতে দেখি। তখন মনে হচ্ছিল, প্রথমে টোল দিতে পারব না। তবে ভালো লাগছে প্রথম টোল দিতে পেরেছি বলে।"
এদিকে পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে টানেল পার হয়ে সকাল ছয়টার দিকে টানেলে প্রবেশ করেন দুলাল সিকদার, তার স্ত্রী সালমা আক্তার ও সন্তানেরা। সালমা আক্তার বলেন, "টোল বক্স আনোয়ারায় হওয়ায় আগে টোল দিতে না পারলেও আগে টানেলে প্রবেশ করেছি। তাই ভালো লেগেছে।"
প্রথম যাত্রীবাহী বাস হিসেবে টোল দেয় বিডি বাস লাভার গ্রুপের একটি বাস।
এদিকে, ভোর রাত থেকে টানেলে প্রবেশের জন্য উভয় প্রান্তে অপেক্ষায় ছিল প্রায় শতাধিক গাড়ি। তবে পতেঙ্গা প্রান্তের চেয়ে আনোয়ারা প্রান্তে গাড়ির চাপ বেশি বলে জানা গেছে।
এর আগে, টানেল পারাপারের জন্য টোল নির্ধারণ করে দেয় সরকার। সেতু বিভাগের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, জিপ বা পিকআপের জন্য ২০০ টাকা এবং মাইক্রোবাসের জন্য টোল ২৫০ টাকা। বাসের ৩১ আসন বা এর কম হলে টোল ৩০০ টাকা, ৩২ আসন বা তার বেশি হলে ৪০০ টাকা এবং ৩-এক্সেল বাসের জন্য টোল ৫০০ টাকা। ট্রাকের ক্ষেত্রে ৫ টন পর্যন্ত ৪০০ টাকা, ৮ টন পর্যন্ত ৫০০ টাকা এবং ৮ থেকে ১১ টনের ট্রাকের টোল ৬০০ টাকা। মালবাহী ৩-এক্সেল ট্রেলারের টোল ৮০০ টাকা, ৪-এক্সেল ট্রেলারে ১,০০০ টাকা এবং ৪-এক্সেলের বেশি প্রতি এক্সেলের জন্য ১,০০০ এর সঙ্গে ২০০ টাকা যোগ করে টোল দিতে হবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
গতকাল শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল পার হয় প্রধানমন্ত্রীর বহরের ২১টি গাড়ি। এরমধ্যে নিজের গাড়ির জন্য ২০০ টাকা এবং বহরের ২০টি গাড়ির জন্য ৪,০০০ টাকা টোল পরিশোধ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।