ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচন: নিয়ম রক্ষার ভোটেও কারচুপির অভিযোগ
আর কয়দিন পরেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। এ অবস্থায় নিয়ম রক্ষার্থে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের (সরাইল ও আশুগঞ্জ) উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রোববার (০৫ নভেম্বর) সকাল ৮টায় ১৩২টি কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও সবকটি কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে কম। এ অবস্থাতেও আশুগঞ্জের কয়েকটি কেন্দ্রে নৌকায় 'ওপেন ভোট' নেওয়ার বা কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। অন্তত ৭টি কেন্দ্রে 'সূক্ষ্ম কারচুপি'র অভিযোগ তুলেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা।
রোববার (৫ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ তুলে ধরেন তিনি।
জিয়াউল হক মৃধা অভিযোগ করে বলেন, "সরাইলের প্রায় সবকটি ইউনিয়নের ভোটকেন্দ্রগুলোতে সরবরাহকৃত ভোটার তালিকা ত্রুটিপূর্ণ। সূক্ষ্ম কারচুপির অংশ হিসেবে ইচ্ছাকৃতভাবেই এটি করা হয়েছে। এছাড়া আশুগঞ্জের শরীফপুর, আন্দিদিল, যাত্রাপুর, বড়তল্লা, টেকেরপাড়, চরচারতলা ও নাওঘাট কেন্দ্রে নৌকার জাল ভোট দেওয়া হচ্ছে এবং আরও কয়েকটি কেন্দ্র দখলের পায়তারা চলছে।"
"আমি শরীফপুর কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বাতিলের দাবি করছি," যোগ করেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাক বলেন, "ভোটার তালিকা ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন কমিশন থেকে যে তালিকা আমাদের দেওয়া হয়েছে, সেই তালিকাই আমরা ভোটের সরঞ্জামের সঙ্গে কেন্দ্রগুলোতে পাঠিয়েছি। এছাড়া, কয়েকটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনার খবর পাওয়ার সাথে সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।"
এদিকে, নির্বিঘ্নে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও পুলিশ প্রশাসন। ভোটকেন্দ্র ও এর আশপাশের এলাকার নিরাপত্তায় ৮ শতাধিক পুলিশ সদস্য, ৭ প্লাটুন বিজিবি সদস্যসহ র্যাব, আনসার, জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়েছে।
নির্বাচনে মোট ৪ লাখ ১০ হাজার ৭২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। অন্যদিকে, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ৫ জন প্রার্থী। তারা হলেন– আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান আলম, জাতীয় পার্টির আব্দুল হামিদ ভাসানী, জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. রাজ্জাক হোসেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা।
উল্লেখ্য, গত ৩০ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সাত্তার ভুঁইয়া মৃত্যুবরণ করায় আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। বিএনপির দলছুট নেতা আব্দুস সাত্তার ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) থেকে নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে গত বছরের ডিসেম্বরে দলীয় সিদ্ধান্তে পদত্যাগ করেন তিনি। এরপর গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়ে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাত্তার।