কক্সবাজারের আইকনিক রেলস্টেশন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ (১১ নভেম্বর) ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (১১ নভেম্বর) বেলা ১টায় তিনি এ রেললাইনের উদ্বোধন করেন।
কক্সবাজার রেলস্টেশনে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার রেললাইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গর্বভরে বলেন, "আমি অঙ্গীকার করেছিলাম এবং তা রক্ষা করেছি।"
"বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের সাথে এই রেল যোগাযোগ একটি নতুন যুগের সূচনা করলো। কক্সবাজারবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হলো অবশেষে," বলেন তিনি।
এর আগে, উদ্বোধন উপলক্ষে বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে অনুষ্ঠান স্থলে পৌঁছান প্রধামন্ত্রী। সমাবেশ স্থলে পৌঁছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগের পরই মঞ্চে বক্তব্য রাখেন তিনি।
এই রেল সংযোগের মাধ্যমে উক্ত অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন যুগের সূচনা হলো।
আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে এই রুটে বাংলাদেশ রেলওয়ের যাত্রীবাহী ট্রেন সার্ভিস চালু হওয়ার কথা রয়েছে। এটি চালু হলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে রেলপথে কক্সবাজার পর্যন্ত সরাসরি রেলপথে পৌঁছানো যাবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "রেলে করে এখন কক্সবাজার আসা যাবে। এটা আগে ছিল স্বপ্ন। কিন্তু আজ বাস্তবে রূপ নিল। ঢাকা থেকে কক্সবাজারে রেল আসছে। পঞ্চগড় থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত আসার উদ্যোগ নেওয়া হবে। উত্তর অঞ্চলের সাথে যুক্ত হবে এই লাইন।"
আগামী ৩ বছরের মধ্যে রেল সেবাকে আন্তর্জাতিক মানের করতে কাজ শুরু হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
নতুন উদ্বোধন করা এই রেললাইন এশিয়ান রেলওয়ের সাথে সংযুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি। একইসঙ্গে রেললাইনকে সঠিকভাবে ব্যবহারের অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, "এটাকে নিজের সম্পদ মনে করে ব্যবহার করতে হবে। এটা পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব সকলের।"
রেল প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বেলা ১টায় দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণার মধ্য দিয়ে বক্তব্য প্রদান শেষ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এই উদ্বোধন কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রী 'দ্বিতীয় টুঙ্গিপাড়া' খ্যাত মহেশখালীর মাতারবাড়িতে যাবেন। সেখানে পৌঁছে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। সেখানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে তার।
উদ্বোধন ঘোষণার পর বেলা ১টা ২৩ মিনিটে রেল কাউন্টারে গিয়ে প্রথম টিকেট কাটেন প্রধানমন্ত্রী।
এরপর পায়ে হেঁটে যান রেলের দিকে। রেলের পাশে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী হাতে সবুজ পতাকা নেড়ে, বাঁশি বাজিয়ে রেলে ওঠেন।
বেলা ১টা ২৯ মিনিটে রেলটি রামু স্টেশনের দিকে যাত্রা শুরু করে। রেলে প্রধানমন্ত্রীর সাথে রয়েছেন রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সুধি মহলসহ তার সফরসঙ্গীরা।
১২ কিলোমিটার পথ অতিক্রমের পর রামু স্টেশনে নেমে যাবেন প্রধানমন্ত্রী।
রামু পৌঁছে সেখানে দুপুরের খাবার ও নামাযের বিরতি নেবেন তিনি। এরপর বিমানবন্দর হয়ে হেলিকপ্টারযোগে যাত্রা শুরু করবেন মাতারবাড়ির দিকে।
প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা মহেশখালীর মাতারবাড়িতে গিয়ে পৌঁছবেন বেলা ৩ টার দিকে। তবে নির্ধারিত এ সময়ের অনেক আগেই জনসভাস্থলে শুরু হয়েছে জনস্রোত। মিছিলে মিছিলে আসতে শুরু করেছে মানুষ। সভাস্থল পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে মানুষে-মানুষে।