নির্বাচনী তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে আওয়ামী লীগ, ১৭ নভেম্বর থেকে মনোনয়ন বিক্রি শুরু
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। দলটির একাধিক নেতা বলেছেন, ১৭ নভেম্বর থেকে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হবে।
নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, আগামী ১৭ নভেম্বর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও জানান, ওই দিন থেকে নির্বাচনে প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে পারবেন।
আওয়ামী লীগ কর্মকর্তাদের মতে, এ বছর প্রতিটি মনোনয়ন ফরম ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করবে দলটি।
দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী বলেন, রাজপথ দখল করে বিএনপি-জামায়াতের 'নৈরাজ্য' ঠেকাতে নেতাকর্মীদেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতির ওপর আওয়ামী লীগ সতর্ক দৃষ্টি রাখবে।
তিনি বলেন, 'সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছে। নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রস্তুতির জন্য শিগগিরই প্রার্থী মনোনয়নের প্রক্রিয়া শুরু হবে।'
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, দেশের ৩০০ আসনের সবকটি আসনে প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম গ্রহণ ও জমা দেওয়ার জন্য আটটি ক্যাটাগরির আটটি বোর্ড করা হবে।
এ বোর্ডের মাধ্যমে মনোনয়ন ফরম বিতরণ, জমা ও বাছাই করা হবে।
পরে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করবে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান বলেন, 'নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিলকে আমরা স্বাগত জানাই। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। তারা স্বাধীনভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। তারা একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে।'
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, 'নির্বাচন শিডিউল ঘোষণা করায় দেশবাসী স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা এবং শাসনতান্ত্রিকভাবে দেশ পরিচালনায় এটা একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।'
তিনি আরও বলেন, 'নাশকতা, জ্বালাও, পোড়াও, ধ্বংস, অগ্নিসন্ত্রাসীদের হাত থেকে গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণায় বাংলাদেশ আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে।'
জাতীয় সংসদের হুইপ ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, 'গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং নির্বাচন করতেই হবে। আমরা ঘোষিত তফসিলকে স্বাগত জানাই। আমরা আশা করছি, বিএনপির শুভ বুদ্ধির উদয় হবে, তারা নির্বাচনে আসবে।'
তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশের সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদ অপরিবর্তনীয় বিভিন্ন উপধারা মোতাবেক নির্বাচন ব্যতীত বল প্রয়োগ বা অন্য কোন উপায়ে সরকার পরিবর্তনের যে কোনো উদ্যোগ সর্বোচ্চ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যেকোনো দেশি বা বিদেশি ব্যক্তি বল প্রয়োগের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করলে সর্বোচ্চ দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। সুতরাং বিএনপির জন্য মৃত্যুদণ্ডের ঝুঁকি কেউ নেবেন এটি বিশ্বাসযোগ্য নয়। অতএব তারা নির্বাচনে আসবেন এবং নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হবে।'
এছাড়াও বুধবার রাতে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সারা দেশের প্রতিটি ইউনিটে তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল করছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।