রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ: নির্বাচনী তফসিলের সময় পরিবর্তন চেয়েছেন রওশন এরশাদ
রবিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ নির্বাচনী তফসিলের সময় পরিবর্তন করা যায় কি-না এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সাথে আলাপের অনুরোধ করেছেন। একইসাথে তিনি সব দলের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করারও মতামত দিয়েছেন।
জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব এবং সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে রওশন এরশাদের বৈঠকের পর দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এসব কথা জানান।
মসিউর রহমান রাঙা বলেন, "সব দলের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে তাদের জানিয়েছেন। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দিয়েছেন রওশন, নইলে দেশে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে।"
এর আগে রবিবার দুপুর ১২টায় বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মশিউর রহমান রাঙ্গা, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নান এমপি, রাহগীর এরশাদ এমপি ও বিরোধী দলীয় নেতার মুখপাত্র কাজী মো. মামুনুর রশিদ।
মসিউর রহমান জানিয়েছেন, তারাই রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চেয়েছিলেন। নির্বাচন নিয়ে নয়, স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিতেই বঙ্গভবনে গিয়েছিলেন রওশন। তখন নির্বাচন নিয়ে কথা হয়। তবে এটি আনুষ্ঠানিক কোনও আলোচনা নয়।
মসিউর রহমান বলেন, যথাসময়ে নির্বাচন করতে সহযোগিতার জন্য তারা প্রস্তুত রয়েছেন। রাষ্ট্রপতি বলেছেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন যথাসময়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করবে বলে তিনি আশা করেন।
তিনি বলেন, যদি সম্ভব হয়,যে দলগুলো তফসিলের বিরোধিতা করছে, তাদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি আলোচনা করতে পারেন কি-না, সেটা আলোচনায় তুলেছেন রওশন এরশাদ। রাষ্ট্রপতি বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন।
এর আগে গত ১৪ নভেম্বর বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আসেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। আজ রওশন এরশাদ বঙ্গভবনে গেলেন।
প্রসঙ্গত, আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বিএনপি, জামায়াতসহ সমমনা বিরোধী দলগুলোর কঠোর বিরোধিতার মধ্যেই এ ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তফসিল অনুযায়ী, ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে, তা বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। এর তিন সপ্তাহ পর হবে ভোটগ্রহণ।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হবে। সেক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র জমার জন্য ১৪ দিন সময় দেওয়া হয়েছে এবং প্রচারের জন্য ১৯ দিন সময় রয়েছে। ৩০০ আসনেই ভোট হবে ব্যালট পেপারে।
বর্তমান সরকার সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচন অনুষ্ঠানে অনড় অবস্থানের কথা জানিয়েছে।
তবে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী উভয়েই জানিয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে অংশ নিবে না তারা।