বেড়েই চলেছে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2023/12/04/election-front-1.jpg)
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বেড়েই চলেছে প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা। সেসব ঘটনায় রোববার পর্যন্ত ৬০ জনের অধিক প্রার্থীকে শোকজ নোটিশ দেয়া হয়েছে।
তাদের মধ্যে অনেকেই নিজ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কাছে শোকজের জবাব দিয়েছে। তবে অনেকেরই জবাব সন্তোষজনক মনে হয়নি কমিটির বিচারকদের কাছে।
ইসির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত ৬০ জনের অধিক প্রার্থীকে শোকজ করা হয়েছে। এটি নিয়মিত কার্যক্রম, এর পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। এরই মধ্যে যারা শোকজের জবাব দিয়েছেন, তাদের কারও কারও জবাব সন্তোষজনক নয় বলে উঠে এসেছে নির্বাচন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ টিবিএসের কাছে ৬০-এর অধিক শোকজ দেওয়া ও অসন্তোষের বিষয়টি স্বীকার করেন।
তাদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, "পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা কমিশনের। কমিশন চাইলে তাদের আবার তলব করা হবে। সেখানে তাদেরকে ঘটনার সঠিক ব্যখ্যা ও নিজের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে হবে।"
আবারও যদি সন্তোষজনক জবাব না আসে তাহলে কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে অশোক কুমার বলেন, "সেক্ষেত্রে কমিশন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে। এমনকি প্রার্থীতাও বাতিল হতে পারে।"
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় ২৫ প্রার্থীকে শোকজ করা হয় বলে সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। এরপর মাত্র দুইদিনে প্রায় ৩৫ জনকে শোকজ করেছে ইসি, যা আরও বাড়তে পারে।
এদের বড় একটি অংশ নিজ নিজ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির সামনে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে শোকজের জবাব দেন। সেই জবাব সন্তোষজনক মনে করেনি কমিটির বিচারকরা। এ সংক্রান্ত রিপোর্ট তারা ইসির সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছে।
রবিবার আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ইসির শোকজের জবাব দেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ কে এম শামীম ওসমান।
পরে তিনি সাংবাদিকদের কাছে বলেন, 'নির্বাচন কমিশন আমাকে নোটিশ দিয়েছে, গত পরশু নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় এবং সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শান্তির মিছিল হয়েছে। যদিও প্রার্থী হিসেবে আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম না। তারপরও এই প্রোগ্রামটি যেহেতু রাজনৈতিক প্রোগ্রাম, তাই নির্বাচন কমিশন আমাকে শোকজ নোটিশ দিতেই পারে। আমি নির্বাচন কমিশনকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছি।'
মাদারীপুরে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় ইসির অনুসন্ধান কমিটির আদালতে হাজিরা দিয়েছেন মাদারীপুর-৩ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী, দলটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ।
পরে অভিযুক্ত আব্দুস সোবহান গোলাপ সাংবাদিকদের বলেন, 'আদালত আমাকে তলব করেছিল। আমি নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির প্রধান যুগ্ম জেলা জজ আদালতের বিচারক মো.শরিফুল হকের কাছে লিখিত জবাব দাখিল করেছি। আদালত আমাকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে বলেছে। আগামীতে আমি সেটা মেনে চলার চেষ্টা করবো জানিয়েছি।'
এছাড়া গেল তিনদিনে শোকজ নোটিশ পাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে ইসির আদালতে লিখিত জবাব দিয়েছেন- মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, ঢাকা-৬ আসনের প্রার্থী জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, নাটোর-৩ আসনের প্রার্থী তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, নাটোর-২ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল ও মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাস।
বাকি অভিযুক্তদেরও শোকজের জবাব নিয়ে রিপোর্ট পাঠাবে কমিটি। সেখানেও 'অসন্তোষজনক' জবাবের ক্ষেত্রে একই পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানায় সূত্র।