জালে ধরা পড়ল ১৫০ কেজি ওজনের হাঙর!
চট্টগ্রামে উপকূলের জালে ধরা পড়েছে ১৫০ কেজি ওজনের একটি হাঙর। গতকাল (শনিবার) সন্ধ্যার দিকে জেলার আনোয়ারা উপজেলায় প্রায় সাত ফুট লম্বা মাছটি পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে হাঙ্গরটিকে উপজেলার খুরদা গহিরা ইউনিয়নের উটান মাঝির ঘাট এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। গতকাল রাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে মাছটিকে ঘিরে আলোড়ন তৈরি হয়।
জালে হাঙ্গরটি ধরা পড়ার খবরটি নিশ্চিত করেছেন আনোয়ারা উপজেলার মেরিন ফিশারিজ অফিসার মোঃ মোহাম্মদ হুজ্জাতুল ইসলাম। তিনি বলেন, "জাল দিয়ে হাঙ্গর ধরা দেশীয় আইনে নিষিদ্ধ।। তবে মানুষ হাঙর খাওয়ায় জেলেরা তা ধরে বাজারে বিক্রি করে।"
হুজ্জাতুল ইসলাম আরও বলেন, "জাল দিয়ে হাঙ্গর ধরার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার আমাদের নেই। শুধু পরিবেশ অধিদপ্তর তা করতে পারে।"
২০১২ সালে গৃহীত বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন (২০২১ সালে সংশোধিত) এ হাঙরকে বিপন্ন প্রাণী হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এই আইনের ৩৯ ধারায় প্রাণীটির সংগ্রহ ও বিক্রির জন্য দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের এক বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিতের বিধান রয়েছে। ফের একই অপরাধ করলে আরও কঠোর শাস্তির কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশে সমুদ্রবর্তী অঞ্চলে নানা জাতের হাঙর রয়েছে। কিন্তু অবৈধভাবে শিকার চলতে থাকার সামুদ্রিক এই প্রাণীটির বিলুপ্তির শতকরা ৩৬ ভাগ ঝুঁকি রয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ১২ বছরে বাংলাদেশে হাঙরের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। সিঙ্গাপুর, হংকং, থাইল্যান্ড, তাইওয়ান ও চীনের মতো দেশগুলিতে প্রাণীটির ব্যাপক চাহিদা থাকার গত তিন বছরে এটির শিকার বেড়ে গিয়েছে৷
বাণিজ্যিকভাবে হাঙ্গরের মাংস, চামড়া ইত্যাদির বেশ চাহিদা রয়েছে। যার ফলে সামুদ্রিক প্রাণীটি শিকারের প্রবণতা বেশি।
বঙ্গোপসাগরে ট্রলার দিয়ে মাছ ধরার পাশাপাশি অবৈধভাবে হাঙ্গরও ধরা হয়। একইসাথে নির্বিচারে বিপন্ন প্রজাতির বহু মাছও ধরা হয়। এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং অবৈধ হাঙ্গর শিকার রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হিমশিম খাচ্ছে।