নতুন শিপিং সেল চালু করছে চট্টগ্রাম ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন
বন্দর শহর চট্টগ্রাম থেকে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পণ্য পরিবহনের জন্য আজ মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম-ভিত্তিক লইটার জাহাজ মালিকদের সংগঠন ইনল্যান্ড ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন নতুন একটি শিপিং সেল চালু করতে যাচ্ছে।
লাইটার জাহাজ মালিকদের সংগঠন এবং লাইটার জাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল (ডব্লিউটিসি) মধ্যে বিরোধের কারণেই নতুন এই শিপিং সেলটি চালু হতে যাচ্ছে।
আজ এটির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিভিওএ), কোস্টাল শিপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ এবং ইনল্যান্ড ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ চিটাগং— এই তিন সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল।
বর্তমানে ডব্লিওটিসির নিয়ন্ত্রণে ১,৩০০টি জাহাজ রয়েছে। তবে সব মিলিয়ে প্রায় ২,৫০০ লাইটার জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙ্গর থেকে দেশের ৩৪টি রুটে পণ্য পরিবহন করে।
এর মধ্যে ইনল্যান্ড ভেসেল ওনার্সের অধীনে প্রায় ৩০০টি লাইটার জাহাজ রয়েছে বলে জানায় সংগঠনটি। বিভিন্ন শিল্প কারখানার মালিকদের রয়েছে আরও ৪০০টি লাইটার জাহাজ।
বিসিভিওএ এবং ইনল্যান্ড ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন নেতাদের মধ্যে বিরোধের কারণে ডব্লিউটিসি ভেঙে যাচ্ছে বলে জানায় একটি সূত্র।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল (ডব্লিওটিসি) সমন্বয় ছাড়া নিজেদের ইচ্ছামত ভাড়া নির্ধারণ করে। এ ব্যাপারে স্টেকহোল্ডার সাথে কোনো পরামর্শও করে না, যা ব্যবসা পরিচালনার খরচ বাড়িয়েছে। গত দশ বছরে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকায় প্রতিটন পণ্যে ভাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে ১৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।
তারা জানান, ডব্লিউটিসি সরকার কিংবা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। সুতরাং কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যারা ডব্লিউটিসি'র সদস্য নয়, তাকে কোনভাবেই ডব্লিউটিসি তাদের কোনো বিধি দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার রাখে না।
চট্টগ্রামের ইনল্যান্ড ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজি শফিক আহমদ টিবিএসকে বলেন, "আমাদের সংগঠনের সদস্যদের মতামত দেওয়ার জন্য আমরা একটি আলোচনা সভার আয়োজন করেছি। ওই বৈঠকে আমাদের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।"
তিনি বলেন "ডব্লিউটিসির সিরিয়াল নিয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে। আমাদের মালিকানায় থাকা প্রায় ৩০০টি জাহাজ কীভাবে পরিচালনা করা যায় সেই বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।"
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান বলেন, "দেশের আমদানিকারক এবং জাহাজ মালিকেরা ডব্লিউটিসির কার্যক্রমে অতিষ্ট হয়ে গেছেন। তাই নতুন চিন্তাভাবনা করতে হচ্ছে। ক্রমান্বয়ে আরও বহু জাহাজ মালিক আমাদের সাথে যুক্ত হবেন।"
বিষয়টি নিয়ে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের কনভেনর মোহাম্মদ নুরুল হক বলেন, "আমাদের ৬০৩ কোটি টাকা গুটিকয়েক পণ্যের এজেন্টের কাছে আটকা পড়ে আছে। এতগুলো টাকা না দিয়ে তারা আলাদা সেল করতে চাচ্ছে; বিষয়টি দুঃখজনক।"