নারায়ণগঞ্জ-২ ও কক্সবাজার-৪ আসনের জাপা প্রার্থীর ভোট বর্জনের ঘোষণা
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে (নারায়ণগঞ্জ-২) একটি কেন্দ্রে নৌকা ও ঈগল প্রতীকে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী আলমগীর সিকাদার লোটন। আজ রবিবার সকাল ১০টায় সংবাদ সম্মেলন করে তিনি ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
এদিকে অনিয়ম ও ভোটকেন্দ্র দখলের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেছেন কক্সবাজার-৪ আসনের জাপার প্রার্থী নুরুল আমিন সিকদার ভূট্টো।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আড়াইহাজার উপজেলার রামচন্দ্রদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে রবিবার সকালে নৌকা ও ঈগল প্রতীকে জাল ভোট দেওয়া হচ্ছে- এমন অভিযোগে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুর সমর্থকদের সাথে জাপার সমর্থকদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ছড়ড়া গুলি চালায় পুলিশ। এতে জাপার দুই কর্মী আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনায় লোটন সিকদারের ছোট ভাই জাহাঙ্গীর সিকদার ঝোটনসহ ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আলমগীর সিকদার লোটন বলেন, 'ভোটের দিন সকাল থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে আমার পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার খবর পাচ্ছিলাম। সকাল ১০টার দিকে রামচন্দ্রদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা ও ইগল প্রতীকের দুই এজেন্ট জাল ভোট দিচ্ছিলেন। এর প্রতিবাদ করলে নৌকার সমর্থকরা আমাদের ওপর আক্রমণ করে। এ সময় এলাকাবাসী আমাদের পক্ষ নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে পুলিশ গুলি করে। পুলিশের গুলিতে আমার দুই সমর্থক আহত হয়েছে।'
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নজরুল ইসলামের নির্বাচনের প্রধান এজেন্ট ও পৌরসভা মেয়র সুন্দর আলী। তিনি বলেন, 'পরাজয় বুঝতে পেরে তারা কেন্দ্র ভাঙচুর করেছে। তারা নিজেরাই সংঘর্ষে জড়িয়ে ভোট বর্জন করেছে।'
এ বিষয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহমুদুল হক বলেন, 'জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগ তুলে আলমগীর সিকদার লোটন ও তার ভাই জাহাঙ্গীর সিকদার ঝোটনের সমর্থকরা কেন্দ্র ও ব্যালট বাক্স ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি চালায়। বর্তমানে ওই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। প্রশাসন ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনকে আটক করেছে।'
কক্সবাজার-৪ আসনের জাপা প্রার্থীর ভোট বর্জন
এদিকে অনিয়ম ও কেন্দ্র দখলের অভিযোগ তুলে ভোট রর্জন করেছেন কক্সবাজার-৪ আসনের জাপার প্রার্থী নুরুল আমিন সিকদার ভূট্টো।
তিনি বলেন, 'যেসব কেন্দ্রে আমি ভোট পাব, সেসব কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে উখিয়ার জালিয়াপালং, রত্মপালং ও রাজাপালং ইউনিয়ন থেকে আমার সব এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়। বিষয়টি নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। একইসাথে ব্যাপক অনিয়ম, জাল ভোট প্রদান ও কেন্দ্র দখল করা হয়েছে। তাই ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
তবে কোন প্রার্থীর বিরুদ্ধে তার এই অভিযোগ, সেটি সুস্পষ্ট করেননি ভুট্টো।
কক্সবাজার-৪ আসনের সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভির হোসেন জানান, দুপুর ২টা পর্যন্ত প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে কেউই লিখিত বা মৌখিকভাবে বিষয়টি জানায়নি। প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী, ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
কক্সবাজারের জেলা রিটার্নি কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহিন ইমরান জানান, এ বিষয়ে এখনো কেউ লিখিত বা মৌখিকভাবে জানায়নি।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম জানান, উখিয়া বা টেকনাফসহ জেলার কোথাও কোনো কেন্দ্র দখলের তথ্য দুপুর ২টা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।