শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলায় জামিন পেলেন ড. ইউনূস
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করে জামিন পেয়েছেন গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) ১০টায় শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে আপিল করেন ড. ইউনূস। একইসাথে জামিন আবেদনও করেন।
দায়ের করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে, আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ড. ইউনূসকে জামিন দেন শ্রম আপিলেট ট্রাইবুনাল।
ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল-মামুন এ তথ্য জানিয়েছেন।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ঢাকার শ্রম ও আদালত-৩-এ গত ১ জানুয়ারি ৬ মাসের সাজা হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার আসামির।
গত ১ জানুয়ারি ড. ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড এবং ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত। সাজাপ্রাপ্ত অপর তিনজন হলেন গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
রায় ঘোষণার পর এক মাসের মধ্যে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার শর্তে ড. ইউনূসের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, "আসামিপক্ষ এক নম্বর আসামির বিষয়ে প্রশংসাসূচক বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। যেখানে তাকে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা নোবেলজয়ী আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব বলা হয়েছে। কিন্তু, এ আদালতে নোবেলজয়ী ইউনূসের বিচার হচ্ছে না, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান হিসেবে বিচার হচ্ছে। এসময় আদালত বলেন, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত।"
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ড. ইউনূস, গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলাটি করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।
মামলায় অভিযোগ আনা হয়, গ্রামীণ টেলিকমে শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি এবং লভ্যাংশের ৫ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন অনুযায়ী গঠিত তহবিলে জমা দেওয়া হয় না। এছাড়া, শ্রম আইন, ২০০৬ এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ অনুযায়ী, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক বা কর্মচারীদের শিক্ষানবিশকাল পার হলেও তাঁদের নিয়োগ স্থায়ী করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক বা কর্মচারীদের মজুরিসহ বাৎসরিক ছুটি দেওয়া, ছুটি নগদায়ন ও ছুটির বিপরীতে নগদ অর্থ দেওয়া হয় না।
গত ৬ জুন এ মামলায় ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করেছিলেন ড. ইউনূস ও অন্যরা। আপিল বিভাগ গত ২০ আগস্ট সেই আবেদন চূড়ান্তভাবে খারিজ করে দেন।