মিয়ানমারে সংঘর্ষে তুমব্রু সীমান্তে দুই বাংলাদেশী গুলিবিদ্ধ, ৫ স্কুল শিক্ষার্থীশূন্য
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার সেনা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় সীমান্তের ওপার থেকে আসা গুলিতে দুই বাংলাদেশি আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
আহতরা হলেন তুমব্রু ক্যাম্প পাড়ার বাসিন্দা প্রবীরচন্দ্র ও রহিমা বেগম (৫০)। রহিমা বেগম ঘুমধুম ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার দীল মোহাম্মদের স্ত্রী।
ঘুমধুম ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য খালেদা বেগম জানান, আজ (রোববার) সকাল দশটার দিকে সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির ঘটনায় এপারে দুই বাংলাদেশি গুলিবিদ্ধ হয়। পরে হেলিকপ্টার করে তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এদিকে সীমান্তজুড়ে গোলাগুলির ঘটনায় আতঙ্কে সীমান্ত এলাকার পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থী আসেনি বলে জানান শিক্ষকরা।
স্কুলগুলো হল উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাজাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিমকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
পশ্চিমকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেলাল উদ্দিন বলেন, "ভোরবেলা থেকে সীমান্ত ওপার থেকে প্রচন্ড গোলাগুলির শব্দ আসে। দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে গোলাগুলি চলছে। আতঙ্কে বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থী আসেনি। তবে স্কুলগুলোতে শিক্ষকরা সবাই উপস্থিত হয়েছে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা স্কুলে কখন আসবে না আসবে সীমান্তের পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে।"
জেলা শিক্ষা অফিসার ফরিদুল আলম হোসাইনি বলেন, গোলাগুলির ঘটনায় সীমান্ত এলাকার একটি দাখিল মাদ্রাসায়তেও কোন শিক্ষার্থী আসেনি।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, গতকাল (শনিবার) বিকেলে এবং রাতে সীমান্তের ওপারে রাখাইনের তুমব্রু রাইট পিলার ক্যাম্প এলাকা থেকে এলোপাতাড়ি ফায়ারিং হয়। সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামবাসীরা ওপারের দুপক্ষের লড়াইয়ে আতংকে রয়েছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, আজ (রোববার) সকাল থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজার উখিয়ার পালংখালী সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে এপারে। এতে আতংকে রয়েছে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা। ঘুমধুমের তুম্ব্রু এলাকার অনেকই ঘর বাড়ি ও দোকানপাট বন্ধ করে নিরাপদে সরে পড়েছে।
গতকাল (শনিবার) রাতে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের ৩৪ নম্বর রাইট ক্যাম্প দখলে নিতে আরাকান আর্মি হামলা চালায়। এরপর শুরু হয় দুপক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই। মুহুর্মুহু গোলাগুলি ও মর্টার শেলের যুদ্ধের এক পর্যায়ে রাতের আঁধারে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের ১৪ জন সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে এসে বিজিবির তুমব্রু ফাঁড়িতে আশ্রয় নেয়।