দ্রুত ফল মেলে এমন প্রকল্প অনুমোদনে অগ্রাধিকারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই না করে নতুন কোনো প্রকল্প অনুমোদন না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে জনগণের কল্যাণে কাজে লাগে এবং দ্রুত ফলাফল পাওয়া যায় এমন প্রকল্পগুলোর অনুমোদন প্রক্রিয়ায় অগ্রাধিকার দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব নির্দেশ দেন।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত চলতি সরকারের প্রথম বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
সভা শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার এ কথা বলেন।
সত্যজিত কর্মকার জানান, যেসব প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে, সেসব প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সচিবদের সঙ্গে বসে দ্রুত কাজ শেষ করার উদ্যোগ নিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি এসব প্রকল্পে অর্থ ছাড়ের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিতে এবং শেষ হওয়া প্রকল্পগুলোর প্রভাব মূল্যায়নেরও নির্দেশ দিয়েছেন।
পরিকল্পনা সচিব আরও বলেন, সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্য পূরণ করতে কোনো জমি পতিত রাখা যাবে না। পাশাপাশি বিদেশি ঋণের যথাযথ ব্যবহার করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এও বলেছেন- জলবায়ু তহবিল থেকে এডিবিসহ যেসব সংস্থা ঋণ দিতে চাচ্ছে, তাদের ঋণ নেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে।
এছাড়াও যেসব প্রকল্পের যন্ত্রপাতি দেশেই উৎপাদন করা সম্ভব সেগুলো দেশেই উৎপাদন করার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
৯ প্রকল্পের অনুমোদন
নতুন সরকারের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) প্রথম সভায় ৪ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরে মোট ৯টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯০৯ কোটি টাকা ও বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ২৯০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
এ ছাড়া ঋণ সহায়তা হিসেবে বিদেশি উৎস থেকে ২৫৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে।
একনেক সভা শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরেন।
এ সময় ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আব্দুল বাকী ,সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য কাউসার আহম্মদ এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন উপস্থিত ছিলেন।
সত্যজিত কর্মকার বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়:নিস্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন প্রকল্পের প্রথম সংশোধিত প্রস্তাব স্থানীয় সরকার বিভাগ একনেক সভা থেকে তুলে নেয়।
তিনি জানান, ডলারের দাম বাড়ায় এই প্রকল্পের ব্যয় বাড়বে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কারণে এটি বাদ দেয়া হয়েছে।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে দেশের ৪৮ জেলায় শিক্ষিত কর্মপ্রত্যাশী যুবদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি।
এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএইউ) এর অধীনে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী, পিডিএফ এর কার্যক্রম সম্প্রসারণ প্রকল্প (দ্বিতীয় পর্যায়), দুদকের খুলনা, রংপুর, রাজশাহী, বরিশাল এবং সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের ভবন নির্মাণ এবং ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।