ড. ইউনূসকে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান পদ থেকে অবৈধভাবে অপসারণের অভিযোগ অস্বীকার গ্রামীণ ব্যাংকের
গ্রামীণ ব্যাংক তাদের আটটি প্রতিষ্ঠান জবরদখল করে নিজেদের ইচ্ছেমতো চালাচ্ছে বলে শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে অভিযোগ করেছেন, তাকে বিভ্রান্তমূলক, অসত্য, বেআইনি ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেছে গ্রামীণ ব্যাংক।
ব্যাংকটির মিডিয়া সেলের প্রধান অঞ্জু আরা বেগম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গ্রামীণ ব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতা ও সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে সৃষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে চেয়ারম্যান ও নির্দিষ্টসংখ্যক পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার আইনি এখতিয়ার গ্রামীণ ব্যাংকের রয়েছে।
গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আঞ্জু আরা বেগম বলেন, 'ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক সংবাদ সম্মেলন করে বেশ কিছু বিভ্রান্তমূলক, অসত্য, বেআইনি ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য দিয়েছেন, যা ১ কোটি ৫ লাখ সদস্য ও তাদের পরিবারের অধিকার খর্ব করার শামিল। তাই গ্রামীণ ব্যাংক এ বিষয়ে সঠিক তথ্য উল্লেখ করে নিজেদের বক্তব্য ও ব্যাখ্যা জাতির সামনে প্রকাশ করাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে।'
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গ্রামীণ টেলিকম আর্টিকেল অভ অ্যাসোসিয়েশনের ৩৫ (iii) ধারা অনুসারে, দারিদ্র্য বিমোচন এবং উপার্জন তৈরির কাজ করার রেকর্ড আছে, এমন ব্যক্তিদের মধ্য থেকে তিনজন সদস্যকে গ্রামীণ ব্যাংক কর্তৃক মনোনীত করা হবে, যারা এই সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি হতে পারে বা না-ও হতে পারে।
এছাড়াও গ্রামীণ টেলিকম আর্টিকেল অভ অ্যাসোসিয়েশনের ৫১ ধারা অনুসারে, বোর্ডের একজন চেয়ারম্যান থাকবেন যিনি গ্রামীণ ব্যাংক কর্তৃক এমন ব্যক্তিদের মধ্য থেকে মনোনীত হবেন যার দারিদ্র্য বিমোচন ও উপার্জন তৈরির কাজ করার রেকর্ড আছে এবং/অথবা এমন কার্যক্রমে আগ্রহ আছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, গ্রামীণ টেলিকম আর্টিকেল অভ অ্যাসোসিয়েশনের ৩২ (iii) ধারা অনুসারে, দারিদ্র্য বিমোচন ও আয় তৈরির কাজ করার রেকর্ড আছে, এমন ব্যক্তিদের মধ্য থেকে দুজন সদস্যকে গ্রামীণ ব্যাংক মনোনীত করবে, যারা ব্যাংক পরিষেবায় যুক্ত হতে পারেন বা না-ও হতে পারেন।
আর গ্রামীণ টেলিকম আর্টিকেল অভ অ্যাসোসিয়েশনের ধারা ৪৯ অনুসারে, কল্যাণের একজন চেয়ারম্যান থাকবেন যিনি গ্রামীণ ব্যাংক কর্তৃক এমন ব্যক্তিদের মধ্য থেকে মনোনীত হবেন যার দারিদ্র্য বিমোচন ও উপার্জন তৈরির কাজ করার রেকর্ড আছে এবং/অথবা এমন কার্যক্রমে আগ্রহ আছে।
গ্রামীণ ব্যাংক সম্প্রতি গ্রামীণ টেলিকম ও গ্রামীণ কল্যাণের জন্য নতুন পরিচালকদের নাম ঘোষণা করেছে। ইউনূসের বদলে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছেন অধ্যাপক ড. এ কে এম সাইফুল মজিদ।
এদিকে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্রামীণ টেলিকম ভবনে আটটি প্রতিষ্ঠানে তালা লাগিয়ে দিয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক।
যে আটটি প্রতিষ্ঠানে তালা লাগানো হয়েছে সেগুলো হলো: গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ ফিশারিজ অ্যান্ড লাইভস্টক ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ এগ্রিকালচার ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ সামগ্রী, গ্রামীণ ফান্ড, গ্রামীণ শক্তি ও গ্রামীণ কমিউনিকেশন।
এক প্রশ্নের জবাবে ইউনূস গতকাল (১৫ ফেব্রুয়ারি) বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের টাকায় নয়, বরং ব্যবসার মুনাফায় প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, কোম্পানিগুলো আইন অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে।