সৈকতে ভেসে এল আরও ২টি মৃত মা কচ্ছপ, পেটে ১৮৫ ডিম
কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে আরও দুইটি মৃত মা কচ্ছপ ভেসে এসেছে। এসব কচ্ছপের পেটে মিলেছে ১৮৫টি ডিম। এ নিয়ে গত ছয়দিনে সমুদ্র উপকূলে ৮টি মৃত মা কচ্ছপ ভেসে এল। ভেসে আসা মৃত কচ্ছপগুলোর পেটে থেকে সব মিলিয়ে ৭শ ডিম পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে উখিয়ার সোনাপাড়া সৈকতে মৃত দুইটি মা কচ্ছপ ভেসে আসার সত্যতা নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বোরি) জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম।
তিনি জানান, এই দু'টিও অলিভ রিডলি মা কচ্ছপ। এগুলোর পেটে ১৮৫টি ডিম মিলেছে। দুইটি কচ্ছপেরই সামনের ও পিছনের ফ্লিপারগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ছিল। ডিম দিতে উপকূলে আসার সময় জালে বা অন্য কোনোভাবে আঘাত পেয়ে এদের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
এর আগে গতকাল সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সৈকতের হিমছড়ি প্যারাসেলিয়ং পয়েন্টে ৯৫টি ডিম পেটে থাকা একটি মা কচ্ছপ ভেসে আসে। আগের দিন রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে ভেসে আসে তিনটি মৃত মা কচ্ছপ। যেগুলোর পেটে ৩১০টি ডিম মেলে। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালেও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের হিমছড়ি পয়েন্টে একটি মৃত মা কচ্ছপ ভেসে আসে, যার পেটে মেলে ৯০টি ডিম।
গত শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে উখিয়ার সোনারপাড়া সৈকতে একটি এবং ইনানী সৈকতে একটি মৃত ডলফিন ভেসে আসে। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার হিমছড়ি সৈকতে ভেসে আসে আরও একটি মৃত ইরাবতী ডলফিন।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে ভেসে আসে একটি মৃত পরপইস। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সৈকতের রেজুনদীর মোহনায় একটি অলিভ রিডলি বা জলপাই রঙের সামুদ্রিক মা কচ্ছপের মৃতদেহ ভেসে আসে।
বোরির তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের সোনাদিয়া, হিমছড়ি, সোনারপাড়া, ইনানী ও টেকনাফ সৈকতে অন্তত ৩১টি মৃত কচ্ছপ পাওয়া গেছে। কেবল ছয়দিনে সৈকতে পাওয়া গেছে ৮টি মৃত মা কচ্ছপ। এই সময়ের মধ্যে তিনটি মৃত ডলফিন ও একটি মৃত পরপইস ভেসে এসেছে।
এ পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক মন্তব্য করেছেন বোরির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ।
তিনি বলেন, 'কয়েকদিন ধরে ভেসে আসা মৃত সামুদ্রিক প্রাণিগুলোর নমুনা সংগ্রহ করে মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন। বিষয়টি খুব গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এটা কখনও হয়নি।'
গত বছরের ৩০ মার্চ সুগন্ধা পয়েন্টে সৈকতে একটি মরা ইরাবতী ডলফিন ভেসে এসেছিল। এর আগে গত বছর ৮ ফেব্রুয়ারি ইনানীর হোটেল রয়েল টিউলিপ সংলগ্ন সৈকতে একই প্রজাতির মরা ডলফিন ভেসে আসে। ২০২২ সালের ২৩ আগস্ট ও ২০ মার্চ একই সৈকতে মরা ডলফিন ভেসে আসে। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের শুরুতেও টেকনাফ সৈকতে দুটি মরা ডলফিন ভেসে এসেছিল।
এছাড়া গত বছর ১৮ এপ্রিল রাতে কলাতলী সৈকতে একটি মরা তিমি ভেসে আসে। ২০২১ সালের ৯ ও ১০ এপ্রিল পরপর দুইদিনে হিমছড়ি সৈকতে দুটি মরা তিমি ভেসে এসেছিল।