বিলবোর্ডে নষ্ট হচ্ছে নাভানা টাওয়ারের সৌন্দর্য: ভবন মালিকদের একাংশ
রাজধানীর গুলশান-১ এলাকায় অবস্থিত ২৩ তলা ভবন নাভানা টাওয়ারের গুরুত্বপূর্ণ অংশজুড়ে বড় বিলবোর্ড বসানোয় ব্যবস্থাপনাসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বিরোধ দেখা দিয়েছে ভবনের বাসিন্দাসহ ফ্ল্যাটমালিকদের।
ভবনের নিচে থেকে ৫ম তলা পর্যন্ত বাইরের দেয়ালে বিলবোর্ড টানিয়েছেন ভবনটিরই কয়েকজন মালিক। এসব বিলবোর্ড থেকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নিয়মিত রেভিনিউও নিচ্ছে। এ বিলবোর্ড অপসারণের জন্য মেয়র মো. আতিকুল ইসলামকে একাধিক চিঠিও দিয়েছেন ফ্ল্যাটমালিকরা।
চিঠিতে লেখা হয়েছে, ভবনটির কয়েকজন মালিক সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে আঁতাত করে ভবনটিকে পুরো ঢেকে ফেলে বিলবোর্ড বসিয়েছেন। এতে ভবনের বাকি মালিকেরা এবং বাসিন্দারা অস্বস্তিতে রয়েছেন। সেইসঙ্গে এসব বিলবোর্ডে ভবনটির সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বিলবোর্ড দিয়ে ঢেকে ফেলায় ভবনটিতে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিও রয়েছে।
টাওয়ার অফিস ওনার্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি. ও নাভানা টাওয়ার অ্যাপার্টমেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দেওয়া চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, যথাযথভাবে বিলবোর্ড বসানোর অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, 'যারা এখানে বিলবোর্ড/বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশন থেকে অনুমোদন নিয়েছেন, তারা প্রকৃতপক্ষে এই বিল্ডিংয়ের মালিক নয়।' বাসিন্দারা নাভানা টাওয়ারের বিলবোর্ড বিজ্ঞাপনগুলো অপসারণ এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন।
মালিকদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, এ ভবনটির গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে ৪র্থ তলা পর্যন্ত মালিকরা ভবনের বাইরের পুরোটা অংশে বিলবোর্ড টানিয়ে টাকা আয় করছেন। কিন্তু এতে যে ভবনটির সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে সে বিষয়ে সিটি কর্পোরেশন নজর দিচ্ছে না। বরং সিটি কর্পোরেশন এর থেকে রেভিনিউ নিচ্ছে।
ঢাকা উত্তর চিফ রেভিনিউ অফিসার আবদুল্লাহ আল বাকী দুটি চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, 'মেয়র দেশের বাইরে আছেন। তিনি দেশে ফিরলে তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।'
আবদুল্লাহ আল বাকী বলেন, 'আমরা ওই ভবনের বিলবোর্ড থেকে যে কর সংগ্রহ করি তা, কর আইন অনুসরণ করেই হচ্ছে।'
নাভানা টাওয়ার তিনটি কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে পরিচালিত হয়—নাভানা টাওয়ার অফিস ওনার্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি., নাভানা টাওয়ার অ্যাপার্টমেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং নাভানা শপিং কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতি।
দোকান মালিক সমিতি ভবনের বাইরের অংশে বিলবোর্ড বসানোর সিদ্ধান্ত নিলে তা থেকে মতবিরোধ দেখা দেয়। দোকান মালিক সমিতির দাবি, ভবনের ওই অংশ তাদের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে। বাকি দুটি অ্যাসোসিয়েশন এই এই পদক্ষেপের বিরোধী। অ্যাসোসিয়েশন দুটি ভবনের সামগ্রিক সৌন্দর্য ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।