কারওয়ান বাজারে ২৮০ টাকার তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৭৭০ টাকায়!
কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করায় দাম বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা নিজেদের ক্রয়মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দাম পাচ্ছেন বলে জানিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর (ডিএনসিআরপি)।
সোমবার (২১ মার্চ) রাজধানীতে ন্যায্যমূল্য তরমুজ বিক্রির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান সাম্প্রতিক একটি অভিযানের উদাহরণ দিয়ে জানান, ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে কেনা ১১ কেজির একটি তরমুজ ৭০ টাকা কেজি হিসেবে ৭৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
রমজান মাসে তরমুজের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় সরকারি সংস্থা, সংসদ সদস্য এবং অন্যান্য ভোক্তা অধিকার সংগঠন জনসাধারণের জন্য এই ফলের দাম সাশ্রয়ী করার জন্য পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে।
দেশের অনেক জায়গায় ওজন করে তরমুজ বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চেয়ারম্যান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, 'তরমুজ পিস হিসেবে কিনে কেজি দরে বিক্রি করলে, ব্যবসায়ীদের শাস্তির মুখে পড়তে হবে।'
এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, 'বিক্রেতারা যেভাবে তরমুজ কেনেন সেভাবেই বিক্রি করা উচিত। কেউ যদি পিস হিসেবে কেনেন, তাহলে সেই ফল কেজি দরে বিক্রির কোনো সুযোগ নেই।'
তিনি আরও বলেন, 'কেউ কেজি দরে বিক্রি করলে ভোক্তাদের তা প্রত্যাখ্যান করে ডিএনসিআরপিতে রিপোর্ট করতে হবে। সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
ব্যবসায়ীরা ঢাকার বাইরে থেকে তরমুজ কিনে এনে ওজন করে চড়া দামে রাজধানীতে বিক্রি করছেন বলে জানা গেছে।
শফিকুজ্জামান মনে করেন, এ ধরনের চর্চা বন্ধ করতে পারলে বাজারে তরমুজের দাম অর্ধেকে নেমে আসবে।
তিনি বলেন, 'ন্যায্যমূল্য বিক্রয় কার্যক্রম কীভাবে আরও বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে আমরা দেখব। কৃষি বাজারে এ ধরনের ফল জায়গা দেওয়া যায় কিনা তা আমরা বিবেচনা করব, যাতে ভোক্তারা ন্যায্যমূল্যে কিনতে পারেন। '
ভোক্তা অধিকার সংগঠনের প্রধান আরও বলেন, 'চাঁদাবাজির কারণে কারওয়ান বাজারে বেগুনের দাম কেজিতে ২০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। আমরা এটা বন্ধ করতে চাই'।
তিনি আরও বলেন, 'ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষের পকেট কাটছে।'
টিবিএসের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মাঠ পর্যায়ে প্রতি কেজি তরমুজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকার মধ্যে বিক্রি করছেন কৃষকরা।
ভোক্তাদের কাছে পৌঁছানোর পর প্রতি কেজির দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৭০ থেকে ৮০ টাকা।
গত ১৯ মার্চ বরিশাল জেলা প্রশাসন কেজি দরে তরমুজ বিক্রি না করতে ব্যবসায়ীদের নির্দেশ দেয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অংচিং মারমা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে, তারা যেন তরমুজ কিনে কেজি দরে বিক্রি না করেন। যারা নির্দেশনা অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাংলাদেশে রেকর্ড ২৫ লাখ ৪৭ হাজার টন তরমুজ উৎপাদিত হয়েছে।