কম শিক্ষার্থী, বড় স্কুলের সঙ্গে একীভূত হবে যশোরের ১৬টি বিদ্যালয়
যশোরের মোট ১৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ জনের কম। এই স্কুলগুলোকে কাছাকাছি বড় বিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত করা হতে পারে।
৫০ জনের কম শিক্ষার্থী নিয়ে চলা বিদ্যালয়গুলো যশোর সদর, অভয়নগর ও কেশবপুরসহ বিভিন্ন উপজেলায় অবস্থিত। বর্তমানে এই স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮ থেকে ৪৭ জন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এই ১৬টি বিদ্যালয়ের তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।
গত বছরের ডিসেম্বরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) এক সভায় যেসব বিদ্যালয়ে পাঁচটি শ্রেণিতে ৫০ জনের কম শিক্ষার্থী আছে, সেগুলোকে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর একীভূত করার জন্য প্রস্তাবিত বিদ্যালয়ের নাম, শিক্ষার্থীর সংখ্যা, জমির পরিমাণ, যে বিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত করা হবে তার নাম, বর্তমান বিদ্যালয় থেকে একীভূত করার জন্য প্রস্তাবিত স্কুলের দূরত্ব, প্রস্তাবিত স্কুলের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা উল্লেখ করে অধিদপ্তরে প্রস্তাব পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারদের। সেই নির্দেশনা অনুসায়ী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আশরাফুল আলম ১৬টি বিদ্যালয়ের তালিকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠান।
মো. আশরাফুল আলম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'করোনা মহামারির পর এই জেলায় অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কমেছে।'
তিনি জানান, এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী বাড়ানোর জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরপরেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা না বাড়ায় অন্য বিদ্যালয়ের সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানকে একীভূত করার সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
'ইতিমধ্যে আমরা তালিকা প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছি,' বলেন তিনি।
প্রস্তাবিত একীভূতকরণের ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যয় বেড়ে যাওয়া ও যাতায়াতসহ নানা সমস্যা পড়বে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আশরাফুল আলম বলেন, 'কোনো যাতায়াত সমস্যা বা ব্যয় বৃদ্ধি পাবে না। বরং শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তিসহ নানা সুবিধার আওতায় আনবে সরকার।'
তালিকাভুক্ত ১৬টি বিদ্যালয়ের মধ্যে একটি অভয়নগরের উপজেলার হরিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ স্কুলের বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮ জন। বিদ্যালয়টিতে পাঠদান করাচ্ছেন ছয়জন শিক্ষক-শিক্ষিকা।
অভয়নগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মুহাম্মস আবুল কাশেম টিবিএসকে বলেন, 'এলাকাটিতে জনসংখ্যা কম, জন্মহারও কম। তাছাড়া পাশেই আরেকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিবেচনা করে দেখেছি, বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ানো অসম্ভব।'
তবে হরিশপুরের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের বড় একটি অংশ অন্য বিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত হতে চান না বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে ডিপিই পরিচালক (পলিসি অ্যান্ড অপারেশন) মনিষ চাকমা বলেন, 'একীভূত করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে স্থানীয় পর্যায়ের মতামত চাওয়া হয়েছে। তালিকাও প্রস্তুত করা হয়েছে। পাঁচটি ক্লাসে ৫০ জন শিক্ষার্থী না থাকার পরও এসব স্কুল চালানো রাষ্ট্রীয় অপচয়।'
তবে কবে নাগাদ এই একীভূতকরণ বাস্তবায়ন হবে, তা বলতে পারেননি মনিষ।