ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’: পায়রা, মোংলায় ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত, চট্টগ্রামে ৯ নম্বর বিপৎসংকেত
বাংলাদেশের উপকূলে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় 'রিমাল'। এর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড় রিমাল নিয়ে দেওয়া ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে নতুন করে ৯ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।
এর আগে আবহাওয়া অধিদপ্তরের জারি করা ৯ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় 'রিমাল' উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৯.৪° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৫° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
এদিকে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আজ রোববার (২৬ মে) রাতে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলের মধ্যে আঘাত হানার আগে ঘূর্ণিঝড়টি তীব্র আকার ধারণ করবে।
সকালে ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর আরও জানায়, পশ্চিমবঙ্গ ও পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশের যথাক্রমে সাগর দ্বীপ এবং খেপুপাড়ার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করার সময় বাতাসের গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার এবং দমকা হাওয়ার সময় ১৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে। আজ মধ্যরাতেই ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এর প্রভাবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও উত্তর-পূর্ব রাজ্যের কিছু অংশে এবং উপকূলীয় বাংলাদেশে ভারী বর্ষণ ও তীব্র ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এর আগে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের জারি করা ৮ নং বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার (২৫ মে ২০২৪) সন্ধ্যা ৬টায় ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৫৫ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪০৫ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬৫ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা/ঝড়ো হাওয়া সহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি) থেকে অতি ভারী (২৮৯ মিমি) বর্ষণ হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
একইসঙ্গে ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠী, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।